খালেদা জিয়ার চিকিৎসা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০৮ পিএম
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৪১ পিএম
নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রবা ফটো
গুরুতর অসুস্থ চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ‘মানবতাবিরোধী, বর্বর ইচ্ছা পূরণ ও অবিচারের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ’ আখ্যায়িত করে তা যুক্তরাষ্ট্রে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেরই বাস্তবায়ন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রবিবার (১ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখন পরিবার তাকে বিদেশে নিতে চাইলে সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে আবার জেলে যেতে হবে। তারপর আদালতে আবেদন করতে হবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে এখন যে সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আবার তাকে জেলে যেতে হবে, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে তাকে অনুমতি নিতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আজ দেশনেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসলে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে দেয়া বক্তব্যেরই বাস্তবায়ন। আইনমন্ত্রী যে শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত দোসর হবেন এটাই তো স্বাভাবিক। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জীবন, বেঁচে থাকা এবং উন্নত চিকিৎসায় সুস্থ হওয়া সবকিছু প্রধানমন্ত্রী আর আইনমন্ত্রীর তামাশার হিংসার বৃত্তে আটকে রাখা হয়েছে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্তমান ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি ফুসফুসসহ শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন। দলের চেয়ারপার্সনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। এই দাবি আদায়ে দলটির ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হয়েছে। তবে সাড়া মেলেনি সরকারের তরফে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মানবতাবিরোধী, বর্বর ইচ্ছা পূরণ ও অবিচারের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। এই সিদ্ধান্ত, ক্ষমতা জোর করে আঁকড়ে রাখতে শেখ হাসিনা পথের কাঁটা সরানোর দিগন্তবিৃস্তৃত লালসা পূরণের নিষ্ঠুর প্রজেক্ট। এটি পূর্বপরিকল্পিত এবং একটি গভীর মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ।‘
দেশে এখন জয়বাংলার আইন চলছে বলেও মনে করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, এই আইনে সুশাসন ও ন্যায়বিচার কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। অপপ্রচার, অসত্য ও বানোয়াট কাহিনি প্রচার করেও দেশনেত্রীর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব ও ব্যাপক জনপ্রিয়তায় চিড় ধরাতে না পেরে শেখ হাসিনা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন। আর এজন্য তিনি দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটকিয়ে রেখেছেন এবং এখন তার উন্নত চিকিৎসায় বাধা দিয়ে দুনিয়া থেকে সরানোর নীলনকশা বাস্তবায়ন করছেন। এই সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান শক্তি জনগণ মেনে নেবে না।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘দেশনেত্রীকে গ্রেপ্তার করার পরে বিভিন্ন কায়দায় বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে। চারিদিকে পৈশাচিক প্রবৃত্তির যে ছবি দৃশ্যমান হচ্ছে সেটি বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলতে জনগণ আজ অঙ্গীকারাবদ্ধ। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ জিয়া, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারকারী খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের প্রতি জাতক্রোধ শেখ হাসিনার।‘
রিজভী আরও বলেন, ‘মূলত মার্কিন ভিসা নীতি টেনশনে ফেলেছে শেখ হাসিনাকে। নির্বিঘ্নে দুঃশাসন চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো ভিসা নীতি ঘোষিত হওয়ায় শেখ হাসিনা স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ায় বিহব্বল হয়ে পড়েছেন। এখন উদ্ভ্রান্ত হয়ে মরণকামড় দিতে দেশনেত্রীর মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসায় বাধা দেয়াসহ দেশব্যাপী নতুন নতুন নিপীড়ন-নির্যাতনের পদ্ধতি অবলম্বন করছেন শেখ হাসিনা।’