প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৩ পিএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:১৯ পিএম
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রবা ফটো
আমেরিকার ভিসানীতির
পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের বেটির ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘উনারা (আমেরিকা) এখন কি বলে এটা সেটা ভিসানীতির কথা। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুর
রক্তের উত্তরাধিকারী এবং আদর্শের উত্তরাধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের বেটি।
যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা কী কইছে? তুমি (আমেরিকা) সেংশন দিলে আমিও সেংশন দিব, আমার
জনগণ দিবে। এরপর আর কোনো কথা থাকে?’
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস
ক্লাবে শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে গণতন্ত্র এবং উন্নত
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে শান্তি, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জননেতাদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা
সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা যাওয়া
লাগবে কেন? আমাদের কোনো দরকার নেই। আমাদের সাবেক চিফ জাস্টিস ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছিলেন,
আমি কখনও আমেরিকান ভিসা নেই নাই, আমার কখনও প্রয়োজনও নেই। আর আমি বলব, দেশ কি আমেরিকার
কথায় চলবে, নাকি আমাদের জনগণের কথায় চলবে? ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে সংবিধান
বঙ্গবন্ধু লিখে দিয়েছিলেন সেখানে বলা আছে, এই রাষ্ট্রের মালিক বাংলার জনগণ। বিদেশিরা
আমাদের প্রভু নয়। কাজেই এটা কোনো বিবেচনার বিষয় নয়।’
১৯৭১ সালে আমেরিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ছিল উল্লেখ করে মোজাম্মেল
হক বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ঠেকানোর জন্য আমেরিকা ডিসেম্বরে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল।
আমার মনে আছে, ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে আমেরিকার প্রতিনিধি বলেছিল ‘সিজ ফায়ার’। তার মানে যুদ্ধ
থামিয়ে যে যার অবস্থানে থাকা। আর এটা যদি আমরা মেনে নিতাম অথবা জাতিসংঘে এটা পাস হতো
তাহলে আমরা ১৬ ডিসেম্বস স্বাধীনতা পেতাম না, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে
আত্মসমর্পণ করত না। আমাদের যুদ্ধটা আরও বেশি সম্প্রসারিত হতো। সে সময় আমেরিকার প্রস্তাবে
রাশিয়া ভেটো দিয়েছিল, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন জাতিসংঘের
সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিলেন, তখন আমেরিকার প্রতিনিধিদল বলেছিল, বাংলাদেশকে যদি
সদস্যপদ দেওয়া হয় তাহলে এটা পুরো পৃথিবীর জন্য স্থায়ী একটা বোঝা হবে। এর আগে হেনরি
কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে বটমলেস বাস্কেটও বলেছিল।’
সভাপতির বক্তব্যে শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন
স্মৃতি সংসদের প্রধান পৃষ্টপোষক ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন,
‘আমাদের গাজীপুরের মাটি হচ্ছে বীরের মাটি। এখানে বহু বীর জন্ম নিয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক আগেই গাজীপুরে ঝামেলা শুরু হয়। সেখানে অনেক বীরকে শহীদ হতে
হয়েছিল। আমি তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমি মনে করি, একটি মানুষ যদি ভালো
কাজ করে, জনগণের সেবা করে তাহলে সেই ব্যক্তিকে সমাজের সবাই পছন্দ করে, ভালোবাসে। এর
প্রমাণ আমি পেয়েছি আমার বাবা ময়েজউদ্দিন মারা যাওয়া ২৪ বছর পরে। আমার বাবা যে ভালো
কাজ করে গিয়েছিল, সে কথা মানুষ মনে রেখেছে। সে জন্য তারা আমাকে নির্বাচিত করেছে।’
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে শহীদ
মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন। সভা
পরিচালনা করেন শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ
অবজারভারের সম্পাদক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, শহীদ আহসানউল্লাহ
মাস্টার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল
বাতেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।