প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৯ পিএম
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:১৩ পিএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ফটো
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করে আওয়ামী লীগ বিরোধীদের ওপর দোষ চাপাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
গত ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পলাশী মোড়ে শ্রীকৃষ্ণের জন্মবার্ষিকীর শোভাযাত্রা উদ্বোধনের আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আশঙ্কা করেছেন- জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা হতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতেও বলেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গত তিন দিন আগে বলেছেন- এখানে নাকি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হতে পারে। আওয়ামী লীগ এই আক্রমণ করে তারা বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে- এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে জনগণ যে আওয়াজ তুলছে তা রুখে দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।’
সরকারের পদত্যাগ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ঢাকার দুটি স্থান থেকে গণমিছিলের পর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এই সমাবেশ হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে একটি গণমিছিল বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়। এটি মালিবাগ-মৌচাক-কাকরাইল হয়ে নয়াপল্টনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। অপর গণমিছিলটি কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে আরামবাগ-ফকিরাপুল মোড় হয়ে নয়াপল্টনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে শেষ দিকে বক্তব্য রাখার সময় বৃষ্টি পড়ার দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রোদ-বৃষ্টির মধ্যে আপনাদের উপস্থিতি এই সরকারকে না করে দিয়েছে। এদেশের মানুষ এখন আর শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব অনৈতিক কাজগুলো করছে।’
তিনি তার দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখে দেওয়া হয়েছে। অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এই মিছিল থেকে আওয়াজ উঠেছে দেশনেত্রীকে এই মুহূর্তে মুক্তি দিতে হবে। কারাগারে যারা আটক আছে তাদের সকলের মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তি দিতে হবে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, বুকে সাহস নিয়ে, শক্তি নিয়ে রাস্তায় নেমে এই দানবীয় ভয়াবহ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ দলমত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করতে হবে। এই সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান।
এ ছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান।
এ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পৃথক গণমিছিল করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন এক দফা আন্দোলনের শরিক জোট ও দল।