× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘গুম হওয়া’দের পরিবারের অভিযোগ

প্রহসনের বিচারে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করেছেন জিয়া

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৩ ২০:০৭ পিএম

আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৩ ২০:৩১ পিএম

প্রহসনের বিচারে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করেছেন জিয়া

সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর ১ হাজার ১৪৩ জন সদস্যকে জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে হত্যা করেছেন। এসব মানুষের ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতে করতে তার হাত ফুলে গিয়েছিল। এমনকি এক মিনিটে একজন মানুষের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হতো। কখনও কখনও একজনের নামে দুজনকেও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।  

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানী ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রীয় গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। ৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। 

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ এজাহার খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য তারানা হালিম, মায়ের কান্নার আহ্বায়ক কামরুজ্জামান মিঞা লেলিন প্রমুখ।

শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ’জিয়া সশস্ত্র বাহিনীর যেসব সদস্যকে হত্যা ও চাকরিচ্যুত করেছেন, তাদের পরিবারের লোকদের পেনশনের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। আর একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জিয়ার মরণোত্তর বিচার করতে হবে। দেশের রাষ্ট্রপতির নামের তালিকা থেকে খুনি জিয়া ও মোশতাকের নাম মুছে ফেলতে হবে। কেননা আদালত জিয়াকে ঠান্ডা মাথার খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।’

তিন দফা দাবি জানিয়ে নাহিদ এজাহার খান বলেন, ’জিয়াউর রহমানের হাতে হত্যাকৃত সশস্ত্র বাহিনীর প্রত্যেক পরিবারের উচিত তার নামে মামলা করা; জিয়ার মরণোত্তর বিচার করা ও তারেক রহমানকে দেশে এনে ২১ আগস্টে বোমা মেরে মানুষ হত্যার দায়ে বিচার কার্যকর করা।’ 

তিনি বলেন, ’জিয়া সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি দেওয়ার সময় মৃত্যু না হলে তাদের হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়ে হত্যা করতেন। আমার বাবাকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে। অনেক ব্যক্তিকে বিচারের আগেই হত্যা করেছেন। তার এসব বিচার ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অন্যায়ে ভরপুর।’ 

তারানা হালিম বলেন, ’জিয়া ক্ষমতায় বসে পাকিস্তানিদের অ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়ন করেছেন। পাকিস্তানিরা তাকে তালিকা দিত, সে অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিচারের নামে প্রহসন করে গুম করেছেন, হত্যা করেছেন। এসব গুমের সংবাদ ১৯৭৭ সালে ভোরের কাগজ পত্রিকায় ও ৭৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সের তথ্যে প্রকাশিত হয়। গুম করা ব্যক্তিদের লাশও তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এসব পরিবারের লোকজন জানে না তাদের স্বামী, বাবা বা ভাইয়ের কবর কোথায়।’

কামরুজ্জামান মিঞা লেলিন বলেন, ’দীর্ঘদিন চলে গেছে আমরা আমাদের বাবা-ভাইদের কোনো হদিস পাচ্ছি না। জিয়ার কথিত বিচারে ফাঁসি হওয়া ২০৯ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়, কিন্তু মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ১০০-এর বেশি হবে। গুম করা হয়েছে আড়াই হাজারের বেশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যকে।’ 

তিনি বলেন, ’আমরা চাই খুব দ্রুত এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হোক। এসব পরিবার-পরিজনদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।’

তা ছাড়া সাত দফা দাবি জানিয়ে লেলিন বলেন, ১. এসব সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য সম্পূর্ণ নির্দোষ, ২. তাদের কবর শনাক্তকরণ, শহীদের মর্যাদাদান ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা ৩. তাদের নিজ নিজ সার্ভিসে সর্বোচ্চ র‌্যাংক দেখিয়ে পরিবারকে বেতন-ভাতা, সব সুযোগ দেওয়া ৪. পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করা ও তাদের সন্তানদের যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরি দেওয়া ৬. জিয়ার মরণোত্তর বিচার করা এবং ৭. সংসদ ভবনের পাশে জিয়ার কবরটি স্থানান্তর করা। 

জিয়ার কারণে চাকরিচ্যুত হওয়া বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রনের করপোরাল মো. ছানাউল্লাহ বলেন, ’১৯৭৭ সালের ১ অক্টোবর জাপানের বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমার মতো বিমানবাহিনীর অসংখ্য সদস্যকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। আমরা এসব অন্যায়ের জন্য জিয়ার বিচারসহ আমাদের পেনশন ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’   

বিমানবাহিনীর সদস্য আবু বকরের ছেলে মো. বাহার উদ্দিন বলেন, তার বাবাকে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকার পুরাতন এয়াপোর্টে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় গুম করেছেন জিয়া। এখন পর্যন্ত তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে কি হত্যা করা হয়েছে না বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, তার কোনো তথ্য তাদের হাতে নেই।’ 

তিনি বলেন, ’আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, কিন্তু ৭৭ সালের পর থেকে আমাদের রাজাকার সন্তান বলে প্রচার চালিয়েছে বিএনপি। আমার বাবার গুমের প্রকৃত বিচার আমরা চাই।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা