প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৭:২০ পিএম
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৩ ২০:০৭ পিএম
রাজধানীর নয়াপল্টনে পদযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য দেন। প্রবা ফটো
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর
অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি
বলেন, খালেদা জিয়া শুধু এই উপমহাদেশের নয়, বরং এশিয়ার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন
নেত্রী। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তাকে বন্দি করা হয়েছিল। এখনও তিনি বন্দি অবস্থায়
আছেন। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি অত্যন্ত
অসুস্থ। তার কিছু হলে সরকারকে সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।
শনিবার
(১৯ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে পদযাত্রার আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ
দেওয়ার দাবিতে এই পদযাত্রার আয়োজন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। একই দাবিতে
দেশের অন্য মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা হয়েছে।
মির্জা
ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন। অথচ তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা
দেওয়া হয়েছে। যেই ২ কোটি টাকার অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে সেই টাকা এখন ৮
কোটি হয়েছে। একই ধরনের মামলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে হয়েছিল। কিন্তু তাদের শুধু মুক্তিই দেওয়া হয়নি, মামলাও তুলে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমান
সরকারকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের
সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক জিসানসহ ৬ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ছয় ঘণ্টার মধ্যে তাদের মুক্তি দেওয়া না হলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
সমাবেশে
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইস্পাত কঠিন মনোবল ধরে রেখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ পর্যন্ত
আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমরা আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি।
তাকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে। চিকিৎসকরা তার শারীরিক
অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা মনে করি, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই হাসিনা পদত্যাগে
বাধ্য হবে।’
স্থায়ী
কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা মামলা হামলাবাজ সরকারের বিদায়ের লক্ষ্যে এখানে
পদযাত্রা করছি। এদের বিদায় নিতে হবে। তারা আমাদের হামলা মামলা ও পুলিশ প্রশাসনের
সহযোগিতায় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়। এভাবে কিছুদিন হয়তো টিকে থাকা যায় তবে চিরদিন
ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
স্থায়ী
কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা
হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তিনি কোনো অন্যায় করেন নাই। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি
পালন করতে করতে এতদূর এসেছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই, এই সংসদের
বিলুপ্ত চাই।’
স্থায়ী
কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে
বিচারিক আইন উপেক্ষা করে সাংবিধানিক আইন উপেক্ষা করে জেলে পাঠানো হয়েছে। শুধু মানুষের
ভোটাধিকার লুটে নিয়ে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এটা করা হয়েছে।
আজকে খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত তাদের
বিচার হবে। দেশে এখন আওয়ামী বিচার লীগ নামে একটি সংগঠন হয়েছে। এটা আনুষ্ঠানিকভাবে
ঘোষণা না হলেও জনগণ কিন্তু বুঝে গেছে। এরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির আওতায় চলে আসবে।
কেউ রেহাই পাবেন না। ইনশাআল্লাহ দেশে শুভদিন আসছে।’
স্থায়ী
কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি
পালন করছি। আমরা এখনও আপসহীন আন্দোলন করছি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কোনো আপস
নাই। বাংলাদেশে অন্যায় অবিচার বন্ধ করতে হবে। এটা চিরদিন চলতে পারে না।’
ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আহমেদ আযম খান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আতাউর রহমান ঢালী, মোয়াজ্জেম
হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর সরফত আলী সপু, নাসির
উদ্দিন অসীম, রকিবুল ইসলাম বকুল, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মীর
নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, শিরিন সুলতানা, খন্দকার মাশুকুর
রহমান মাশুক, নিলোফার চৌধুরী মনি, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, নাজিমউদ্দিন আলম, রফিক সিকদার,
যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ,
তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
কেন্দ্রীয়
সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তর
বিএনপির আমিনুল হক সমাবেশ পরিচালনা করেন।