প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৩ ১৭:২৬ পিএম
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২৩ ১৭:৩৮ পিএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা তার ফোন ক্লোন করে তথ্য নিয়েছে।
রবিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ’অন্যের ক্ষেত্রে হয়েছে কিনা জানি না। তবে এটা আমার স্বচক্ষে দেখা। একবার বিদেশে যাওয়ার সময় আমার টেলিফোন গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা জোর করে নিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার ফেরত আসল এবং বলল, এটা খুলে দেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তারা ক্লোন করল এবং সব তথ্য নিয়ে গেল।’
তিনি বলেন, ’বিষয়টা আজকে প্রকাশ্যেই বললাম আমি। এভাবে আমাদের ওপর অত্যাচার হয়, নির্যাতন হয় এবং এইটা আমার ওপরই।’
‘ইন্টারনেট শাটডাউনসহ’ সব ধরনের ‘ডিজিটাল নির্যাতনের’ প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ১২ জুলাইয়ের সমাবেশসহ বিভিন্ন আয়োজনে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার বিষয় তুলে ধরা হয়। বিএনপি বলেছে, একই দিন একই সময়ে সরকারি দলের সমাবেশস্থলের ইন্টারনেট সংযোগ স্বাভাবিক ছিল।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ’জনগণের টাকায় নজরদারি প্রযুক্তি কিনে জনগণের ওপরই গোয়েন্দাগিরি করছে সরকার। ব্যক্তিগত মুঠোফোনের ওপর নজরদারি করে ইলিয়াস আলীর মতো বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের গুম করার তথ্যও ইতোমধ্যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। আবার বিরোধী রাজনীতিকদের আইডি হ্যাক করে তাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দ্বারা নির্যাতন করা হচ্ছে। সাইবার প্রযুক্তির অপব্যবহার যত ধরনের—সবই করছে তারা।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ’ইসরায়েলি প্রযুক্তি পেগাসাস তৈরি করা হয়েছিল জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে। কিন্তু কর্তৃত্বপরায়ণ সরকাররা এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করে। বাংলাদেশে বর্তমান সরকার সেই প্রযুক্তি কিনে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ’ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেখানে বলা হয়, ডিজিটালাইজেশন এই সভ্যতার আশীর্বাদ। কিন্তু বর্তমানে এই সরকার ডিজিটালাইজেশনকেই জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ডিজিটাল মাধ্যমে নিপীড়ন, জনগণের ওপর নজরদারি, ফোন কল রেকর্ড, অনলাইনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অনলাইনে নারীদের প্রতি সহিংসতাকে উস্কে দেওয়া, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ব্ল্যাকমেল করা, ভুল তথ্য, বিকৃত তথ্য ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালানোসহ নানা অপরাধ করে চলেছে এই সরকার।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) প্রসঙ্গে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিচালনা এবং সেবার মান দেখভাল করা। কিন্তু জনগণের টাকায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানকেই বর্তমান সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের জন্য কাজে লাগাচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন অবিলম্বে বাতিলেরও দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সদস্য শাম্মী আক্তার, রুমিন ফারহানা, কাদের গণি চৌধুরী, মীর হেলাল প্রমুখ।