× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘রাষ্ট্র মেরামতে’ বিএনপির রূপরেখার খসড়া চূড়ান্ত

বাছির জামাল

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৩ ০১:০৮ এএম

বিএনপির সমাবেশ। প্রবা ফটো

বিএনপির সমাবেশ। প্রবা ফটো

গত কয়েক মাস ধরে বৈঠক ও আলোচনার পর সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ চূড়ান্ত করতে ৩১ দফার একটি খসড়া অভিন্ন রূপরেখা প্রণয়ন করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে আগে ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখার সঙ্গে নতুন আরও ৪টি দফা সংযুক্ত করে যৌথ ঘোষণাপত্রের এ খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

গণতন্ত্র মঞ্চসহ যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র জোট ও দলগুলোর প্রস্তাবিত দফার সঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা নতুন এ খসড়া অভিন্ন রূপরেখা নিয়ে এরই মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে একদফা আলোচনা হয়েছে। সেখানে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে দ্রুত এটা চূড়ান্ত করার কথা বলা হয়েছে। এ অভিমতের অংশ হিসেবে খসড়া এ রূপরেখা নিয়ে শুক্রবার (২৬ মে) শরিক ১২-দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকও করেছে বিএনপি। 

আজ রবিবার (২৮ মে) ও কাল সোমবার এটি নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চসহ অন্য শরিকদের সঙ্গেও মত বিনিময় করবে বিএনপি। এরপর এটি নিয়ে স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা করা হবে। প্রসঙ্গত, প্রতি সপ্তাহের সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়ে থাকে। 

ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত হলেই আন্দোলন মাঠে গড়াবে : যৌথ ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত হওয়ার পরই যুগপৎ আন্দোলন নতুন করে মাঠে গড়াবে বলে জানালেন নেতারা। উল্লেখ্য, ঈদুল ফিতরের পর থেকে বিএনপি এককভাবে এবং মিত্ররা যুগপতের ধারায় দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছে।

জানতে চাইলে যুগপতের শরিক ১২-দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। ১২-দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আশা করি, অচিরেই যৌথ ঘোষণাপত্র আসবে।

এর আগে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানিয়েছিলেন, চলতি মে মাসের মধ্যেই যৌথ ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তার পরই যুগপৎ আন্দোলন নতুন মাত্রা পাবে। 

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফার ভিত্তিতে ঢাকার বাইরে গত ২৪ ডিসেম্বর ও ঢাকায় ৩০ ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরু হয়। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রের সার্বিক সংস্কারে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি। তবে যুগপৎ আন্দোলন শুরুর পর আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ওপর জোর দেয় গণতন্ত্র মঞ্চ। পরে ফেব্রুয়ারি মাসে বিএনপির আন্দোলনের ১০ দফা ও রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখার সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফার সমন্বয়ে যৌথ ঘোষণাপত্রের ৭ দফার একটি খসড়া রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়। তবে বাকি শরিকদের বিরোধিতায় পরে ওই ঘোষণাপত্র থেকে বিএনপি সরে আসে এবং শরিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ঘোষণাপত্র প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়। 

এমন প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র মঞ্চও সাত দফা থেকে সরে আসে। পরে তারা নিজেদের ১৪ দফা ও বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফার ভিত্তিতে যৌথ ঘোষণার ৩৫ দফা একটি খসড়া প্রণয়ন করে তা বিএনপির কাছে হস্তান্তর করে। এরপর এটি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মঞ্চের প্রস্তাবিত ৩৫ দফায় ‘নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম’ নিয়ে আপত্তি তোলেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। কারণ বিএনপি চায় নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। ২৭ দফায়ও তেমনই বলেছে বিএনপি।

২৭ দফায় আরও বলা হয়েছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিজয়ী হলে বিএনপি একটি ‘জাতীয় সরকার’ গঠন করবে। যে সরকার রাষ্ট্রের সার্বিক সংস্কারে কাজ করবে। অন্যদিকে গণতন্ত্র মঞ্চ তাদের প্রস্তাবিত ৩৫ দফায় বলেছে, নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তবে বিএনপি মনে করে, এটা নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব নয়। তাই নতুনভাবে যৌথ ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় এ দল। এ লক্ষ্যে দলটির স্থায়ী কমিটি ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ দুজন সদস্যের সমন্বয়ে একটি ড্রাফট কমিটিও গঠন করে। ওই কমিটি যৌথ ঘোষণাপত্রের ৩১ দফা খসড়া রূপরেখা প্রস্তুত করে।

আরও স্পষ্ট করা হয়েছে কয়েকটি দফাকে : সূত্র জানায়, বিএনপি নতুন যৌথ ঘোষণাপত্রে ২৭ দফার সঙ্গে আরও ৪ দফা সংযুক্তির পাশাপাশি সেখানকার কয়েকটি দফাকে আরও স্পষ্ট করেছে। ২৭ দফার একটি দফায় বলা হয়েছে, পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। প্রস্তাবিত ৩১ দফায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, পরপর দুই টার্ম দায়িত্ব পালন করার পর তিনি আর কখনোই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। 

অন্যদিকে ২৭ দফার রূপরেখার ১৮ দফায় বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিল করা হবে। খসড়া ৩১ দফায় সেখানে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সকল কালাকানুন বাতিল করা হবে। গত শুক্রবার ১২-দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি এ বিষয়টি তুলে ধরে।

যৌথ ঘোষণাপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ‍যুগ্ম মহাসচিব ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণাপত্র যত দ্রুত সম্ভব ঘোষণা করা হবে। অবশ্য এটি ছাড়াই আন্দোলন এগিয়ে চলেছে। তবে ঘোষণাপত্রটি ঘোষিত হলে যুগপৎ আন্দোলন নতুন গতি পাবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা