প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ১৯:৩০ পিএম
আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ১৯:৪৮ পিএম
গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘গাজীপুর সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন গাজীপুরের মতো হবে।’
শুক্রবার (২৬ মে) বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের হুমকিদাতা আবু সাইদ চাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গাজীপুরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হয়নি। তবে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হয়েছে বলে সারা দেশের মানুষ অত্যন্ত খুশি। বিশ্বের মানুষ তাকিয়ে ছিল গাজীপুরের নির্বাচনের দিকে। গাজীপুরে আমাদের প্রার্থী জয়ী হলে মানুষ যতটা খুশি হতো, তার থেকে বেশি খুশি হয়েছে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ায়। সেখানে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা নির্বাচন নিয়ে মিথ্যাচার করে। তারা বলে এ দেশে শেখ হাসিনার অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় না। কিন্তু গাজীপুরের নির্বাচনে সেটা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ’মির্জা ফখরুলকে এই দেখলাম হাসপাতালে আবার দেখি বাইরে বক্তৃতা করছেন। বক্তৃতা মানেই তো মিথ্যাচার। ফখরুল কেন হাসপাতালে গেছেন, তা আমরা জানি। লন্ডন থেকে চাপ আসায় তিনি মনের কষ্টে হাসপাতালে গেছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অন্য চারটি সিটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে। এমনকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন গাজীপুরের মতো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।’
তিনি বলেন, ’শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বিএনপির ভোট কমেছে, আর আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে। তোমরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যত ষড়যন্ত্র করবে, আমাদের ভোট তত বাড়বে। নেত্রী বলেছেন, আমরা সবকিছু সহ্য করব। এসব হুমকি নিয়ে এত বিক্ষোভ করার দরকার নেই। আমরা মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাব।’
প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর নিয়ে তিনি বলেন, ’শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। কাতারের আমিরের সঙ্গে জ্বালানি নিয়ে চুক্তি হয়েছে। তারা শেখ হাসিনাকে বলেছে, বাংলাদেশের জ্বালানি সমস্যা হবে না। তিনি নিজের জন্য বিদেশে যাননি। এ দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।‘
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ’আটলান্টিকের ওপারের দিকে তাকিয়ে ছিল বিএনপি। কিসের আশায় তারা তাকিয়ে ছিল? নিষেধাজ্ঞা? তারা বড় আশা করেছিল শেখ হাসিনা সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে। কিন্তু তা আর হলো না। কী এসেছে? ভিসানীতি এসেছে। এই নীতিতে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে বা বাধাগ্রস্তের চেষ্টা করবে, তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বন্ধ করে দেবে।’
তিনি বলেন, ’কোনো বিদেশি বন্ধু আমাদের একবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে কিছু বলেনি। বাংলার মাটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কোনো দিন ফিরে আসবে না। আমি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করেছিলাম, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আপনাদের কোনো মতামত আছে কি না? পিটার হাস আমাকে বলেছিলেন, এসব ব্যাপারে আমাদের মাথাব্যথা নেই। একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, এটাই আমাদের চাওয়া।’
তিনি বলেন, ’এই ভিসানীতি আমাদের জন্য কোনো সমস্যা না। বরং বিএনপিসহ যারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়, বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাদের জন্য সমস্যা। আমরা তো নির্বাচন করতে চাই। আমরা কেন নির্বাচনে বাধা দেব?’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ’বিএনপি তখনোই নির্বাচনে আসবে যখন নির্বাচন কমিশন তাদের বলবে যে তারা বিএনপিকে নির্বাচিত করে দেবে। তাদের মতো সবকিছু হলে নির্বাচনে আসবে। তার আগে আসবে না।’
ডা. দীপু মনি বলেন, ’বিএনপি ৭৫’-এর হত্যার ষড়যন্ত্রকারী দল, ৭১’-এর পাক হানাদার বাহিনীর দোসর। তারা ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলা করে নিরীহ মানুষকে হত্যাকারীর দল। তাদের আর মানুষ দেখতে চায় না। তাদের অপরাজনীতির কারণে মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।‘
মির্জা আজম বলেন, ’বিএনপির আদর্শ হচ্ছে হত্যা, ষড়যন্ত্র আর নাশকতার আদর্শ। তাদের গঠনতন্ত্রে ছিল, দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তারা দল করতে পারবে না। কিন্তু তাদের প্রধান নেতারাই দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপি সংবিধান মানে না। তারা একটি ভুয়া দল।’