অনাচার করে কোনো সরকারই টিকে থাকতে পারে না : ফখরুল

অনাচার করে কোনো সরকারই টিকে থাকতে পারে না উল্লেখ করে এই সরকারের পতন অতি নিকটে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার (২০ মে) দলের সহ-দপ্তার সম্পাদক মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতি বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত, খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপির শান্তিপূর্ণ জণসমাবেশ চলাকালে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায় এবং নির্বিচারে গুলি করে। এতে গুলিবিদ্ধ হন- খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হিলটন, মহানগর বিএনপির সদস্য ও সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক কে এম হুমায়ন কবির, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এবাদুল হক রুবায়েত, খুলনা মহানগর কৃষকদলের আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান সজীব তালুকদার ও ১২ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুর রহমান রিপনসহ শতাধিক নেতাকর্মী। এ ছাড়া ২২ নং ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলিফ মিলন, রাসেল, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাব্বি চৌধুরী, ছাত্রদল নেতা শহিদুল মোল্লা ও সেকেন্দার শেখসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

‘জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল এবং আজ নেত্রকোণা জেলা বিএনপির সদস্য, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কেন্দুয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র  দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলাল, মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ মিয়া, সুয়াইর ইউনিয়ন বিএনপির ৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি ইয়ার ইসলাম, মদন উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. কবির ও জেলা তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান ভূঁইয়া লিটনসহ ৩২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। খুলনা জেলা ও মহানগরের শান্তিপূর্ণ জনসমাবেশে পুলিশের হামলা, গুলি এবং নেত্রকোণা জেলায় গণ-গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

সরকারের ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা, নিপীড়ন, উৎপীড়ন ও সহিংস আক্রমণে দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষতবিক্ষত বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে সরকার এখন বন্দুকের ভাষা ব্যবহার করছে। জনপদের পর জনপদে বিএনপির নেতাকর্মীরা রক্তাক্ত, নিহত, আহত এবং পঙ্গুত্ববরণ করছে। নিপীড়িত মানুষ ও বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না ভেবেই সরকার এখন শান্তিপূর্ণ যেকোন কর্মসূচিতেই দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বর্বরোচিত আক্রমণ চালাচ্ছে। দেশের অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে ক্ষমতাসীনরা মহাসমারোহে বিপুল দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হয়ে আরাম-আয়েশের যে স্বর্গ রচনা করেছে, সেটি যেন হাতছাড়া না হয় সেজন্য অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে নিশ্চিহ্ন করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকারকে হরণ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে অদৃশ্য করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ জ্বালানি তেলের দাম কোনো কারণ ছাড়াই বারবার বৃদ্ধি করার কারণে জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সব গণতন্ত্রমনা শ্রেণি পেশার মানুষসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলকে একযোগে রাস্তায় নামতে হবে। অনাচারের ওপর ভিত্তি করে কোনো সরকারই টিকে থাকতে পারে না। এই সরকারের পতন অত্যাসন্ন।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খুলনা জেলা, খুলনা মহানগর ও নেত্রকোণায় গ্রেপ্তার নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করেন। সেই সঙ্গে খুলনা জেলা ও মহানগরীতে পুলিশের গুলিতে আহত নেতাদের দ্রুত সুস্থতা কামনাসহ দোষী পুলিশদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।