প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩ ১৪:২২ পিএম
রাজধানীতে ১২ দলীয় জোটের বিক্ষোভ। প্রবা ফটো
অবিলম্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। শনিবার (২০ মে) রাজধানীতে এক বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এমন আহ্বান জানান তারা। এ সময় সরকার অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন জোটের নেতৃবৃন্দ।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দিদের মুক্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শনিবার রাজধানীতে বিক্ষোভ করে ১২ দলীয় জোট। মিছিলটি বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন সড়ক থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, হোটেল প্রীতম ভবন ও নাইটিংগেল মোড় ঘুরে আবারও বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা চোর চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর; চাল-ডাল-তেলের দাম, কমাতে হবে কমিয়ে দাও; অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি, দিতে হবে দিয়ে দাও; দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ; তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এই মুহূর্তে দরকার ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে জোটের নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারের সময় শেষ। তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সামনে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ এলডিপি অফিসে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সভায় এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টিকে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে ১২ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে গত মার্চে ১২ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায় বাংলাদেশ লেবার পার্টি।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের দাবি একটাই- অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম কমাতে হবে। এখন মানুষের জীবন সস্তা। দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি।
তিনি বলেন, কোনো বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরিতা বা শত্রুতা তৈরি করবেন না। আপনারা এ দেশের মালিক নন। দেশের ১৮ কোটি মানুষ দেশের মালিক। আপনারা বিনাভোটের সরকার।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। এই সরকারের কোনো অন্যায় নির্দেশ আপনারা মানবেন না।
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমরা বর্তমান অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে আছি। সামনে আরও কঠোর আন্দোলন আসবে। সরকার ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে গণভবন, বঙ্গভবন ও সচিবালয় ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি আসতে পারে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাপ- ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, খান আসাদুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শওকত আমিন, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির মহাসচিব মানসুর আলম শিকদার, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব নজরুল ইসলাম, জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এমএ বাসার, চাষী এনামুল হক, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হারুন সোহেল প্রমুখ।