দীপক দেব
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৮:২৯ এএম
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩১ এএম
ফাইল ফটো
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এবার আগেভাগেই তৃণমূল পর্যায়ে দল পুনর্গঠনে জোর দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এজন্য গত বছরের ডিসেম্বরে দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেই জেলা পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয় দলটি। এর অংশ হিসেবে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ৩৮টির সম্মেলন এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ২১টি জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া কেন্দ্রে জমা পড়েছে। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত অনুমোদন পেয়েছে ১৪টি কমিটি।
কিন্তু যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে দ্রুততম সময়ে সম্মেলন আয়োজনের পর কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে; তা কতটা সফল হবে এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ অনুমোদন পাওয়া ১৪টি কমিটি ঘিরে ওই জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
অভিযোগ উঠেছে, সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্বের নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে গিয়ে অনেক এলাকায় ত্যাগী ও যোগ্যদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। কোনো কোনো জেলা কমিটির শীর্ষস্থানীয় পদে থাকা নেতারা নিজেদের দল ভারী করতে বিতর্কিত, হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারীদের পদায়ন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কয়েকটি জেলায় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক পদ পেয়েছেন শীর্ষ নেতাদের আত্মীয়স্বজনরা।
সংশ্লিষ্ট জেলার বঞ্চিত ও ক্ষুব্ধ নেতারা এসব বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে নিজেদের অসন্তোষ ও আপত্তির কথা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার কমিটি ঘোষণার পর তাতে পরিবর্তনও আনা হয়েছে। গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে অন্য জেলা থেকে পাওয়া অভিযোগও।
যদিও আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, এসব অভিযোগ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে অনেকে অনেক ধরনের অভিযোগ করবেন। সব অভিযোগ আলাদাভাবে খতিয়ে দেখার সুযোগও কম। তবে কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্ষমতাসীন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত দুটি নির্বাচনের মতো একপেশে নয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আভাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দ্রুত সংগঠন গোছানোর তাগিদও দিয়েছেন তিনি। তার নির্দেশনা অনুযায়ী দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন এনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু তড়িঘড়ি করে কমিটি ঘোষণার পর এ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। এসব অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলার নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। পরবর্তী কমিটিগুলো নিয়ে যেন এ ধরনের অভিযোগ না আসে সে ব্যাপারেও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ এ নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ বিষয়ে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, জেলা কমিটিগুলো যেন একপেশে না হয়ে মাঝামাঝি একটি অবস্থায় থাকে, তা নিশ্চিত করতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ত্যাগী ও রাজনৈতিকভাবে ভূমিকা থাকলে জেলার শীর্ষ নেতাদের আত্মীয়স্বজনরা কমিটিতে থাকতেই পারেন। তবে সেটা যেন অতিমাত্রায় না হয়, সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। কমিটি ঘোষণার পরও সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন মেরুকরণে বিপত্তি নাটোরে
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বিগত কমিটির সভাপতি আবদুল কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুলের মধ্যকার দ্বন্দ্বের জের ধরে স্থানীয় রাজনীতিতেও ব্যাপক মাত্রায় গ্রুপিং সৃষ্টি হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সম্মেলনের মাধ্যমে শিমুলকে বাদ দিয়ে শরিফুল ইসলাম রমজানকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। কিন্তু হাইকমান্ডের এমন সিদ্ধান্তে সুফল খুব একটা মেলেনি; উল্টো জেলার রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা ছড়িয়েছে। গত ৫ মার্চ শিমুলঘনিষ্ঠদের বাদ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এ কমিটি নিয়ে ৮ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিগত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাটোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আরিফুর রহমান মাসুম। তার অভিযোগ, শিমুলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে তাকে এবার কমিটিতে রাখা হয়নি। এ ছাড়া দল ভারী করতে গিয়ে সভাপতির ছেলে-মেয়ে এবং সাধারণ সম্পাদকের ভাতিজা-ভায়রাসহ এমন অন্তত ১৫ জনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে; স্থানীয় রাজনীতিতে যাদের তেমন কোনো ভূমিকাই ছিল না কখনও।
মাসুম যেসব অভিযোগ তুলেছেন সেসব উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে চিঠি দিয়েছেন শিমুল। ১২ মার্চ ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসে ওবায়দুল কাদেরের হাতে এ চিঠি তুলে দেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুইজন কর্মকর্তার হাতেও ওই চিঠির অনুলিপি দিয়েছেন শিমুল।
নাটোরের নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিত বিগত কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক আলী আকবর ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে ১৯৯৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেও নতুন কমিটিতে পদ পাইনি। অথচ এমন অনেকে পদ পেয়েছে যারা কোনোদিন নাটোরে জয় বাংলা স্লোগানও দেয়নি। আদম ব্যবসায়ী, বিএনপি থেকে আসা, এমনকি ঢাকায় থাকে এমন লোকজনকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে।’
এই নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, যেসব অভিযোগ যৌক্তিক বা যেসব অভিযোগের সত্যতা আছে; সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। প্রমাণ মিললে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
অশান্তি দিনাজপুর-পঞ্চগড়েও
দীর্ঘ ১০ বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে গত বছরের নভেম্বরে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। আগের কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে পুনরায় সভাপতি এবং আলতাফুজ্জামান মিতাকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জেলার রাজনীতিতে অসন্তোষ বাড়তে থাকে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ।
তাদের অভিযোগ, পরীক্ষিত ও পোড় খাওয়া নেতাদের বাদ দিয়ে জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে নবাগতদের। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রার্থী হওয়ার কারণে ১৯৭৫-পরবর্তী প্রতিকূল সময়ে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা নেতাকেও কমিটিতে রাখা হয়নি। আবার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদ হওয়ার কথা ২৭ সদস্যের, কিন্তু নতুন কমিটির পরিচিতি সভার দিন উপদেষ্টা হিসেবে ৪৯ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। ক্ষুব্ধদের দাবি, দিনাজপুরের দুই এমপির দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে জেলা কমিটিতে।
দীর্ঘদিন দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছিলেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাকে কোনো পদেই রাখা হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেলোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, একপেশে কমিটি করা হয়েছে। নিবেদিত ও ত্যাগীদের বাদ দিয়ে অযোগ্য, অথর্ব ও অনভিজ্ঞদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হয়েছে। বিষয়গুলো দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এদিকে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়েও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের ছেলেসহ তার ১০ আত্মীয় স্থান পেয়েছেন কমিটিতে। সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের পরিবারের একাধিক সদস্যও ঠাঁই পেয়েছেন কমিটিতে।
এ নিয়ে কথা হয় রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সঙ্গে। তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেই কমিটি করা হয়েছে। তারপরও বড় দলে সব নেতাকর্মীকে তো সমানভাবে সন্তুষ্ট করা যায় না। দিনাজপুরের উপদেষ্টা পরিষদে বেশি সদস্য নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৪৯ জনের নাম জমা পড়েছিল; তবে ২৭ জনকে রেখে বাকিদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের পর রদবদল পাবনা-সিরাজগঞ্জে
তৃণমূল থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে এরই মধ্যে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটিতে রদবদল আনা হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলা কমিটি ঘোষণা হওয়ার পরপরই স্থানীয় পর্যায়ে এ নিয়ে ক্ষোভ, অসন্তোষ শুরু হয়। তৃণমূলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের পর কিছু কিছু পদে পরিবর্তন এনে ৭ মার্চ ফের কমিটি ঘোষণা করেন পাবনা জেলার নবনির্বাচিত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স।
ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মাজহারুল ইসলাম মানিককে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে রাখা হয়নি। তাকে বানানো হয়েছে জেলা কমিটির সদস্য। মানিকের মতো পোড় খাওয়া আরও অনেককে কমিটিতেই রাখা হয়নি। আবার অন্য দল থেকে আসা লোকজনকে দেওয়া হয়েছে বড় পদ।
এসব নিয়ে সমালোচনার মুখে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া কামরুল হাসান মিন্টুর পদের অবনমন করা হয়েছে। আগে তাকে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। সমালোচনার পর তাকে দ্বিতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এ ছাড়া প্রথম কমিটি থেকে ছিটকে পড়া কামিল হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পরিবর্তন আনা হয়েছে কয়েকটি সহসভাপতি পদেও।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আবদুর রহিম পাকন বলেন, অনেক ত্যাগী নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আবার অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে, যারা সেই পদের জন্য উপযুক্ত নয়। জেলার রাজনীতিতে ঐক্যের ঘাটতি রয়েছে।
এদিকে সম্মেলনের প্রায় এক বছর পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা এক চিঠিতে সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে পরীক্ষিত ও দুর্দিনের অনেক নেতাকে বাদ দিয়ে একেবারেই আনকোরা অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে স্থান পাননি বিগত কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা অনেক নেতা। বিতর্কিত ভাবমূর্তির কথা বলে অনেককে বাদ দেওয়া হলেও সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুকে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য করা হয়। সমালোচনার মুখে অবশ্য তাকে বাদ দিয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তাপস সিরাজীকে পদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক ছাত্রনেতা ফিরোজ আল আমিনকেও সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ আল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, কমিটিতে থেকে কমিটির বিষয়ে কথা বলা আমার জন্য বিব্রতকর। তবে এটা সত্য, অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ লোক কমিটিতে স্থান পেয়েছে, আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে এই কমিটিতে রাখা হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আওয়ামী লীগ তো বিএনপির মতো জাম্বোজেট কমিটি দিতে পারে না। একটি জেলাতে মাত্র ৭৫ জনকে কমিটিতে রাখা সম্ভব হয়, কিন্তু আমাদের দলে এর চেয়ে অনেক বেশি যোগ্য নেতাকর্মী রয়েছে। তবে কমিটি নিয়ে কোনো অভিযোগ এলে তা নিয়ে জেলার দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধান করা হচ্ছে।
সমালোচনা আছে অন্য জেলাতেও
ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে যোগ্য নেতাদের মানানসই পদে না রাখার অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়েও। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী গোলাম মোস্তফা চৌধুরী রন্টুকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হয়েছে সদস্য হিসেবে। তা-ও আবার একেবারে নিচের দিকেÑ রন্টুকে বানানো হয়েছে ২৪ নম্বর সদস্য। বিষয়টি অপমানজনক হিসেবে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে ওই পদ প্রত্যাখ্যান করেছেন রন্টু।
এ ছাড়া গত জানুয়ারিতে অনুমোদন দেওয়া নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়েও অভিযোগের অন্ত নেই। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা হাইব্রিড নেতাদের পাশাপাশি বিতর্কিতদের পদায়ন করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন করে এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ। ১৫ মার্চ অনুমোদন পাওয়া ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে একটি পক্ষের।