প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩ ০৯:১৯ এএম
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩ ১০:৪৮ এএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরে আলম সিদ্দিকী
বঙ্গবন্ধুর বিশেষ স্নেহভাজন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী আর নেই। বুধবার ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালে পরলোকগমন করেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।
পরিবারের বরাত দিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নূরে আলম সিদ্দিকীর প্রেস সচিব ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী সদস্য অনিকেত রাজেশ।
নূরে আলম সিদ্দিকীর গুলশানের বাসভবন থেকে রাজেশ জানান, বুধবার সকালে মরদেহ ঝিনাইদহের পৈতৃক ভিটায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মরদেহ ফিরিয়ে আনা হবে ঢাকায়। বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়ার পর মরদেহ দাফন করা হবে সাভারে।
পরিবারের বরাতে জানা গেছে, নূরে আলম সিদ্দিকী সাভারে নবী টেক্সটাইলের পাশে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সেই মসজিদের পাশে তার জন্য কবরের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৪৪ সালের ২৬ মে ঝিনাইদহ সদরের চাকলাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭০-১৯৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১ মার্চ থেকে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২ মার্চ বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বটতলায় ডাকসু ও ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ছাত্র-জনতার এক বিশাল সমাবেশে।
এ সমাবেশে শিল্পী শিবনারায়ণ দাশের পরিকল্পনা ও অঙ্কনে সবুজ পটভূমিকার ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে বাংলার সোনালি মানচিত্র-সংবলিত স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ডাকসুর তৎকালীন সহসভাপতি আ স ম আব্দুর রব। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসু সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মাখন ও পূর্বতন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ।
একাত্তরের ১০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রাবাসের প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে একটি জনসভা হয়। এ সভার সভাপতিত্ব করেন নূরে আলম সিদ্দিকী। মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীরও অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি।
১৯৭৩ সালে যশোর-২ আসন থেকে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্বাচনে হেরে যান।