বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:০৫ পিএম
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে র্যাগিং ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ। রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিন থেকে পদযাত্রা করে রাজু ভাস্কর্য এলাকায় গিয়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বছরের একটি দিনকে র্যাগিং, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ও বুলিং প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানান ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে দিবসটি পালনের আহ্বান জানান তিনি।
দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের জোরালো অভিযোগ উঠে। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে রবিবার র্যাগিং ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালায় ছাত্রলীগ। এদিনের সমাবেশ থেকে এ ধরনের ঘটনাকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান সংগঠনটির নেতারা।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুলপরীকে আমরা স্বাগত জানাই। সবাইকে তার মতো প্রতিবাদী হতে হবে। ফুলপরী ছাত্রসমাজের অহংকার। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন। র্যাগিং এবং শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন করতে হবে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘র্যাগিং, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের জন্য অনেক সমস্যা হচ্ছে। এজন্য সচেতনতামূলক সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানাবো, আপনারা বছরের একটি দিন ঠিক করুন। যে দিনকে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ হ্যারাসমেন্ট, বুলিং, র্যাগিং, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করবে। আমরা মনে করি একটি দিনকে যদি সচেতনতামূলক প্রতিরোধ দিবস হিসেবে বেচে নিতে পারি তাহলে সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক পরিবেশ আরও বেশি উন্নত হবে, সাংস্কৃতিক পরিবেশ অনেক উন্নত হবে।’
সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এমন একটি বাস্তবতা আছে যে, আমরা র্যাগিংয়ের ঘটনাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের পাশাপাশি তাদের নিয়ে মজা করার চেষ্টা করি। অনেক শিক্ষার্থী এর শিকার হচ্ছেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যে, র্যাগিং একটি ফৌজদারি অপরাধ, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এ ব্যাপারে ছাত্র সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল কর্তৃপক্ষসহ সবার দায়িত্ব আছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও প্রত্যাশিত মাত্রায় সচেতন না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে।
ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অ্যান্টি হ্যারাসমেন্ট, অ্যান্টি র্যাগিং সেল গঠনের বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিভুক্ত যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের দ্রুত এসব সেল গঠন করতে হবে। অন্যথায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশে জানানো হয়, আগামী ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট র্যাগিং অ্যান্ড সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট ইন ক্যাম্পাস’ শীর্ষক প্রচারণা চালাবে ছাত্রলীগ। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া আগামী ১ থেকে ৩ মার্চের মধ্যে সব কলেজ, মাদরাসা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই কর্মসূচি পালন করা হবে।