সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:১৩ পিএম
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:১৮ পিএম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের গণমাধ্যম বিদেশিদের কথায় বেশি গুরুত্ব দেয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। একই সঙ্গে বিদেশিদের কোনো সংবাদ প্রচার না করতেও গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের মিডিয়াগুলো বিদেশিদের কথায় হৈ-চৈ করে। তাদের নিউজ কাভার করা বন্ধ করেন, তাদের পাত্তা দিবেন না। আমাদের মিডিয়া যদি ওদের কাভার করা বন্ধ করে, তখন ঘরে বসে তারা খালি হুক্কা খাবে। মিডিয়ার কারণেই বিদেশিরা নিজেদের এ দেশের রাজা মনে করে।’
বুধবার (৪ জানুয়ারি) সিলেটের চৌহাট্টায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের জ্ঞান খুব সীমিত। সবচেয়ে ভালো জ্ঞান রাখেন বাঙালিরা। অথচ বিদেশিরা যখন আমাদের কোনো পরামর্শ দেন, তখন সেটি হাস্যকর।’
বাংলাদেশের মতো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অন্য কোথাও নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘এখানে সাড়ে ১২ হাজার পত্রিকা ও ৪৫টা টেলিভিশন আছে। অনেকগুলো সাময়িকী আছে। আর কোথায় এমন আছে?’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কিছু লোকজন চায় না শান্তি হোক। কারণ অশান্তি হলে তাদের ব্যক্তিগত ফায়দা হয়। অনেক বিরোধী দল দেশে উন্নতি চায় না বলে বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা নিজের পা কেটে হলেও দেশের ক্ষতি করতে চায়।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি দেশ, যে দেশের মানুষ মানবতা, গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের জন্য রক্ত দিয়েছেন। এ দেশের ৩০ লক্ষ মানুষ রক্ত দিয়েছেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। দুনিয়ার আর কোথাও এমন নজির নেই। অথচ বিদেশিরা আসে আমাদের বুঝাতে। কিন্তু এ দেশের প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে ডেমোক্রেসি আছে। তাদের দেশে নির্বাচন হলে ২৫ ভাগ মানুষ ভোট দেয়। আমাদের দেশে ৭০-৮০ ভাগ মানুষ ভোট দেন। অথচ তারা বড় বড় কথা বলেন। তারা নিজের দিকে তাকায় না। তারা তাদের নির্বাচনের সময় প্রার্থী পায় না।’
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে দেশে যে কত উন্নয়ন হচ্ছে, তা আমরা টের পাচ্ছি না। কমিউনিটি ক্লিনিক হওয়ার ফলে দেশে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু অনেক কমে গেছে। আগে তা প্রায় ৮৬ শতাংশ ছিল। এর মধ্যে সিলেটে শিশু ও মাতৃমৃত্যু সবচেয়ে বেশি ছিল। এগুলো অনেক কমে এসেছে।’
সিলেটে নতুন আরও সাতটি কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘আমাদের মোট ২৪টি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক প্রয়োজন। আশা করছি, দ্রুতই এগুলো পেয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নতি করেছে। আমরা দারিদ্র অর্ধেকে নামিয়ে দিয়েছি। যেহেতু আমরা উন্নতি করছি, তাই অনেকের চোখে পড়েছে। অনেকে ফায়দাও লুটতে চাচ্ছেন।’
মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ারসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।