প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫ ২১:৪৮ পিএম
ফাইল ফটো
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, গণতন্ত্রের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। স্বল্পমেয়াদি সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। কেউ যদি সংস্কার ও বিচারের নামে দীর্ঘমেয়াদে ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকতে চায়, সেটি দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও সংগ্রাম করবে বিএনপি।
শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের থানা সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যারা ১৪ দলের নামে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, তারাই এখন সংস্কার কমিশনে এসে বড় বড় কথা বলছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যারা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনে চাইছে, তারা একটি চরের দল। তারা আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনের বৈধতা দিয়েছিল।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণ ম্যান্ডেট দিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনলে সংবিধানসহ সব সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে। দ্বিমত ও বিরোধিতা থাকলেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
এনসিপি প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছাত্রদের নতুন দলের সফলতা কামনা করি। মৌলিক সংস্কার না হলে নির্বাচনে যাবে না বলে তারা বলছে। কিন্তু কী করলে তারা নির্বাচনে যাবে, সেটি বলছে না।’
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান মন্তব্য করেছেন, ‘আওয়ামী লীগের চরিত্র দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া। আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী আচরণ ও দুঃশাসনের বিষয়ে জনগণ অবগত। জিয়াউর রহমানের পর দলটি দীর্ঘ সময় দেশকে শাসন করেছে। কিন্তু দলটি দেশে কখনও জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।’
গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয়তাবাদী লেখক ফোরাম আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাঙালির জাতীয়তাবাদের মধ্যে সমস্যা দেখেছিলেন। সেই সমস্যার সমাধান তিনি খুঁজে বের করেছিলেন। তা হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। জিয়াউর রহমান সবক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী নীতি মেনে দেশকে এগিয়ে নিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দেশ থেকে একদলীয় স্বৈরতন্ত্রকে উৎখাত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। ভিন্নমতকে উৎসাহিত করতেন তিনি।’
পৃথক এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আইনে অস্পষ্টতার সুযোগে যারা আইন প্রয়োগ করে, তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়। আইনে যদি অস্পষ্টতা থাকে এবং জনগণ হয়রানির শিকার হয়, তাহলে সে অস্পষ্টতা দূর করার কর্তব্য আইনপ্রণেতাদের।’
গতকাল রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত এক সেমিনারে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন। এতে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘যা যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল, সেটা এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি। এই অধ্যাদেশে অতীতে যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা মুক্তি পাবেন। কিন্তু ঘুরেফিরে ওই একই বিধান আরেক জায়গায় রাখা হয়েছে, যাতে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে। এর চেয়ে বড় অযৌক্তিক বিষয় আর কী হতে পারে। অধ্যাদেশের বিধানে অস্পষ্টতা আছে।’
আইন করা হয় মানুষের জন্য। কিন্তু মানুষ তা বোঝে কি না, সে প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। এসব আইন মানুষকে জানানোর ও বোঝানোর জন্য রাজনীতিক, দল ও নাগরিক সমাজের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান।
‘যারা আইনের অপব্যবহার করে এবং ব্যত্যয় ঘটিয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান ও জবাবদিহির বিধানও থাকা উচিত’Ñ বলেন এই বিএনপি নেতা। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড চলে ঐকমত্য কমিশনে। সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও এই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে আলোচনা নেই।’