গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫ ২১:০০ পিএম
“বিএনপির দেওয়া আশীর্বাদের চিঠি এখন আমাদের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে” — সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির সহযোগিতার আশ্বাসের পরও স্থানীয় পর্যায়ে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের একের পর এক হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেল ৪টায় গলাচিপা উপজেলা রেস্ট হাউজের সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
নুর জানান, গত বৃহস্পতিবার গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণঅধিকার পরিষদের অফিসে হামলা, ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও নেতাকর্মীদের মারধরের ঘটনা ঘটে। কালারাজা, চরকাজল, চরবিশ্বাস ও পাতাবুনিয়াসহ একাধিক এলাকায় সংঘটিত হামলায় অন্তত ১২০ জন নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় ১৭টি অফিস ভাঙচুর ও দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
সংঘর্ষের পেছনে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে নুর বলেন, “৫ আগস্ট আমি যখন পটুয়াখালীতে প্রবেশ করি, তখন থেকেই আমখালা ইউনিয়নে আমাদের ওপর প্রথম হামলা হয়। হাসান মামুন তখন থেকে এখন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এই সংঘর্ষের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন। একটি চিঠির মাধ্যমে এই অবস্থার সূচনা হয়, আর সেটাই এখন আমাদের জন্য অভিশাপ।”
তিনি আরও বলেন, “আমি নেতাকর্মীদের বলেছি, প্রতিটি ঘটনার তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে মামলা করতে। প্রশাসনের সহযোগিতা না চাইলে তারা অনিরাপদ থাকবে। গতকালের ঘটনার পর আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখেই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।”
বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। জনগণ আপনাদের থেকে অনেক প্রত্যাশা করে। ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আজ যদি মিত্র হিসেবে আমাদের এই অবস্থা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী পরিণতি হবে?”
সংবাদ সম্মেলনে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম সিকদার, উপজেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন মুন্সীসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ অক্টোবর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে তার সংসদীয় আসন পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহায়তা করতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এখন সেই চিঠিই প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করছেন ভিপি নুর।