কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আজ কিছুসংখ্যক লোক বা সংগঠন কথায় কথায় বলে, বিএনপি নির্বাচন ছাড়া কিছুই বোঝে না। আমরা যেহেতু জনগণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, স্বাভাবিকভাবে আমরা জনগণের কাছে ভোট বা নির্বাচন চাইব।
তিনি বলেন, একটি স্বাভাবিক ব্যাপারকে কেন কিছুসংখ্যক লোক অস্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত করতে চাইছে, সেটি আমাদের চিন্তা করে দেখতে হবে। এখানে কারও কোনো লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে কি না, ভেবে দেখতে হবে। নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, কারা সুবিধাপ্রাপ্ত হবে, এটি আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মহানগর বিএনপি আয়োজিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে যদি আমরা গণতন্ত্রের ভিত্তি রচনা করতে পারি, গণতন্ত্রের চর্চা যদি অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে এই দেশকে, দেশের মানুষকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। দেশে যদি গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত থাকে, মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত থাকে, তাহলে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হয়। দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি যত মজবুত হবে, ভোটের অধিকার যত নিশ্চিত হবে, বিএনপির রাজনৈতিক ভিত্তি তত শক্তিশালী হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৫-১৬ বছর বিএনপি অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলা এসব পার হয়েছে। আমরা যারা বিএনপি করি, প্রত্যেকে বিশ্বাস করি, বিএনপি আজ জনগণের দলে পরিণত হয়েছে। জনগণের একটি রাজনৈতিক দলে বিএনপি নিজেকে রূপান্তর করতে পেরেছে। আমাদের হয়তো অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতাগুলোকে পর্যায়ক্রমে অতিক্রম করে আরও দৃঢ়ভাবে আমরা কীভাবে জনগণের ইচ্ছা পূরণ করব, সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে। একটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা থাকে কীভাবে নীতি আদর্শকে জনগণের কাছে নিয়ে যাবে, কীভাবে জনগণের কাছে দলকে সম্পৃক্ত করবে। রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করলে পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে তারেক রহমান বলেন, দেশে কিছুদিন ধরে অস্থিরতা লক্ষ করছি। আজ যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন তাদের নিয়ে জনগণের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমরা সরকার গঠনের সময় থেকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করে এসেছি। কারণ আমরা চেয়েছি এই সরকার একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের হারিয়ে যাওয়া ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন। আমরা লক্ষ করছি, এই সরকারের বিভিন্নজন জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে একেক কথা বলছেন।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু মতপার্থক্যের কারণে বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ ও গণতান্ত্রিক দলগুলো। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যত বেশি ঐক্যবদ্ধ থাকব, তত বেশি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে পরিকল্পনাকারীদের ষড়যন্ত্র ভেস্তে যাবে।
সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া তাহের সুমন, কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক আমির উর রশিদ ইয়াছিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগ সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।