প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৪ পিএম
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:২৯ এএম
রাজধানীতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে সোমবার এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিদের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব না দেওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ সফল হবে না। যারা মনে করেন নির্বাচনের আগে সংস্কার হওয়া উচিত, তাদের বুঝতে হবে যে এই সংস্কারগুলো সফল হতে জনগণের সঙ্গে সত্যিকার অর্থে সংযুক্ত লোকদের প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
‘আমার বিএনপি পরিবার’ এর উদ্যোগে চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোকচিত্র সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সাথে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্তে চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আহত সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘জনগণ ঠিক করবে তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব কাদেরকে দেবে। কাজেই এ বিষয়ে (নির্বাচন) যত দেরি হবে, তাতে সমস্যা বাড়বে, কমবে না। আমরা জনগণের অধিকার যত দ্রুত জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব, জনগণের অধিকার যত দ্রুত এদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব, আমি বিশ্বাস করি তত দ্রুত আমরা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যত দেরি হবে, সমাজের মধ্যে তত বেশি ষড়যন্ত্রের ডালপালা বাড়তে থাকবে। এখনই বিভিন্ন রকম কথাবার্তা আস্তে আস্তে ছড়াচ্ছে। যারা পালিয়ে গেছে এই দেশ থেকে তারা দেশের মানুষের বিপুল পরিমাণ সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। অবশ্যই তারা সেই সম্পদগুলো ষড়যন্ত্রের পেছনে ব্যয় করবে। কাজেই দেশকে যদি একটি স্টেবল সিচ্যুয়েশনে ভেতরে আনতে হয়, দেশকে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ধরে রাখতে হয়, দেশকে যদি একটি স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে ধরে রাখতে হয় তবে দায়িত্ব অবশ্যই জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা সব সময় মনে করি, এ দেশের মূল মালিক বাংলাদেশের জনগণ। এই দেশ নিয়ে কি হবে না হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের। সমগ্র পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে যা বুঝায় সেটি হচ্ছে নির্বাচন, নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করে থাকেন।’
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা আড়াই বছর আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। এই ৩১ দফার নিয়ে দেশের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছি, মানুষকে বলার চেষ্টা করছি কি আমাদের সেই ৩১ দফা। এর মূল কথা বৈষম্যহীন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ- যেই বাংলাদেশের প্রত্যাশা প্রত্যেকটি মানুষের। একটি বাংলাদেশ যেখানে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে, যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘যেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিদিন যেভাবে উঠছে-নামছে সেটি মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে গেছে। মানুষের জানার ইচ্ছা এ সমস্যার সমাধান কিভাবে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানুষ নিহত হয়, যে পরিমাণ মানুষ শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এটি একটি অস্বাভাবিক ব্যাপার, এই সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। আজকে দেশের বহু মানুষ সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জনগণের জানার অধিকার আছে তার চিকিৎসার কি হবে, বংশধরদের চিকিৎসার কি হবে?’
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি ‘জনগনের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার’ প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নাই বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার আলোকচিত্র সাংবাদিকদের প্রতি সহমর্মিতা এবং সন্মান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক আশরাফউদ্দিন বকুল, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, জ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক বুলবুল আহমেদ, তারিফ রহমান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।