প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৫২ পিএম
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। প্রবা ফটো
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমার পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ, একটা নির্বাচন আদায় করার জন্য জনগণকে যেন রাস্তায় গুলি খেয়ে মরতে না হয়। আপনারা সময় মতো নির্বাচনটা দেন তাতে আপনারা ফুলের পাপড়িতে ঢাকা পরবেন। আপনাদের গলায় যত মালা পড়াবো তত মালার ওজন আপনারা সইতে পারবেন না।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃনমুল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘আপনাদেরকে আমরা সম্মানের সঙ্গে এনেছি, সম্মানের সঙ্গেই বিদায় করতে চাই, আপনারা দায়িত্বটা পালন করেন। আর যদি আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত মাঠে নামান কতটুকু সময় টিকবেন সেটা একটু ভেবে দেখবেন।’
গয়েশ্বর বলেন, আশা করি আমাদের ধৈর্যের বাধ ভাঙ্গার আগেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যথাযথভাবে নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। নির্বাচনের মাধ্যমে ফয়সালা হয়ে যাবে জণগন কাকে ক্ষমতা দিবে। জনগণই দেশের মালিক, ক্ষমতার উৎস। সেই জনগণ যদি ১৯৭১ এর যুদ্ধের বিরোধীদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনে, আমার আপত্তি নেই।
কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে যাবে এজন্য এই সরকারকে রাখতে হবে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সারা জীবনের জন্য দরকার। আর তারা যতক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ-সবল না হবে, নতুন দল না হবে ততদিন পর্যন্ত নির্বাচন দেবেন না এটা তো পক্ষপাতিত্বমূলক বলেন তিনি।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, এই সরকার যদি একবার পক্ষে যায় সেটা যদি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে তো আমাদের নিজ পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। এমন একটা দিন আসুক চাই না। যা হওয়ার হয়েছে, এখন একটা নির্বাচন হোক। আর যদি আসে তাহলে তো আমরা চুপ করে বসে থাকব তাও না।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় যে আমরা যে জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেছিলাম, যুগপৎ আন্দোলনের আগে ২০১৭ সালে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০৩০ ভিশন দিলেন। পরবর্তীতে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব, এক দফার আন্দোলন করব কার বিরুদ্ধে, ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার বিরুদ্ধে।
তখন আমরা ২৭ দফা উপস্থাপন করলাম এবং এই যুগপৎ আন্দোলন সরকার বিরোধী আন্দোলন যারা করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটা দাড়ালো ৩১ দফা। এই ৩১ দফা ৬২টি রাজনৈতিক দলের চিন্তা ভাবনার ফসল। তাহলে নতুন করে সংস্কারের জন্য আর নতুন দলের দরকার নাই। চেয়ার বানানোর জন্য তো আর বুয়েটের ইন্জিনিয়ারের দরকার নাই, চেয়ার বানাবে কাঠমিস্ত্রী। কাঠমিস্ত্রী বলতে আমি রাজনীতিবিদদের বলি, তারাই তো দেশ চালাবে, সংস্কার করবে, তিনি যোগ করেন। এই যে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা, ইতিবাচক মনোভাব এটা তো কম কথা না। আমরা যে ভুলগুলো করেছি যার জন্য দেশের আজকের এই দুরাবস্থা সেটিকে সঠিক জায়গায় আনতে গেলে একটা স্বাধীন দেশের জন্য যে পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করা দরকার সেটাই সংস্কার, তিনি আরও বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের দেশের লোকজন সুন্দর লেখে, বলে। কিন্তু কাজ করার সময় তাদের আর পাওয়া যায় না। রাজপথে রক্ত দেয় সাইদ, নূর-আলম। এমনকি ভোটের দিন এই শিক্ষিত লোকগুলো বাড়িতে বসে টিভি দেখে, ভালমন্দ খায়। লাইনে দাঁড়াইয়া ভোটও দিতে যায়না। কিন্তু একজন খামারি ঠিকই সারাদিন দাড়িয়ে ভোট দেয়।