প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:০৪ এএম
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ফাইল ফটো
দীর্ঘ ১৭ বছর পর কারামুক্ত হচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন কারা সূত্র।
কারা কর্মকর্তারা জানান, আদালত থেকে বাবরের খালাসের নথি ইতোমধ্যে কারাগারে পৌঁছেছে। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার পরেই তার মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। কারাগারে থাকা অবস্থায় বাবর বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান এই মামলায় অংশ নেন। বাবরের পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির তার খালাসের আবেদন করেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর এই মামলায় হাইকোর্ট ছয় আসামিকে খালাস দেয়। অন্য ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডে পরিবর্তন করা হয়। পাশাপাশি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক জীবনে উত্থান ও পতন
লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে একই আসন থেকে জয়ী হন। অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
তবে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এবং ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়লেও তিনি পরাজিত হন।
দীর্ঘ কারাবাস ও মুক্তির প্রহর
২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হওয়া লুৎফুজ্জামান বাবর দীর্ঘ ১৭ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। এ সময়ে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে তাকে দিন কাটাতে হয়েছে। তবে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পাওয়ার পর এখন তিনি মুক্ত জীবনের পথে।
লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তি কেবল তার রাজনৈতিক জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করার সম্ভাবনা নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।