খুলনা অফিস
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:০৭ পিএম
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৪৭ পিএম
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রবা ফটো
পতিত স্বৈরাচার পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসতে নানাবিধ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল না। তারা অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে গদিতে থাকার জন্য যা ইচ্ছা তাই করেছে। তাই তাদের বিদায়টাও মোটেই সম্মানজনক হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকালে খুলনার শিরোমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে খানজাহান আলী থানার সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিরতণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতিহাস পর্যালোচনায়
দেখা যায় এমন লজ্জাজনক বিদায় অতীতে কারোরই হয়নি। আর যারা এভাবে একবার বিদায় নিয়েছে
তারা আর কখনোই দৃশ্যপটে ফিরে আসতে পারেনি বরং তাদেরকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে
নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের পতিত স্বৈরাচার আবারো ক্ষমতায় ফিরে আসার
জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা সেই নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। কিন্তু সেখানেও অন্তরায়। জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ঐক্যের চেতনা ছিল, কোনো ষড়যন্ত্র নতুন করে এই অগ্রযাত্রাকে মাঝে মাঝে যেন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র, ভারতীয় হুমকি ও অপপ্রচার চলছে। গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ-বিভাজন দেখা যাচ্ছে তা স্বৈরাচারের দুর্নীতি ও গুম-খুনের বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার, নির্বাচনসহ গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট কমিয়ে দিচ্ছে।
জুলাই বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে এই জামায়াত নেতা বলেন, এ আন্দোলনে ২ হাজার ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন। ৪০ হাজার ছাত্র-জনতা আহত ও পঙ্গু হয়েছেন। এই যে ত্যাগ, এই যে আত্মদান, রক্তদান, যারা চলে গেল তারা তো বিজয় দেখে যেতে পারল না। তাদের স্ত্রী, সন্তান, শিশুরা কাঁদে, আহতরা হাসপাতালে, মুক্তির স্বাদ তারা পাচ্ছে না। তাদের রক্তের এই ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। তা শোধ করার একটাই উপায় তা হচ্ছে, তারা যে ইনসাফপূর্ণ একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য রক্ত দিয়েছিল, সেই স্বাধীন, সোনার, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, কল্যাণ রাষ্ট্রের বাংলাদেশ আমাদের গড়তে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা অকারণে মানুষ হত্যা করেছে, তাদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে? তিনি অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
গণঅভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর তাড়াহুড়া, সংস্কার প্রশ্নে মতানৈক্য এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নানাবিধ বিচ্যুতি ও ব্যর্থতার কারণে জুলাই অভ্যুত্থান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে দেওয়া যাবে না।
তিনি গণমানুষের সব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দেশকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে শরিক হতে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।