প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:০৫ পিএম
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:১৩ পিএম
শহিদ পরিবারকে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : বাসস
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারত আইনের শাসন মানে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, তারা সব সময় আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে কাজ করে। ভারতে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো বাংলাদেশের মানুষ ইতিবাচকভাবে নেয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শহিদ গেন্ডারিয়া আদর্শ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার খান আনাসের পরিবারকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে রাখার জন্য তার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে, এটাকে বাংলাদেশের মানুষ ইতিবাচকভাবে নেয়নি। যেখানে গণতন্ত্র থাকবে, সেখানে আইনের শাসন থাকবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-পুলিশ সদস্যরা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে শিশু, তরুণ ও যুবকদের গুলি করে হত্যা করেছে। অথচ তাদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’
মারা যাওয়ার আগে আনাসের লিখে যাওয়া চিঠি পড়ে আপ্লুত হয়ে রিজভী বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, এই বাচ্চারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য মহান কিছু আবিষ্কার ও আদায় করতে উদ্দীপ্ত। এই বয়সে যে তাদের মনে (ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শহিদরা) এমন সংকল্প থাকতে পারে, এই চিঠিতে আমি তা পেয়েছি।’
বিএনপি’র এই নেতা আনাসের চিঠিটি পড়ে শুনিয়ে বলেন, ‘এ চিঠি পড়ার পর আমাদের জীবনকে তুচ্ছ মনে হয়েছে। আমার মনে হয়েছে, এ আত্মদানকারী বীর শহিদরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে- তাদের কাছে আমরা তুচ্ছ, আমরা ম্লান হয়ে গেছি।’
বিএনপি’র এই মুখপাত্র বলেন, ‘এই নিষ্পাপ ছেলেগুলোকে শেখ হাসিনার পুলিশ হত্যা করেছে শুধু তাকে ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্যই। তার পরিবার ও কাছের মানুষদের আঙুল ফুলে কলাগাছ করার জন্য ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা যেকোনো অন্যায় করতেই দ্বিধা করেনি।’
আজও শেখ হাসিনার জন্য কেউ কেউ মায়াকান্না করে- উল্লেখ রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমি আনাসের ও আনাস ইয়াসিনের পরিবারের আর্তনাদ ও মায়েদের কান্না শুনতে বলি তাদের। যাদের রক্তের বিনিময়ে পরিবর্তন পেলাম। এ রক্তের বিনিময়ে ১৭ বছরের বসে থাকা হিংস্র ক্ষুধার্ত হায়েনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তারপরও শেখ হাসিনার জন্য যারা মায়াকান্না কাঁদেন, তাদের প্রতি ধিক্কার জানানো ছাড়া আর কিছুই বলার নেই।’
এ সময় যারা জনতার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে তাদের বিচার ও শেখ হাসিনার দোসরদের নামে থাকা সব স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে শহিদদের নামে করার আহ্বান জানান তিনি।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন ও সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সঞ্চালনায় আয়োজিত আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সংগঠনের উপদেষ্টা আশরাফ বকুল, বিএনপি’র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবির, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন ও ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আউয়ালসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।