× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিভাজনকে উস্কে দেওয়ার চক্রান্ত: মির্জা ফখরুল

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:২২ পিএম

আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৪ পিএম

সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিভাজনকে উস্কে দেওয়ার চক্রান্ত: মির্জা ফখরুল

সাম্প্রতিক সময়ের অস্থিতিশীল ঘটনাবলী ‘বিভেদ-বিভাজনকে উস্কে দেওয়ার চক্রান্ত’ হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘তিনটা মাসও হয়নি এখনো, এই তিনটা মাসের মধ্যেই আমাদের সেই আসল চেহারা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এ চেহারা নিয়ে কোনো দিনই সাফল্য অর্জন করা যায় না। যতই বড় বড় কথা বলি, যতই লম্বা লম্বা বক্তৃতা করি, বিশ্বকে এক করার চেষ্টা করি…. হয় না। আমার নিজের ঘরেই যদি সেই বিভাজন থেকে যায়, বিভেদ থেকে যায় এটা কখনোই ঠিক করতে পারব না।’

বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে এক আলোচনা সভায় দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি এ সব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (ড্যাব উদ্যোগে নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. শামসুল আলমের স্মরণে ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাষ্ট্র গঠনে চিকিৎসক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

গণমাধ্যম অফিসে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই কয়েকটা দিন আমরা খুব চিন্তিত, ভয়াবহভাবে উদ্বিগ্ন। আপনি চিন্তা করতে পারেন ধর্মকে কেন্দ্র করে কী উন্মাদনা শুর হয়েছে বাংলাদেশে! আপনি চিন্তা করতে পারেন যে, মুক্ত স্বাধীন মিডিয়ার জন্য, প্রেসের জন্য, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য আমরা এতদিন লড়াই করলাম তার অফিস পুঁড়িয়ে দিচ্ছে। এই বাংলাদেশ তো আমরা দেখতে চাই না, আমি দেখতে চাই না। আমি তীব্রভাবে নিন্দা জানাচ্ছি প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ অন্যান্য সমস্ত পত্রিকাগুলোতে যে আক্রমণ শুরু হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাই।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির পোস্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কী উন্মাদনা যখন দেখি জ্বালিয়ে দাও, পুঁড়িয়ে দাও… আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। চিন্তা করতে পারেন কোন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশকে? আমরা কি বুঝি আমাদের ভয়টা কোথায়? আমরা কি বুঝি আমাদের আতঙ্কটা কোথায়? আমরা কি বুঝি আততায়ী কোথায় ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের পেছনে?’

তিনি বলেন, ‘বুঝি না… বুঝলে আজকের এই সমস্ত দায়িত্বহীন, ইরেন্সপোনসেবল কথাবার্তা আমাদের মুখ দিয়ে বের হত না। দুর্ভাগ্য আমাদের। কিছুসংখ্যক মানুষ তারা নিজেদের অত্যন্ত জনপ্রিয় মনে করেন, সবচেয়ে দেশপ্রেমিক মনে করেন আর গোটা জাতিকে আজকে তারা বিভাজনের দিকে ঠেলে দিয়ে, উস্কে নিয়ে একটা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আপনারা গভীরভাবে চিন্তা করবেন। আমি কারো নাম বলব না, বলতে চাই না। তবে আপনারা (চিকিৎসক) সমাজের শিক্ষিত মানুষ গভীরভাবে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করবেন যে আজকে বিভেদের দিকে ঠেলছে, যারা আজকে বিভাজনের দিকে ঠেলছে, অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলছে তারা আমাদের আসল শত্রু না মিত্র… এই জিনিসগুলো বুঝতে হবে।’

‘বিভাজন ছেড়ে এক হতে হবে’

দেশ রক্ষায় ‘বিভাজন’ ছেড়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জীবনের শেষ অংশে চলে আসছি, একেবারে জীবন সায়াহ্নে। সায়াহ্নে এসে আপনাদের বলতে চাই, যদি আপনারা দেশকে রক্ষা করতে চান, আপনারা স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে চান, আপনাদের অধিকারকে রক্ষা করতে চান তাহলে আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হউন। বিভাজনের কাছে আপনারা কখনো মাথা নোয়াবেন না, অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াবেন না, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসুন আমরা ডা. মিলন যে কারণে প্রাণ দিয়েছেন তাকে স্মরণ করে সেটাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে জন্য প্রাণ দিয়েছেন একটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে যে কারণে ৬ বছর ধরে তিলে তিলে ভুগেছেন কারাগারের অন্ধকারে… এটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, তারেক রহমান সাহেব আজকে দীর্ঘ বছর ধরে প্রবাসে নির্বাসিত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন, তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা সেই গণতন্ত্র, গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রকেই প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করি।’

‘অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রতি অনুরোধ’

অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অন্তবর্তীকালীন সরকার কিন্তু কারো দয়া দান নয়। এটাকে এ দেশের ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সেটাকে স্বীকার করে নিয়ে পুরোপুরিভাবে এ দেশের জনগণের যে মূল লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সেই লক্ষ্যে যাওয়াটাই তাদের জন্য সর্বোত্তম বলে আমরা মনে করি।’

‘আরেকটা কথা পরিস্কার করে বলতে চাই, যারা অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন তারা এমন কোনো কথা বলবেন না দয়া করে তা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে,’ যোগ করেন তিনি।

১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে চিকিৎসক নেতা ডা. মিলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে গুলিতে নিহত হন। ডা. মিলনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। সেই থেকে প্রতি বছর দেশের বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনীতিক দল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটি শহীদ ডা. মিলন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে ডা. শামসুল আলম স্মৃতিসৌধে নব্বইয়ের ছাত্র ঐক্যের নেতারা নব্বইয়ের ডাকসু ভিপি আমান উল্লাহ আমানের পুস্পমাল্য অর্পণ করেন। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর নেতৃত্বে চিকিৎসকরাও মিলনের স্মৃতিসৌধে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম, সিনিয়র নেতা আবদুস সেলিম, মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, জহিরুল ইসলাম শাকিল, শহিদুর রহমান, শহীদুল আলম, সিরাজুল ইসলাম, মোস্তাক রহিম স্বপন, মেহেদী হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা