প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৩২ পিএম
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৫৫ পিএম
রাজধানীর বনানীতে আয়োজিত বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। প্রবা ফটো
শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না, ভারতপ্রেম ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষুসেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে তারা (আওয়ামী লীগ) ঘোষণা দিয়েছিল নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর নাকি উথালপাতাল করে দেবেন। কিন্তু ওই দিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছেন, তবে ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেননি। তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ?’ তিনি বলেন, ‘কারণ শেখ হাসিনা তাদের লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের বলেছিলেন, তোরা যত পারস লুটপাট কর, কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না। বের হলেই হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। সঙ্গি-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারতপ্রেম। ঐ একটাই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারণ তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সুতরাং তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল এইটা জনগণ জানতেন এবং বুঝতেন।’
নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব তিনি পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে জিম্মি করেছিলেন জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন, সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুক। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আদানি বলে ভারতের একটা কোম্পানি তার সঙ্গে বিদ্যুতের চুক্তি করেছেন অত্যন্ত অসম চুক্তি, অত্যন্ত অন্যায় চুক্তি, এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচে বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার কম কিন্তু আদানির কাছ থেকে যেটা কিনা হয় সেটা এক ইউনিটের দাম ১২ টাকা, পৃথিবীর কোথাও এত দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয় না। তিনি আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। তাকে যদি কখনও পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে কোনো চুক্তি করেননি।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা আপনার মতো একজন রক্তপিপাসু ঘাতক একনায়কের আর এই দেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কোনো সুযোগ নেই। আপনি শিশুদের রক্ত পান করা একজন রক্তপিপাসু নারী।’
আমরা বলেছি যে মার্কেটগুলো এখনও আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে, বাজারগুলো এখনও তাদের সিন্ডিকেটের কাছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আপনারা কী তাদের একজন লোককে ধরেছেন? একটা লোককে গ্রেপ্তার করেছেন? অথচ আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন তারপরও তো পেঁয়াজের দাম কমে না, আলুর দাম কমে না, চিনির দাম কমে না, আটার দাম কমে না, সয়াবিন তেলের দাম কমে না, কারণ এগুলো ইমপোর্ট করতে হয়। দাম কমানোর জন্য আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন তারপরও কি দাম কমছে? কমছে না কারণ সিন্ডিকেটকারীদের আপনারা গ্রেপ্তার করতে পারেননি। এই বিষয়গুলো আপনারা যদি না দেখেন, পরাজিত ফ্যাসিস্টরা তারা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝেমধ্যেই আওয়াজ দিবে ভূত-পেত্নীর মতো আওয়াজ দিচ্ছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, বিএনপির সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ নেতারা।