প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪ ১৫:৪৯ পিএম
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
কোটা আন্দোলনকে ধ্বংস করতেই সরকার বিরোধী দলের ওপরে সহিংসতার দোষ চাপাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মঞ্চের সমন্বয়ক গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান জোনায়েদ সাকি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশ আজ এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। শত শত শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। সরকার এত লাশের মিছিল, এত লাশ তারা তৈরি করেছে যে, একে ঢাকতে পারছে না। তাকে ঢাকার জন্য আজকে আমরা দেখছি, তারা নানান রকম রাজনৈতিক কৌশল ব্যবহার করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে সরকার বলছে, এই কাজ জামায়াত-শিবির করেছে। তাই তাদেরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যদিকে আমরা দেখি তারা (সরকার) যে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করছে তার ৮০ থেকে ৯০ ভাগ কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। এই রাজনৈতিক পরিচয়হীন শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারের প্রতারণা আজকে পরিষ্কার। তারা সব আন্দোলনকে ধ্বংস করতে চায়, আন্দোলনকে ধ্বংস করার জন্য আজকে সহিংসতার দায় চাপিয়ে যেভাবে অতীতে করেছে সেইভাবেই তারা আজকে আন্দোলন ধ্বংস করতে চায়।’
গণতন্ত্র মঞ্চ পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টায় পুরানা পল্টনে মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সকাল ১০টা থেকে সেখানে ব্যাপক পুলিশ, প্রিজন ভ্যানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। এরকম অবস্থায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা তাৎক্ষণিক বিজয় নগরে আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে ফুটপাতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হত্যার বিচার দাবি করে আমরা একটা সমাবেশ অনুষ্ঠানের করার কথা বলেছিলাম। পুলিশ কোনো রকম ন্যূনতম আইন-কানুনের ধার না ধরে। তারা যেভাবে পুরানা পল্টনে এলাকা কর্ডন করে রেখেছে, আগ্রাসী ভূমিকার মধ্যদিয়ে আমাদের সমাবেশ পণ্ড করার চেষ্টা করেছে, আমাদের মাইক কেড়ে নিয়েছে, আমরা পুলিশের এহেন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই, প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ সব বিরোধী দল আমরা নির্বাচনের আগের থেকেই এই সরকারের পদত্যাগ চেয়েছি। বাংলার ঘরে ঘরে এই সরকারের পদত্যাগের ধ্বনি উঠেছে। এই লড়াই চালাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার গণতন্ত্র মঞ্চ সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘এখন সরকার শুধুমাত্র টিকে আছে প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, সংকটটা রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সংকটকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করেন। রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হলে আপনারা পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে আলাপ-আলোচনার করে অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে সম্ভব স্বল্পতম সময়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ আপনারা তৈরি করতে পারে। সরকার যদি সেই পথে না হাটে তাহলে যে গণজাগরণ তৈরি হয়েছে, মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ তাদেরকে টেনে নামাতে বাধ্য করবে।’
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিম ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আকবর খান উপস্থিত ছিলেন।