প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৯:৫০ পিএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪ ২০:৩৫ পিএম
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত
বিরোধীদের দমনে সরকার ‘মধ্যযুগীয় নির্যাতনের পথ’ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৭ জুলাই) দলের সহদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুরকে রিমান্ড শেষে আদালতে নিয়ে আসার সময় গণমাধ্যমে যে চিত্র এসেছে তা যেকোনো বিবেকবান মানুষকে আলোড়িত করবে। রিমান্ডে এমনভাবে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে যে তিনি দাঁড়াতেই পারছে না।’
তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের অন্যতম তিন সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদারকে শুক্রবার হাসপাতাল থেকে চিকিৎধীন অবস্থায় গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা তুলে দিয়ে গেছে। গত ২৫ জুলাই গভীর রাতে বাসা থেকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্য মিরর এশিয়ার ঢাকা প্রতিনিধি সাঈদ খানকে পুলিশ তুলে নিয়ে রাতভর নির্যাতন চালিয়েছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে যে, মধ্যযুগীয় নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার। আমরা এহেন ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার জনরোষে পড়ার ভয়ে জোর করে ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশে কারফিউ দিয়ে রেলসহ সব যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে রেখেছে। জনগণকে কর্মহীন রেখে অনাহারে দিনাতিপাত করতে বাধ্য করছে। দ্রব্যমূল্য দিন দিন মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে জাতি দ্রুত মুক্তি চায়। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সমাধান।’
ফখরুল বলেন, ‘সরকারকে বলব, সকল হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। ছাত্রদের গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়ার পর হাসপাতালে দেখতে যাওয়া ও মায়া কান্না এবং সাহায্য করার কথা বলা প্রতারণার আরেকটি নজির।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘অবৈধ পন্থায় সরকার ক্ষমতায় আসার পরে অবৈধভাবে ক্ষমতা আগলে রাখার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদ ধরে রেখেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে কল্পকাহিনী রচনা করা হচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার প্রথম থেকেই সরকারি গুন্ডাবাহিনীকে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে লেলিয়ে দেয়। বিরোধী নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি এখন কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরও ব্লক রেড দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, আইডি কার্ড দেখালেও গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের গুম করে কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা তাদের শরীরের ক্ষত চিহ্নিত দেখলেই অনুধাবন করা যাচ্ছে।’
বিবৃতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সরকারের অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে সরকারপ্রধানসহ আওয়ামী লীগের নেতারা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক কল্পকাহিনী রচনা সামনে তুলে ধরছে কিন্তু দেশের জনগণ তা বিশ্বাস করে না।’
বিবৃতিতে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের বাসায় তল্লাশি করে তাকে না পেয়ে তার ভায়রা, শ্যালক ও শ্যালকের ছেলেকে গ্রেপ্তার, দলের গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানসহ নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে তল্লাশি অভিযান এবং সাংবাদিক সাঈদ খানকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব।