প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ২৩:৪৫ পিএম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ফটো
বিএনপি নেতারা নিজেরা নিজেদের বিশ্বাস করে না দাবি করে দলটির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে কখন? ওরা (বিএনপি) নিজেরা নিজেদের বিশ্বাস করে না। কেউ কাউকে পছন্দ করে না। একজন আরেকজনকে বলে সরকারের এজেন্ট। তাদের আন্দোলন ভুয়া।
সোমবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের সঙ্গে সরকার চুক্তি করেছেÑ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি কি এক? পড়াশোনা করেন না? ডিপ্লোমেসির ভাষা জানেন না? জেনে নেন— সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি এক কথা নয়। এ সময় উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে পদ্মা সেতুর জন্য সমঝোতা স্মারক করেছি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পদ্মা সেতু নিজের টাকায় করেছি। আমরা যদি চুক্তি করতাম, তাহলে বাধ্য হতাম পদ্মা সেতু নির্মাণের দায়িত্ব তাদের দিতে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেসব সমস্যা সমাধান হয়নি, ভারতের নতুন সরকার তা সমাধানের জন্য চেষ্টা করছে। আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে।
তিস্তার পানি চুক্তির জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজি হবেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মমতাকে রাজি করাতে হবে। তিনি এতদিন না বলে আসছেন। তাকে ‘হ্যাঁ বলাতে হবে। না হলে ভারতের সংবিধান এটি অ্যালাও করে না। তাদের রাজ্যকে বাদ দিয়ে ভারত সরকারের এই চুক্তি করার সুযোগ নেই।’
বিএনপি ভারতের দাসত্ব চেয়েছিল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নরেন্দ্র মোদি যখন ক্ষমতায় আসে প্রথম দিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে বিএনপি নেতারা ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে হাজির। হাইকমিশন বন্ধ, মিষ্টি আর ফুল নিয়ে হাজির। এই হলো বিএনপি। তারা ভারতের বিরোধিতা করে, কিন্তু ওয়াশিংটনের ইচ্ছায় ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির অঙ্গীকার করে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে।
আলোচনা সভায় দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলেÑ শেখ হাসিনা নাকি ভারতের তাঁবেদার, ভারতের স্বার্থরক্ষা করতে চায়। মির্জা ফখরুল ইতিহাসকে ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দিল্লিতে গিয়ে পা ধরেছিল, আপনাদের খালেদা জিয়া মোদি যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন রসগোল্লা খাইয়েছিলেন। সে কথা মানুষ ভুলে যায়নি।’
এর আগে বেলা ৩টায় আলোচনা শুরুর কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে আধাঘণ্টা পরে অনুষ্ঠান শুরু হয়। উত্তর আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আলোচনা সভায় যোগ দেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ থেকে অনুষ্ঠানটি ‘আলোচনা সভা’ নাম দেওয়া হলেও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সেটি জনসভায় রূপ নিতে দেখা যায়। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম আতিক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।