× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হাওর এলাকায় সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়নের খেসারত দিতে হচ্ছে : রিজভী

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৪ ১৩:২১ পিএম

বৃহস্পতিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রবা ফটো

বৃহস্পতিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রবা ফটো

হাওর এলাকায় সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়নের খেসারত দিতে হচ্ছে বন্যাকবলিত মানুষকে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বন্যা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে যেন বন্যা ও ধ্বংস সমার্থক হয়ে উঠেছে। পাহাড়ি ঢল ও মেঘ-ভাঙ্গা বৃষ্টিপাতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে বন্যা ধ্বংসের তাণ্ডব চালাচ্ছে।  উজানের প্রবল ঢলে সিলেট ও রংপুর বিভাগে নদীগুলো উপচে দুই পাশে প্রবল বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। লক্ষ-লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সরকারের ভুল নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে আজ বন্যাউপদ্রুত মানুষদের। বিশেষজ্ঞদের অভিমত সিলেটের হাওর উন্নয়নের নামে চলছে অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ড। নদীতে বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক গতি প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করার কারণেই বন্যার প্রকপ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই অঞ্চলে প্রতিবছর বন্যা হওয়ার পরেও ‘আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি সরকার।’

তিনি বলেন, ‘মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দেওয়া যে সরকারের কর্মসূচি, সে সরকারের দ্বারা একটি জাতির সর্বাঙ্গীন উন্নতি লাভ কখনোই সম্ভব নয়। আজ ডামি সরকারের লুটেরা নীতির জন্যই ভুক্তভোগী জনগণের মর্মভেদী অশ্রুপাতের কারণ। আওয়ামী সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব দূর্বল করে নিজের ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখার জন্য উন্নয়নের কর্মকৌশল নির্মাণ করেছেন। সুতরাং সেই উন্নয়ন মধ্যে পাটকাঠির কাঠামো রয়েছে বলেই সেটি ধ্বসে পড়ছে, আর দেশের মানুষকে পোহাতে  হচ্ছে দুর্যোগ ও দুর্ভোগ। এর উপর বিশ্বের শীর্ষ বায়ু দূষণ শহর ঢাকা। কারণ অপরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য ঢাকাসহ বাংলাদেশের শহরগুলো প্রচন্ড বায়ু দূষণে নিমজ্জিত। সুপরিকল্পিত উন্নয়ন নেই বলেই বাংলাদেশের বায়ু ক্রমাগতভাবে দূষিত হচ্ছে। বৃহত্তর সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে পানিবন্দি মানুষের কাছে কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি। এক অসহায় বিপন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে লক্ষ লক্ষ বন্যা উপদ্রুত মানুষেরা। আমি ওই সব অঞ্চলে বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কোরবানির পশুর চামড়া এবারও বিক্রি হয়নি। আড়তদাররা কোরবানির চামড়া ফিরিয়ে দিয়েছে। এটাও সিন্ডিকেটবাজদের কারসাজি। গরিবের হককে বঞ্চিত করে একচেটিয়াকরণ করার জন্যই দেশের কোরবানির চামড়া সিন্ডিকেটওয়ালারা কৌশলে মূল্যহীন করেছে। প্রশাসনের নির্ধারিত দামেও চামড়া কেনেননি আড়তদাররা। কোরবানির চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকে মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে। এমনিতেই এবারে মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষেরা কোরবানি দিতে পারেনি। সরকারি হিসাবে অবিক্রিত থেকেছে ২৫ লক্ষ ৮১ হাজার গবাদী পশু। বাস্তবে এর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। এরপরেও চামড়ার দাম নিয়ে এহেন নৈরাজ্য কেবলমাত্র শেখ হাসিনার শাসনেই সম্ভব। কারণ মানুষের বেঁচে থাকার সব অবলম্বনকেই এরা নিরুদ্দেশ করে দিতে চায়।’

রিজভী বলেন, ‘যে দেশে সবজি-সালাত শুটকিতে মানবদেহের ক্ষতিকারক কীটনাশকের সন্ধান পাওয়া যায়, সে দেশের সরকার যে সিন্ডিকেটবাজদেরই সরকার তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যখন কোনো জবাবদিহিতা থাকেনা তখন সব সেক্টরে সরকারের দোসররাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। যার কারণে সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতেও তাদের দ্বিধা হয় না। বাংলাদেশের মানুষের অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস। প্রতিবছর ২০ জুন এই আন্তর্জাতিক দিবসটি জাতিসংঘকে কর্তৃক উদযাপিত হয়। এটা সারাবিশ্বের উদ্বাস্তুদের সম্মান করার জন্য এই দিবসটি পালন করা হয়। নিজ দেশের সংঘাত ও নিপীড়ণ থেকে পালিয়ে আসে শুধু অভয়ারাণ্য খুঁজে পেতে এবং উন্নত জীবনযাপনের আশায়।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রধান শরণার্থী সমস্যা রোহিঙ্গা। প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা নিপীড়নের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গতকালও পাহাড় ধ্বসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ জন মারা গেছে। কিন্তু তাবেদার নতজানু সরকার তাদের নিজ দেশে ফেরাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি। এদেরকে নাগরিক হিসেবে নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমারকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। কিন্তু অতীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের আমলেও এমন ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় তাদেরকে ফেরত পাঠাতে তারা সক্ষম হয়েছিলেন।’

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের কোটি-কোটি যুবক এখন বেকার। শুধুমাত্র ভিন্ন মতের কারণে অনেক তরুণ যুবক কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই সলিল সমাধি হচ্ছে। বহুসংখ্যক বাংলাদেশীরা এখন নিজ দেশেই পরবাসী। একদলীয় শাসনে নিজ দেশেরই ভিন্ন রাজনৈতিক মতের কারণে নিপীড়ণ ও অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। এরা দেশ ছেড়ে বিভিন্ন উদ্বাস্তুর জীবনযাপন করছে। হিংস্র কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণেই বহুদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ অন্যদেশে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। আমি সারাবিশ্বের শরনার্থীদের প্রত্যাশা ও উন্নত জীবনের আকাঙ্খার প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।’

বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে দখল করে নিয়েছে দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসী আর সিন্ডিকেটবাজরা। নৈরাজ্যের কালো ছায়া যেন সারা বাংলাদেশকেই ঢেকে ফেলেছে। ঈদের আনন্দ উৎসবকেও বাকশালীকরণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন অদম্য জমিদার হয়ে উঠেছে। দেশের কোথাও কোনো সুস্থ প্রতিযোগিতার জায়গা নেই। ক্ষমতাসীনরা সবকিছু তাদের করায়াত্ব করার জন্য চোখ রাঙিয়ে বেড়াচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্তানরাও নিজেদের জমিদার সন্তান ভাবছেন। তারা মনে করেন আইন যেন তাদের হাতের মুঠোয়। ঈদের দিন রাতে বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার প্রবাসী মেয়ের গাড়ির সঙ্গে একটি বাইকের ধাক্কা লাগায় দুইজন বাইক আরোহীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ নেতার লোকজনরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ঈদের দিন মানুষ হত্যার উন্মাদনার মধ্য দিয়েই আওয়ামী ক্যাডাররা উৎসব পালন করছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, অর্থনৈতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা