রেজা করিম
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩ ১৬:৫২ পিএম
আপডেট : ৩০ মে ২০২৩ ১৭:২৬ পিএম
প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে জমজমাটভাবে শুরু হয়েছে বগুড়ার শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী কেল্লাপোশী মেলা। মেলাকে ঘিরে ৭ দিন ধরে চলছে প্রস্তুতি। তিথি অনুযায়ী, প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠের দ্বিতীয় রবিবার থেকে শেরপুর উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়নের কেল্লাপোশী নামক স্থানে বসে এ মেলা। কালের আবর্তে মেলার সেই শক্তি ও জৌলুস অনেকটাই হারিয়ে গেছে। তবুও মেলাকে ঘিরে মেয়ে জামাইদের আনন্দে কমতি নেই। এ মেলাকে স্থানীয়দের ভাষায় বলা হয় ‘জামাইবরণ’ মেলা।
কথিত আছে, ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে এ মেলা হয়ে আসছে। বৈরাগ নগরের বাদশা সেকেন্দারের একজন ঔরসজাত এবং একজন দত্তক ছেলে ছিলেন। ঔরসজাত ছেলের নাম ছিল গাজী মিয়া আর দত্তক ছেলের নাম কালু মিয়া। গাজী মিয়া দেখতে খুবই সুদর্শন ছিলেন। তারা রাজ্যের মায়া ত্যাগ করে ফকির সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করে ঘুরতে ঘুরতে ব্রাহ্মণ নগরে আসেন। সেখানে ব্রাহ্মণ রাজমুকুটের একমাত্র কন্যা চম্পা গাজীকে দেখে মুগ্ধ হন।
একপর্যায়ে তারা দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলেন। পালিত ভাই কালু মিয়া বিষয়টি জানতে পেরে গাজীর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে মুকুট রাজার নিকট যান। মুকুট রাজা ফকিরবেশী যুবকের এরূপ স্পর্ধা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বন্দি করেন। এতে গাজী মিয়া কঠিন আঘাত পান। তিনি মুকুট রাজার নিকট থেকে ভাই কালু মিয়াকে উদ্ধারের জন্য কেল্লাপোশী নামক একটি দূর্গ নির্মাণ করেন।
পরে রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করে ভাইকে উদ্ধার এবং তার কন্যাকে বিয়ে করেন। ওই সময় গাজীর বিয়ে উপলক্ষে কেল্লাপোশী দূর্গে নিশান উড়িয়ে তিন দিনব্যাপী আনন্দ উৎসব করা হয়।
গাজী মিয়ার সেই বিজয়কে ধরে রাখার জন্যই কেল্লাপোশীর মেলার আয়োজন করা হয়। আর তিথি অনুযায়ী ওই বিয়ের দিনটি ছিল জ্যৈষ্ঠের দ্বিতীয় রবিবার। সেই থেকে প্রতিবছর তিন দিনব্যাপী এ জামাইবরণ মেলা বসে।