প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:২২ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪৫ পিএম
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকায় গণসংযোগ ও প্রচার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। প্রবা ফটো
‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার মূলে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। স্বাধীনতার পরে আজ দীর্ঘ চার দশকেরও অধিক সময় পার হয়ে যাওয়ার পরেও এই রাষ্ট্র এখনও সকলের জন্য সমান মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। দ্রুত পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অধিকার তথা ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী অঙ্গীকারকৃত অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে হবে।’
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত গণসংযোগ ও প্রচার কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন বক্তারা। জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে তোপখানা রোড, পল্টন হয়ে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগণের কাছে গণসংযোগ এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচি পরিচালনা করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের দুই যুগ্ম সমন্বয়কারী মানবাধিকারকর্মী জাকির হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী।
এসময় গণসংযোগ ও প্রচার কর্মসূচিতে অংশ নেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি ও জাসদ নেতা সাইফুজ্জামান বাদশা, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আসাদুল্লাহ তারেক, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহিল কাইয়ুম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহবায়ক ডা: অসিত বরণ রায়, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র দেব, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার গজেন্দ্রনাথ মাহাতো, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দীপক শিল, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সাবেক সভাপতি অনন্ত বিকাশ ধামাই প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে গণসংযোগ ও প্রচার কর্মসূচির শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৬ বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও তা এখনও পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন নামে একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
গণসংযোগ ও প্রচার কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে সর্বস্তরের লোকজনের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বিষয়ে লিখিত প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।
গণসংযোগ কর্মসূচি থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়ন ও পার্বত্য সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ৫ দফা এবং সমতলের সংখ্যালঘুদের জন্য ২টি পৃথক দাবি উত্থাপন করা হয়।
দাবিগুলো হলো, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সময়সূচি ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণ করে চুক্তির দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে, পাহাড়ে সামরিক কর্তৃত্ব ও পরোক্ষ সামরিক শাসনের স্থায়ী অবসান করতে হবে, আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক করা এবং স্থানীয় শাসন নিশ্চিত করতে পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক এসব পরিষদের যথাযথ ক্ষমতায়ন করতে হবে, পার্বত্য ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে কার্যকরের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ও ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের পুনর্বাসন করে তাঁদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, দেশের মূল স্রোতধারার অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া, সমতলের নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল স্তরের স্থানীয় সরকারে সমতলের জন্য বিশেষ আসন সংরক্ষণ এবং আদিবাসী জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, সমতলের সংখ্যালঘু নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে।