প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৫৬ পিএম
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৫৯ পিএম
‘বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ’ রচনা প্রকাশের শুভসূচনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা। প্রবা ফটো
দুইশত বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষীদের সুনির্বাচিত রচনা ‘বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ’ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এই রচনা সংগ্রহ প্রকাশের শুভ সূচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উদ্যোগের স্বপ্নদ্রষ্টা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সম্পাদক ও বিশিষ্টজনরা।
দীর্ঘ ২৪ বছরের পরিশ্রমে প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত সম্পাদনা পরিষদের সম্পাদনায় ১৬টি বিষয়ে দুই শতাধিক খন্ডে প্রকাশিত হচ্ছে চুয়াত্তর হাজার পৃষ্ঠার এই রচনা সংগ্রহ। এই সংগ্রহে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১৬টি বিষয়- ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, পরিবেশ, চলচ্চিত্র, সংগীত, রাজনীতি, ভাষা, সংস্কৃতি, নারী, সমাজ, অর্থনীতি এবং শিক্ষা।
বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের উজ্জ্বল স্মারক এই রচনা সংগ্রহের প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
অনুষ্ঠানে গ্রন্থমালা সম্পাদক ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রর সভাপতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বাঙালির চিন্তামূলক রচনার সংগ্রহ সিরিজগুলোতে দুইশত বছরের দিকে কেন তাকানো হচ্ছে সে প্রসঙ্গে বলেন, এই ২০০ বছর শুধু ২০০ বছর নয়, তা বাঙালির দুশো বছরের চিন্তা শক্তির স্ফুরণ। গত ২০০ বছরের আগেও অনেক বড় বড় কাজ হয়েছে। কিন্তু এই ২০০ বছরের সঙ্গে তা তুলনীয় নয়। আমরা যদি অতীতের দিকে তাকাই, এই ২০০ বছরের মধ্যে বাঙালির যে শক্তির স্ফুরণ ঘটেছিল তা আমরা পাব না।
তিনি বলেন, একদিন আমার মনে হল এই যে ২০০ বছর ধরে বাঙালি জাতির মধ্যে বৌদ্ধিক জাগরণে যারা এর নায়ক, যারা এর নেতা, তারা এগুলো করেছেন, এগুলো নিয়ে লিখেছেন, তারা জাতির চিত্রকর্ষের জন্য চেষ্টা করেছেন। অনুশীলনের চেষ্টা করেছেন। এই যে এত বড় বড় কাজ এত বড় বড় ঘটনা, এগুলো তো রক্ষিত হল না। কেননা চিন্তা, মূল্যবোধ, মননশীলতা, জ্ঞানচর্চা, মুক্তিসংগ্রাম সব মিলিয়ে বাঙালির জীবনে এ সময়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, উর্বর ও ঐশ্বর্যময়। এ সময়ে বহু বাঙালি মনীষী, ভাবুক বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা করেছেন, লিখেছেন। তাদের সেই রচনাগুলোকে একত্র করতে পারলে তা বাঙালি জাতির জন্য বিরাট সম্পদে পরিণত হবে। এরপর এই সংগ্রহের, এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে এই কাজটি করলে সবারই উপকার হবে, জাতির উপকার হবে। তাই আমরা এই প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এ গ্রন্থমালা প্রকাশের বিলম্ব নিয়ে তিনি বলেন, দেরিতে হলেও আমরা এটা করতে পেরেছি এটাই আমাদের সার্থকতা।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, এখানে অনেক দুর্লভ বইয়ের সংগ্রহ আছে, যা সব জায়গায় পাওয়া যাবে না। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও পাঠাগারগুলো যদি এই সিরিজগুলো সংগ্রহ করেন তাহলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষকগণ উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, এই বইগুলো সর্বাধিক মানুষের কাছে যত কম দামে পৌঁছে দেওয়া যায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। যদি এখন থেকে ৩০ মার্চ ২০২৪ এর মধ্যে ২০৮ খন্ডের সিরিজটি সংগ্রহ করতে চান, তাহলে ৫০%ছাড়ে তা ৯০,০০০ টাকায় সংগ্রহ করতে পারবেন।
গ্রন্থমালারটির ২০৮ খণ্ড একত্রে অথবা বিষয়ভিত্তিক সেট সংগ্রহ করা যাবে। ১৬টি বিষয় নিয়ে এই সংকলনটির এখন প্রি অর্ডার এর জন্য বুকিং নেওয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়ে। ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখের মধ্যে প্রি অর্ডার করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক মূল্যের জন্য অনুগ্রহ করে ওয়েবসাইটটিতে গিয়ে ক্রেতার পছন্দের বিষয়ের আইকন এ ক্লিক করতে হবে। https://bcrs.bskbd.org বিষয়ভিত্তিক প্রি অর্ডার ছাড় ৪৫%। ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখের পর গ্রন্থমালার মূল্যের ছাড় হবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নির্ধারিত নীতিমালা অনুযায়ী ৩০% ছাড়ে ১,২৬,০০০ টাকা। সম্ভাব্য সরবরাহের তারিখ : ১০ এপ্রিল ২০২৪। ইতোমধ্যে পাঁচটি বিষয়ের (সংস্কৃতি, দর্শন, নারী, বিজ্ঞান ও ইতিহাস) চুয়ান্নটি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে, এই ইতিমধ্যে প্রকাশিত বিষয়ভিত্তিক সংকলনগুলো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করে এখনই সংগ্রহ করা যাবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে বাকি খণ্ডগুলো প্রকাশিত হবে। ওয়েবসাইটে ক্লিক করে বিভিন্ন খন্ডের রচনার তালিকা পাওয়া যাবে।
গ্রন্থমালা প্রকাশের শুভসূচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন ‘বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ’ বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন।
তিনি জানান, বিভিন্ন বিষয়ে বাঙালি মনীষীদের নির্বাচিত রচনাবলী ভবিষ্যতের পাঠক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষকসহ সকলের কাছে সহজলভ্য করার জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গর্বের বিষয় এই কারণে যে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে একের পর এক ইতিহাস তৈরি করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আরেকটি নতুন ইতিহাস তৈরি করতে যাচ্ছে।
আলোর ইশকুলের সদস্য রুখসানা মিলির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গ্রন্থমালার বিভিন্ন খণ্ডের সম্পাদকরা দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেন এবং বইটির গুরুত্ব তুলে ধরেন।