× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত মানবিক সংকটকে গভীর করতে পারে’

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৫ ১৭:২২ পিএম

আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৫ ২০:০১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

তহবিল সংকট নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করে রোহিঙ্গাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ খাদ্য রেশন ও প্রয়োজনীয় সেবা পুনর্বহাল করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি বাংলাদেশ)। সংগঠনটি জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত মানবিক সংকটকে আরও গভীর করতে পারে। এই সংকট দূরীকরণে খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বরাবর পিটিশন দাখিল করেছে ১১০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান।

ফিয়ান ইন্দোনেশিয়া, ফিয়ান সুইজারল্যান্ড, এডাব, এএলআরডি, সিএসআরএল, একশনএইড অস্ট্রেলিয়া, একশনএইড বাংলাদেশ, বারসিক, কোস্ট ফাউন্ডেশন, কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি এলায়েন্স, ইনসিডিন বাংলাদেশ, এনজিও ফোরাম অন এডিবিসহ মানবাধিকার, খাদ্য অধিকার ইত্যাদি নানা ইস্যুতে কর্মরত আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং স্থানীয় ১১০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি উক্ত পিটিশনে স্বাক্ষর করেন। 

সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রতিষ্ঠান বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, জরুরিভাবে পর্যাপ্ত অর্থায়ন না পেলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর খাদ্য রেশন মাথাপিছু মাসিক ১২.৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলারে নামিয়ে আনতে হবে। আকস্মিক এই সহায়তা হ্রাসের বিষয়ে খানি বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে, এবং এর ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিদ্যমান মানবিক সংকট গভীরতর হতে পারে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর দাখিলকৃত এই পিটিশনে বলা হয়, তহবিল ঘাটতি মোকাবিলা করতে, প্রয়োজনীয় সেবাগুলো পুনরায় চালু করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী, টেকসই সহায়তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এটি এমন একটি সময়ে ঘটছে যখন শরণার্থীরা ইতোমধ্যেই একটি ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন।

আরও বলা হয়, রোহিঙ্গারা খাদ্যের জন্য সম্পূর্ণরূপে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। যার কারণে এই সহায়তা বজায় রাখা শুধু প্রয়োজনীয়ই নয় বরং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন অপুষ্টি প্রতিনিয়ত বাড়ছে।  ২০১৭ এর পর ২০২৫ সালে এসে ক্যাম্পগুলোতে সর্বোচ্চ অপুষ্টি দেখা দিয়েছে। শিশুদের মধ্যে পুষ্টিহীনতার হার ১৫% ছাড়িয়ে গেছে এবং গুরুতর তীব্র পুষ্টিহীনতার ঘটনা ২০২৪ সালের জানুয়ারির তুলনায় চলতি বছর জানুয়ারিতে ২৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, এরপর ফেব্রুয়ারিতে আরও ২৭% বেড়েছে। 

‘রোহিঙ্গাদের পূর্ণ মানবাধিকার নিশ্চিত করতে, বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিতে হবে যতদিন না তারা এই শিবিরে আছেন। যদি এমন পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কারণে শিবিরে পাচার, গ্রেপ্তার বা সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় জীবনহানির মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটতে পারে, যা ক্যাম্পের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যেও অস্থিরতা সৃষ্টি করবে বলে জানিয়েছে খানি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক, নুরুল আলম মাসুদ। 

তিনি আরও বলেন, যথাযথ খাদ্য সহায়তা নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদী কৌশল গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। 

খানি বাংলাদেশ সহ-সভাপতি রেজাউল করিম সিদ্দিকি রানা বলেন ‘এই ধরনের পদক্ষেপ রোহিঙ্গারা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। খাদ্য সহায়তা সীমিত করার অর্থ হবে ধনী দেশগুলোর পক্ষ থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি মহা প্রতারণা।’ 

কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোরামের সহ-সভাপতি এবং কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন ‘সমস্ত ত্রাণ সহায়তার মূল শর্ত হলো খাদ্য। যদি কেউ খেতে না পায়, তাহলে আমরা যতই সুরক্ষা, শিক্ষা বা অন্য সহায়তা দেই না কেন, সেগুলোর কোনো প্রভাব পড়বে না। খাদ্যের পর্যাপ্ততা না থাকলে রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে, শৃঙ্খলা ভেঙে হোস্ট কমিউনিটিতে প্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হবে এবং এর ফলে শ্রমবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যদি তারা বাইরে গিয়ে কম পারিশ্রমিকে কাজ শুরু করে, তাহলে হোস্ট কমিউনিটির শ্রমিকরা তাদের কর্মসংস্থান হারাবে। ফলে সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।’

খানি বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে জরুরিভাবে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানায়, যাতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করা যায়।

বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক- খানি দেশব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্য অধিকার, পরিবেশ-প্রতিবেশ, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে সক্রিয় জাতীয় এবং স্থানীয় পঞ্চাশটিরও বেশি সংগঠন/প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত একটি জাতীয় নেটওয়ার্ক।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা