× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জননিরাপত্তা

পাহাড়ে-সমতলে চিরুনি অভিযান জরুরি

মোহাম্মদ আলী শিকদার

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪ ১২:৫৪ পিএম

মোহাম্মদ আলী শিকদার

মোহাম্মদ আলী শিকদার

১৯ মে প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে ইউপিডিএফের কর্মীসহ দুজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে, গত ছয় মাসে ইউপিডিএফের ১১ সদস্য খুন হয়েছেন। এর নেপথ্যে পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন, ভ্রাতৃসংঘের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ার বিষয়টিকেই বড় করে দেখছেন অনেকে। অবশ্য পার্বত্য চট্টগ্রামে এমন ঘটনা বহু আগে থেকেই ঘটে আসছে। শান্তিচুক্তির পর পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরতদের নিজেদের মধ্যকার সংঘাত-সংঘর্ষের ফলে এমন বহু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও হামলা ঘটেছে। পার্বত্যাঞ্চলে যখনই এ ধরনের কোনো সংঘর্ষ ঘটেছে তখন তা মূলত আধিপত্য বিস্তারের জন্যই ঘটেছে। পাহাড়ি জনপদে দল-উপদলে বহুধাবিভক্ত অংশগুলো আধিপত্য বিস্তারের জন্যই বিভিন্ন সময়ে সংঘাতে জড়িয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে ইউপিডিএফের আত্মপ্রকাশের পর এ সংঘাত ভিন্নমাত্রা পায়। এরপর তাদের ঘটে বিস্তার। ইউপিডিএফের সদস্যসংখ্যা পাহাড়ি জনপদের মানুষের জনসংখ্যার ১ শতাংশও নয়। এ সংগঠনটি একটু ভিন্ন, কারণ তারাই সশস্ত্র জঙ্গি কার্যক্রম পাহাড়ের বাইরে সমতলেও পৌঁছে দিয়ে যায়। স্মরণে আছে, পাহাড়ি এ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে একসময় ইসলামি উগ্রপন্থি জঙ্গি সংগঠন আনসার আল মুজাহিদিনের প্রধানের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই সময় আনসার আল মুজাহিদিনের সদস্যদের তারা অর্থের বিনিময়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার সমঝোতা করে। বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। পরে ইউপিডিএফের কার্যক্রম কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলেও সম্প্রতি আবার নতুন করে তারা পুনর্গঠিত হচ্ছে। পাহাড়ে উত্তেজনা ক্রমেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এপ্রিলে বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতি ও ব্যাংকের সদস্য অপহরণের ঘটনার পর থেকেই পাহাড়ে জননিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ২৪ মে প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রকাশ, বান্দরবানে যৌথবাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের দুই সদস্য নিহত হন।

পাহাড়ে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএ (কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি) ও কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট)-এর অপতৎপরতা বাড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, বিগত এক সপ্তাহে সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের সন্ত্রাসীসহ নারী সদস্যদের আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সংগঠনগুলোয় নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিয়েও ভাবা জরুরি। পার্বত্য চট্টগ্রামের যে অংশে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে তার পরিসর খুব বড় নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বরাদ্দ কিংবা সহযোগিতা তারা কোথা থেকে সংগ্রহ করে। এ সংগঠনগুলোর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও যথেষ্ট তৎপর। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্য, তাদের পৃষ্ঠপোষককারী সংস্থা-ব্যক্তি-মহল সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া কঠিন। সার্বিক ও আঞ্চলিক বাস্তবতা যাচাই করতে গেলে আমাদের কাছে দুই ধরনের বাস্তবতা দৃশ্যমান হয়। প্রথমত, বাংলাদেশে অবস্থানরত কেএনএফের সদস্যের তুলনায় ভারতের মিজোরামে এ সংগঠনের কর্মতৎপরতা বেশি। মিয়ানমারেও সংগঠনটির শাখা অংশ জান্তা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহ চলমান রেখেছে। সম্ভবত এ দুই অঞ্চলের বর্ধিত অংশ হিসেবে সংগঠনটি বাংলাদেশে তৎপর হয়ে উঠেছে।

কুকি-চিন বা সমগোত্রীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো এখানে অর্থ সংগ্রহের জন্যই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে, এমনটিই প্রতীয়মান হচ্ছে। অতীতেও অর্থের বিনিময়ে তারা ধর্মীয় উগ্রবাদী সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছিল। অর্থাৎ অর্থ সংগ্রহই যে তাদের প্রধান উদ্দেশ্য, এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না। কারণ মতাদর্শিক দৃষ্টিকোণ বিচারে উল্লিখিত দুই ধরনের সংগঠনের মধ্যে যোগাযোগ কিংবা সম্পর্ক থাকার কথা নয়। মতাদর্শিক বিচারে দুই ধরনের সংগঠনই প্রায় বিপরীত চরিত্র ধারণ করে। অর্থাৎ পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী এ সংগঠনগুলো মতাদর্শিক অবস্থান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে না। সম্প্রতি বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির পেছনে অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহই ছিল মূল উদ্দেশ্য, এ খবরও সংবাদমাধ্যমেরই। তাই ভারতের মিজোরামের কেএনএফ তাদের একটি বর্ধিত অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় করছে, এমনটি অনুমান করলে অত্যুক্তি হবে না।

পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সক্রিয়তার পেছনে আরেকটি কারণ আমরা খতিয়ে দেখতে পারি। এমনও হতে পারে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যাহত করতেই এ ভূখণ্ডে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। তবে তা পুরোপুরি নিশ্চিত নয় এবং সমর্থিত সূত্রের কোনো বার্তাও নয়;এমনটি ধারনা মাত্র। আমরা জানি, মিয়ানমারে বিদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষে দেশটির জান্তা সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থায় এখানে কোনো সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতা করার মতো সক্ষমতা তাদের থাকার কথা না। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, জান্তা সামরিক বাহিনীর সামরিক রসদ ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে। আমরা জানি, কক্সবাজারের উখিয়া ও অন্যান্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বহুদিন ধরেই আরসা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় নিরাপত্তা অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে। তবে প্রথম থেকেই ক্যাম্পে নিরাপত্তাবেষ্টনী জোরদার ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধে যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিল তা তারা নিয়েছে কি নাÑএ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আরসা কিংবা কেএনএফের মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো মিয়ানমার সরকারের বড় ধরনের শত্রু বলেই চিহ্নিত। যেহেতু মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর শাখা বাংলাদেশেও রয়েছে তাই মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যাহত করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করতে পারে। তারা গুপ্তচরের মাধ্যমে এখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয় করে আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ভিন্ন দিকে পরিচালিত করার চেষ্টা করতে পারে। আরও একটি উদ্বেগজনক খবর হলো, ঢাকার উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় বছরে শুরু থেকে ২২ মে পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৬০টি লাশ। ২৪ মে প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এই এ বার্তা মিলেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা পশ্চিমা সম্প্রদায় থেকে আসা মিশনারিরা পার্বত্য অঞ্চলে ধর্মান্তরিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করত, এ অভিযোগ পুরোনো। ভারতের মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে ব্রিটিশ শাসনামলের আগে পার্বত্যাঞ্চলে যারা বসবাস করত তারা প্রকৃতিপূজা করত। র‌্যাডিকাল মিশনারিদের আগমনের পর এ অঞ্চলে মানুষের ধর্মান্তরীকরণের হার বাড়তে শুরু করে। এ মিশনারিরা মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জাতিসত্তার মানুষদের ধর্মান্তরীকরণের সুদূরপ্রসারী এক ধরনের পরিকল্পনাও রেখেছিল। ওই সময় পাহাড়ি অঞ্চলের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনাও তারা নিয়েছিল। এখন এমন অভিযোগ পাওয়া না গেলেও এমন সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী যে সক্রিয় নয় তার কোনো প্রমাণ আমাদের হাতে নেই। এজন্য পাহাড়ে এমন কোনো সংস্থা বা গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে কি না এবং থাকলে তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের মদদ নিচ্ছে কি না, এসব খতিয়ে দেখা জরুরি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প কিংবা দুর্গম পাহাড়Ñএ দুটি স্থানেই আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন গড়ে ওঠে। এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। বহু আগে থেকেই আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জঙ্গিবাদী সংগঠন গড়ে উঠছে। আমাদের এখানেও ঘটছে। জঙ্গিবাদী সংগঠন গড়ে তোলার পেছনে অর্থনৈতিক প্রলোভন থাকে বেশি। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে মাদক, মানব পাচার, নারী পাচার, অস্ত্র পাচারের নেটওয়ার্ক পৃথিবীজুড়েই ছড়িয়ে আছে। কিন্তু এলাকাভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন সচরাচর প্রথমেই আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হয় না। তাদের প্রথমে ওই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে হয়। আধিপত্য বিস্তার করার পর তারা একসময় ওই নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কও তাদের পরিসর বাড়ানোর লক্ষ্যে এই স্থানীয় সংগঠনগুলো ব্যবহার করতে চায়। ফলে কিছু কিছু জায়গায় দুটি অংশের স্বার্থ মিলে যায়। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন সংযোগ স্থাপন সহজ। তার মানে এই নয়, দেশের জঙ্গিবাদ আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের স্বরূপে পরিচালিত হয়। দুটি অংশের কিছু স্বার্থ এক হয়ে যাওয়ায় একটি যোগাযোগ তৈরি হয় বটে কিন্তু তা চোরাচালান, মানব পাচার, হত্যা কিংবা রাজনৈতিক অপব্যবহারের কাজেই বেশি ব্যবহৃত হয়।

সরকার উগ্রবাদ কিংবা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি অবলম্বন করছে। তারা এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক এবং সফলতাও দেখিয়েছে। কিন্তু দেশে জঙ্গি সংগঠনের যে তিনটি ধরনের কথা বললাম, এ তিনটির জন্য যে আলাদা পরিকল্পনা জরুরি সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না এখনও জানা নেই। ব্যক্তিকেন্দ্রিক জঙ্গি সংগঠন অতীতেও ছিল এবং এখনও আছে। তবে এখন তারা দুর্গম পাহাড় ছেড়ে সমতলেও চলে আসার সুযোগ পাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে পাহাড়ে-সমতলে জরুরি চিরুনি অভিযান। এ ছোট্ট সংগঠনের সঙ্গে অনেক সময় বড় জঙ্গি সংগঠনের ছোটখাটো স্বার্থ মিলে গেলে তারা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একে অন্যকে সহযোগিতা করতে পারে। অর্থাৎ একটি নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। তাই নির্দিষ্ট কোনো জঙ্গি সংগঠনকে অনুসরণ করলে আমরা কোনো ফলাফলে পৌঁছাতে পারব না। আমাদের জঙ্গিবাদের ধরনটি বুঝতে হবে। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে দ্রুত নিষ্পত্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় জাতীয় নিরাপত্তা হবে বিঘ্নিত।

  • অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা