বিশেষ সম্পাদকীয়
মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪ ০০:৪৭ এএম
আপডেট : ০১ মে ২০২৪ ০০:৫২ এএম
প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি
শ্রম ছাড়া যেমন উৎপাদন সম্ভব নয়, তেমনি শ্রমের মর্যাদা ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠাও দুরূহ- এই সত্য এড়িয়ে যাওয়ার অবকাশ নেই। আমরা বিশ্বাস করি, শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা এবং ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত না হলে উৎপাদনশীল মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নও অমূলক। উৎপাদনে শ্রম ও মেধার সমন্বয় জরুরি এবং এ থেকেই বিকশিত হয় সমাজ, বিকশিত হয় পুঁজি।
পহেলা মে, বিশ্ব শ্রমিক দিবস বা মহান মে দিবস হিসেবে ইতিহাসে স্বীকৃত। দিনটির প্রেক্ষাপট অত্যন্ত মর্মস্পর্শী এবং রক্তাক্ত। এরই উত্তরাধিকার বহন করছে বিশ্বের শ্রমিকশ্রেণি। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।
বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের আজকের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে আন্দোলনকারী অনেকে আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে তাদের সংগ্রামী জীবন উৎসর্গ করে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে জয়ী হন। শ্রমজীবী মানুষের এই আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারীদের আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি।
আমরা মনে করি, সামাজিক ন্যায়বিচার ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং শ্রমবাজারে লিঙ্গবৈষম্যের ছায়া সরিয়ে সাম্যমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবি। মে দিবস এই দাবিগুলো বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রায় দেড়শত বছর আগে এই দিবস দুনিয়ার শ্রমিকদের এক হওয়ার যে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল তা আজও প্রাসঙ্গিক।
সেদিন সাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে আদর্শিক নীতির প্রতিফলন ঘটেছিল, এর অনুশীলন ও প্রতিপালনই সুষম উৎপাদন ব্যবস্থার পথ নিশ্চিত করতে পারে। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আজকের বাংলাদেশ যে পর্যায়ে উপনীত হয়েছে, সেই বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই উন্নয়নের রোল মডেল। সেই বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিয়েও কম কথা হচ্ছে না। এই সব কথাবার্তায় আমরা সবসময় নিগৃহীত নির্যাতিত শ্রমজীবীদেরই পক্ষে। আমরা মনে করি, সব মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে যে প্রত্যয়-অঙ্গীকারে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ- এর যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই আমাদের ভবিষ্যৎ হতে পারে স্বর্ণোজ্জ্বল। আর এই সোনার বাংলা নিশ্চিত করতে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার এবং নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখতেই হবে।
জয় হোক মেহনতি মানুষের। জয় হোক অধিকার আদায়ের সংগ্রামের। দূর হোক বৈষম্য। উৎপাদন ব্যবস্থার স্তরে স্তরে ছড়িয়ে পড়ুক সাম্যের আলো। নৈতিক ও আদর্শিক চেতনার ভিত্তিতে গড়ে উঠুক মানবিক সমাজ।