× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

লোকসভা নির্বাচন

গণতান্ত্রিক ভারত ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে পারবে?

ড. ফরিদুল আলম

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১০:০০ এএম

ড. ফরিদুল আলম

ড. ফরিদুল আলম

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে এবং এর মধ্যে দুদফা শেষও হয়েছে। আপাতদৃষ্টে শাসকদল বিজেপির একতরফা আধিপত্যের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও বিজেপির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোটার উপস্থিতির হার প্রত্যাশা অনুযায়ী না হওয়া। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৬০ শতাংশ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। জনসংখ্যার বিবেচনায় সম্প্রতি চীনকে অতিক্রম করে যাওয়া ভারতের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিন্দু। এ হিন্দু ভোটাররাই বিজেপির মূল শক্তি এবং মূলত হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক আদর্শ পুঁজি করেই দলটির উৎপত্তি ও বিকাশ। এবারের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে বিজেপি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট নিশ্চিত করতে তৎপর। এ লক্ষ্যে নির্বাচনে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্ডিয়া জোটের ২৭টি দল হলেও তারা বিশেষভাবে কংগ্রেসের সমালোচনায় টেনে এনেছে মুসলিমদের প্রসঙ্গটি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদিও তার নির্বাচনী জনসভাগুলোয় নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের নামোল্লেখ করেননি, তথাপি তার বক্তব্য থেকে এটি পরিষ্কার, তিনি কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে গিয়ে নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতাসীন না হলে মুসলিমদের দ্বারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুরা নির্যাতনের শিকার হবে তা পরোক্ষভাবে ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন।

নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো এনডিএ’র মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলেও পরের অর্থাৎ ২০১৯ সালের নির্বাচনে এ জোটের অংশ থেকেও লোকসভার ৫৪৫টি আসনের মধ্যে এককভাবে বিজেপির জন্য ৩০৩টি আসন লাভে প্রধান কৃতিত্বের দাবি রাখেন। ২০১৯ সালের জুনে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নেওয়ার পর থেকেই তিনি হিন্দুদের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে বাকিদের সঙ্গে, বিশেষ করে মুসলমানদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের একটি সুস্পষ্ট বিভাজন রেখা টেনে দেন। ওই বছরের আগস্টে তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য ভারতের সংবিধানে সংরক্ষিত ৩৭০ অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিশেষ অধিকার কেড়ে নিয়ে সেখানে সরাসরি কেন্দ্রের শাসন জারি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রের সর্বত্র এবং প্রতিষ্ঠানগুলোয় দলীয়করণ শুরু করেন, যা থেকে বিচার বিভাগও বাদ পড়েনি। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার হরণের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপকভাবে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক এ অধিকার হরণের বিষয়টি বৈধতা পায়। এর মধ্য দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে বিভাজনরেখাটি আরও বিস্তৃত হয়।

দেশটির সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কয়েক বছর ধরে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তোপের মুখে থাকা সত্ত্বেও তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চূড়ান্ত করেছেন, যার মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, শিখ এবং জৈন সম্প্রদায়ের মানুষকে ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছেন, অথচ সেখানে মুসলমানদের বিষয়টি ঢাকা পড়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে মুসলিমবিরোধী নীতির ন্যক্কারজনক প্রয়োগ ঘটালেও সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনসংখ্যার সমর্থন তিনি পোক্ত করতে পেরেছেন। মূলত মুসলমানদের টার্গেট করে হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষায় নরেন্দ্র মোদি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যে কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন, স্বভাবতই তিনি প্রত্যাশা করেছেন যে হিন্দুরা দলবেঁধে কেন্দ্রে গিয়ে তার সপক্ষে রায় দেবে। আর সে কারণেই ভোটার উপস্থিতির হার প্রত্যাশা অনুযায়ী না হওয়ার বিষয়টি নরেন্দ্র মোদিকে কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে।

বিজেপির টানা ১০ বছরের শাসনামলে ভারতের আর্থসামাজিক অবস্থার যে খুব একটা উন্নতি হয়েছে, সে কথা বলার সুযোগ নেই, বরং সামাজিক উন্নয়নের অনেক সূচকে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতি এবং বেকারত্ব বেড়েছে, কৃষকের মধ্যে প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় অসন্তোষ কাজ করছে। এ ধরনের বিষয়গুলো অনেকটা নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর নেপথ্যে কিছু কারণ রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অনেকে ধারণা করেন যে মোদির শাসনামলে বিজেপির সঙ্গে ভারতের বড় বড় করপোরেশনের পর্দার অন্তরালে এক ধরনের বোঝাপড়া কাজ করছে।

বহুল প্রচলিত কথাআদানি, আম্বানিসহ শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতিদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। করপোরেশনগুলোর সঙ্গে এ ধরনের বোঝাপড়ার জেরে বিজেপি ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে ৬ হাজার কোটি রুপি অর্থ সংগ্রহ করেছে, যা ভারতের রাজনীতিতে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ নিয়ে মুখ খোলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের স্বামী পরকলা প্রভাকর। তিনি এ ধরনের বন্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী খরচ জোগানোকে অনৈতিক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে এ ধরনের ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংস্থানের রেওয়াজ রয়েছে, ভারতের রাজনীতিতে বিষয়টি নতুন। এর মাধ্যমে নির্বাচনটি অনেক বেশি খরচনির্ভর করে ফেলা হচ্ছে। বিগত ১০ বছরে বিজেপির নেতারা যেভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল অর্থ উপার্জন করেছেন, এর একটা অংশ তারা স্বচ্ছন্দে নির্বাচনে খরচ করতে পারলেও বিরোধীদের জন্য এটা কুলিয়ে ওঠা কষ্টকর। অবশ্য ব্যতিক্রম যে নেই তা-ও বলার সুযোগ নেই। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ স্বয়ং ঘোষণা দিয়েছেন দলের টিকিট লাভ করলেও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার জন্য তিনি এবারের নির্বাচন থেকে দূরে থাকবেন।

নরেন্দ্র মোদির দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে রাহুল গান্ধীকে পর্যন্ত গ্রেপ্তার বরণ করতে হয় এবং বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর বাইরে নিজেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অঢেল অভিযোগ থাকার পরও বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে ইডি, সিবিএসহ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দাকে তথাকথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার জেরে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার দল আম আদমি পার্টির আরও নেতাও গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং অসংখ্য নেতা এ ধরনের গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন। এভাবে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দাদের দিয়ে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে তিনি নির্বাচনের আগে ভোটারদের প্রভাবিত করতে চাইছেন। বিজেপি সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও রয়েছে বিস্তর বিতর্ক। ২০১৪ সালে ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি নিয়ে মোদি সরকারের যাত্রা হলেও সময়ের পরিক্রমায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন বলতে কেবল বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে তারা। সেটাও আবার বাংলাদেশের বিশেষ আগ্রহে।

বাংলাদেশের তিন চতুর্থাংশ ভারত দ্বারা বেষ্টিত থাকা এবং ঐতিহাসিকভাবেই ভারতের সঙ্গে কিছু অমীমাংসিত সমস্যা থেকে যাওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পররাষ্ট্রনীতির দূরদর্শিতায় ভারত সরকার অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে যে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির ধারাবাহিকতায় যদি বাংলাদেশের সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে তারা একদম কোণঠাসা হয়ে পড়বে। এ সুযোগ যথার্থভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে বাংলাদেশ সরকার। ভারতের সঙ্গে প্রায় ৬৮ বছর ধরে চলমান ছিটমহল সমস্যার সমাধান করে বাণিজ্য ঘাটতিসহ পারস্পরিক নিরাপত্তা এবং কৌশলগত সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করেছে। বর্তমান অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, ভারতের নিরাপত্তা বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তর-পুবের ভারতের রাজ্যগুলোর স্থিতিশীলতার বিষয়টি নিয়ে তারা বহুলাংশেই বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। অনেকের ধারণা, ভারতের সরকারের পরিবর্তনের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি একসময় সত্য হলেও বর্তমানে বাংলাদেশের কূটনীতির ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপকতা আমাদের জন্য ভারতের বাইরেও অনেক সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আর সেজন্যই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিন দশক ধরে কৌশলগত সম্পর্ক রক্ষা করে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবায়নে বাংলাদেশের দিক থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় ভারতের দিক থেকেও এটি বাস্তবায়নে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর বাইরেও বাংলাদেশ ভারতের জন্য আঞ্চলিক বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা।

আমাদের দেশে ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক বিনিয়োগ আমাদের বৈদেশিক সম্পর্কের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। তা ছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিক দিয়ে আমরা বর্তমানে দক্ষণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভালো জায়গায় আছি। এ সবকিছু থেকে ভারতের জন্য শিক্ষণীয় রয়েছে। সামগ্রিক বিচারে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ইন্ডিয়া’ নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির তুলনায় সে রকম সাফল্য দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস গৃহদাহ এখনও পুরোপুরি সামলে উঠতে পারেনি। তাদের সাংগঠনিক দুর্বল ভিত্তি বিজেপিকে তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে শুরু করেছিল, ক্রমান্বয়ে তা-ও অনেকটা ম্লান হতে শুরু করেছে। একদা যে দলটি পশ্চিমবঙ্গের কোনো আসনেই বিজয়ী হতে পারেনি, তারা ২০১৪ সালে দুটি আসন লাভের মধ্য দিয়ে সেখানকার রাজনীতিতে যাত্রা করে ২০১৯ সালের নির্বাচনে ১৮টি আসনে বিজয় অর্জন করে। এটি এবার আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সব দিক বিবেচনায় ভারতের লোকসভা নির্বাচনটির ফলাফল অনেকটাই অনুমেয়, এই নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ভারত বিশ্বের কাছে তার ঔজ্জ্বল্য কতটুকু ধরে রাখতে পারবে কি-না এটিই এখন বড় প্রশ্ন। ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়েছে। ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে যারাই সরকার গঠন করুক তারা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে আরও মনোযোগ বাড়াবে এটাই প্রত্যাশা।

  • কূটনীতি ও রাজনীতি বিশ্লেষক। অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা