দিবস
হাজেরা শম্পা
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪২ এএম
ডনকিহোতে উপন্যাসটির নাম কমবেশি সব পাঠকেরই মনে গাঢ় দাগ ফেলে রেখেছে। এই উপন্যাসের লেখক মিগুয়েল দে সার্ভেন্তেসের ভাবশিষ্য ছিলেন ভিসেন্ত ক্লাভেল আন্দ্রেজ। ভিসেল পরবর্তীতে নিজেও বিখ্যাত লেখক হয়ে উঠেছিলেন। নিজের প্রিয় লেখকের মৃত্যুদিনটিকে তিনি বই দিবস হিসেবে পালন করার রীতি শুরু করেন স্পেনে। ক্রমেই বিষয়টি ইউরোপের অন্যান্য দেশেও জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। লেখক, পাঠক, প্রকাশক এবং সমগ্র সাহিত্য অবকাঠামো বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সমন্বয়ের সুযোগকে প্রাধান্য দিতেই এই দিবসটির প্রচলন শুরু হয়। ১৯২৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাজা আলফনসো ত্রয়োদশ স্পেনজুড়ে স্পেনীয় বই দিবস পালনের জন্য রাজকীয় ফরমান জারি করেন। পরে সমগ্র স্পেনে দিনটি পালন শুরু হয়। প্রথমে ৭ অক্টোবর থের্ভান্তেসের জন্মদিনে দিবসটি পালন শুরু হলেও পরে দিনটি ২৩ এপ্রিল তার মৃত্যুদিনে স্থানান্তর হয়। বই দিবস আন্তর্জাতিক বিশ্ব বই এবং কপিরাইট দিবস, বা বইয়ের আন্তর্জাতিক দিবস নামেও পরিচিত। ১৯৯৫ সালের ২৩ এপ্রিল ইউনেস্কো প্রথমবারের মতো বিশ্ব বই দিবস উদ্যাপন করে। এরপর প্রতি বছর ২৩ এপ্রিল পুরো বিশ্বে দিনটি বই দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
বইয়ের গুরুত্বের কারণেই বিশ্ব বই দিবস পালন করা হয়। দিবসটিতে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ এবং বইয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে আরও সচেতন করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয় এমন কিছু আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে,বই পড়লে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। মন সুস্থ ও সচল রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়াতে বইপাঠের গুরুত্ব অনেক। গবেষণায় এও বলা হয়েছে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে বই পড়ার অভ্যাসের ওপর জোর দেওয়া হয়। বই পড়ার মাধ্যমে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমারের মতো রোগ প্রতিরোধ করাও সম্ভব। কারণ মানুষ যখন বই পড়ে তখন একাগ্রভাবে শব্দের দিকে মনোযোগ দেয় এবং যেকোনো টেক্সটকে মানসিকভাবে কল্পনা করার চেষ্টা করে। এজন্যই বই পড়ার মাধ্যমে মস্তিষ্ক সচল থাকে, ফলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার আশঙ্কা কমে যায়। আন্তর্জাতিক বই দিবসে কপিরাইটের বিষয়টিকেও বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়। যেকোনো বইয়ের স্বত্ব লেখক বা প্রকাশকের থাকে। কিন্তু আমরা যখন পাইরেটেড কপি কিনি বা কিছু অসাধু লোক পাইরেটেড কপি ছাপায় তখন তা পাঠক, প্রকাশক ও লেখকের জন্যও প্রতারণা। এ বছরের বই দিবসে এ বিষয়ক সচেতনতা নিয়ে আলোচনা হবে এমন প্রত্যাশা সচেতন সবার।