× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পরিপ্রেক্ষিত

সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা চাই

আর কে চৌধুরী

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৩৯ পিএম

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:১৫ পিএম

প্রতীকী ফটো

প্রতীকী ফটো

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায় তা যেন আমাদের জানা নেই। ট্রাফিক শৃঙ্খলার অভাবে ঘটছে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা। সব সম্ভবের এই দেশে মহাসড়ক বা হাইওয়েগুলোতেও চলে নসিমন, করিমন ও অটোরিকশার মতো যানবাহন। সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে যেসব কারণ দায়ী তার মধ্যে অন্যতম হলো আইন অমান্যের প্রবণতা। যানবাহনের চালক, পথচারী সবার মধ্যে এ প্রবণতা ক্রিয়াশীল। সড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা গেলে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এজন্য লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা দরকার। যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ যাতে যান্ত্রিক যানবাহন চালাতে না পারে, সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে হবে। যানবাহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের সম্পর্ক নিয়ে যে রটনা রয়েছে তার ইতি ঘটানোও জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই প্রাণ ঝরবে, তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানিকে শুধুই দুর্ঘটনা বলে শেষ করার সুযোগ নেই। দেশের সড়ক-মহাসড়কে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ড বলা যায়। অনেক দুর্ঘটনাই চালকের কারণে ঘটে থাকে। অনেক চালক রাত-দিন গাড়ি চালান। অত্যধিক ক্লান্তি এবং গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। লাইসেন্সহীন অদক্ষ চালকের হাতে এমনকি অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের হাতে গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আমাদের দেশে চালকদের আরেকটি বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা। চালকদের মাদকাসক্তিও সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ। মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধে চালকদের ডোপ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনা কি মেনে চলা হচ্ছে? 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহনের অতিরিক্ত গতি ও চালকের বেপরোয়া মনোভাব। মহাসড়কে অপরিকল্পিত স্পিডব্রেকার বা গতিরোধকগুলোও দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ী। এ ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়কের পাশে হাটবাজার বসা, চালকদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব ইত্যাদি কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কে যান চলাচলের সর্বোচ্চ গতি বেঁধে দিয়ে এবং গতি পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহার করে চালকদের ওই নির্দিষ্ট গতি মেনে চলতে বাধ্য করা হলে দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনের প্রয়োগ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ চালক এবং সড়কে চলাচল উপযোগী ভালো মানের যানবাহন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে একই সঙ্গে জনগণকেও হতে হবে সচেতন। সরকারি-বেসরকারি ও নিজস্ব সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রণীত রিপোর্টে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দিক থেকে ভারত ও পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। 

পরিসংখ্যানে জানা যায়, বাংলাদেশে বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আধুনিক, নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর সড়ক পরিবহন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ অনুসমর্থনকারী হিসেবে ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত মানুষের সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত ও সুপারিশের বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি। বাংলাদেশ এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থা অপরিহার্য। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা ইত্যাদি কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সব ব্যবস্থা নেওয়া হোক। 


বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা