প্রজন্মের ভাবনা
রিয়াদ হোসেন
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:০২ পিএম
একসময় সারা
বছর কমবেশি দেশীয় পণ্য বাজারে পাওয়া যেত। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে বিদেশি পণ্য দেশীয়
পণ্যের বাজার দখল করে নিয়েছে। সাশ্রয়ী ও চটকদার এসব পণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহও বাড়তে
শুরু করেছে। ফলে ধীরে ধীরে ক্ষতির সম্মুখীন হতে শুরু করল স্বদেশি পণ্যের বাজার। দেশীয়
পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। কিন্তু সম্প্রতি অর্থনৈতিক
অবস্থার কথা বিবেচনা করলে দেশীয় পণ্য ব্যবহার করে আমদানি ব্যয় কমিয়ে আনার চিন্তা নেওয়া
জরুরি হয়ে পড়েছে।
দেশের প্রতিটি
জেলায় স্বতন্ত্র কিছু পণ্য থাকে। এসব পণ্য নিয়ে অনেক উদ্যোক্তা এখনও কাজ করছেন। তবে
প্রচার-প্রচারণার অভাব ও উপযুক্ত পরিবেশ না তা আমাদের নজরে আসে না। তবে সাম্প্রতিক
সময়ে আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে দেশি পণ্য নিয়ে
বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সেমিনারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যার মধ্যে দিয়ে
নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের ভেতরে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। আমাদের নারী উদ্যোক্তারাও দেশি
পণ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
গ্রামীণ নারীদের একটি বড় অংশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের নানা পণ্য উৎপাদন
ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের তৈরি অনেক পণ্য এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের
বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা ও কর্মসংস্থান বাড়ছে। তাই এসব শিল্পের
প্রসার ও বিপণনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন। পণ্যের ওপর
আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে প্রযুক্তিবিদদের আরও সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।
বাংলাদেশের পাটপণ্যের প্রতি বিভিন্ন দেশের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের
নতুন করে আগ্রহ তৈরি হতে দেখা গেছে। এজন্য পাটকল ও সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের সব চাহিদা পূরণ
করে এ দপ্তরেও গতি ফেরাতে সরকারের সুদৃষ্টি দেওয়া দরকার। যাতে সোনালি আঁশের সুদিন এ
দেশে আবার ফিরে আসে। পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত এসব পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে আমাদের নিজেদের
জায়গা থেকে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে। নিজেদের উৎপাদিত পণ্য নিজেরা ব্যবহার করে অন্যকে
উৎসাহিত করতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে; নিজেদের শিল্প-সংস্কৃতি বাঁচাতে এবং
দেশি পণ্যের বাজার সমৃদ্ধ করার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব
সংস্কৃতির পরিচায়ক এমন পণ্য বাড়ানোর বিষয়ে বাড়তি মনোযোগও বাঞ্ছনীয়।
শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা