× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দিবস

প্রতিবন্ধীদের প্রতিপালন রাষ্ট্রের দায়িত্ব

শারমীম তুলি

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৫৫ এএম

প্রতিবন্ধীদের প্রতিপালন রাষ্ট্রের দায়িত্ব

শিশুদের বিকাশগত সমস্যা অটিজম। অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুরা সাধারণত অন্যের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ করতে পারে না। তারা অতিরিক্ত জেদি এবং নিজেকে বিচ্ছিন্ন ও গুটিয়ে রাখতে পছন্দ করে। অটিজমের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। গবেষকরা মনে করেন, জেনেটিক, নন-জেনেটিক ও পরিবেশগত প্রভাব সমন্বিতভাবে অটিজমের জন্য দায়ী। শিশুর বিকাশে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সৃষ্টি হয়। এ পর্যন্ত পরিচর্যাই এর একমাত্র বিকল্প। অটিজম বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ২০০৭ সালের ২ এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে। অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরতে এরপর থেকে প্রতিবছর দিবসটি বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অটিস্টিক ব্যক্তিদের সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে। দিবসটি জাতিসংঘের প্রতিনিধি মোজা বিনতে নাসের আল-মিসনেদ দ্বারা প্রস্তাবিত এবং সব সদস্য রাষ্ট্র দ্বারা সমর্থিত হয়ে ১ নভেম্বর ২০০৭-এ কাউন্সিলে পাস হয় এবং ১৮ ডিসেম্বর, ২০০৭-এ গৃহীত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই দিবস পালনের প্রস্তাবটি ভোট ছাড়াই পাস এবং গৃহীত হয়েছিল। সাতটি সরকারি স্বাস্থ্য-নির্দিষ্ট জাতিসংঘ দিবসের মধ্যে বিশ্ব অটিজম দিবস একটি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়। সরকার ২০১৩ সালে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করে। এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষার ব্যবস্থা করার ফলে বাংলাদেশ অটিজম ও সব ধরনের প্রতিবন্ধীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৩ সালে ‘নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজ-অ্যাবিলিটি প্রটেকশন ট্রাস্ট অ্যাক্ট’, ২০১৮ সালে ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অ্যাক্ট’, ২০১৯ সালে ‘ইন্টিগ্রেটেড স্পেশাল এডুকেশনপলিসি’ এবং ২০১২ সালে ‘ন্যাশনাল স্ক্রিনিংকমিটি ফর অটিজম অ্যান্ড এনডিডিস’ প্রণয়ন করেছে। এই আইন, পলিসি এবং কমিটিগুলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষায় সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে সহায়ক।

বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক শিশু অটিজম নামের এই নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিজ-অর্ডারে আক্রান্ত। ইতোমধ্যে এ সম্পর্কে পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন ও সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাদের চিকিৎসা ও যথার্থ পরিচর্যার জন্য বিভিন্ন সুযোগসুবিধা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমানে অটিজমকে অসুখ হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যেহেতু চিকিৎসায় সুস্থ করার সুযোগ নেই তাই তাদের স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করতে চারপাশের মানুষের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর দশজন মানুষের মতোই ইতিবাচক দিক যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু দুর্বলতাও। আমরা যদি তাদের কাছে টেনে নিই, মেনে নিই, যত্ন করি তবে তা তাদের যেমন ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করবে তেমনি তাদের সুস্থ বিকাশের পথও মসৃণ হবে। অটিজম মূলত বিকাশজনিত অসুবিধা। শিশুর বেড়ে ওঠার সময়ে তার বয়স অনুযায়ী যখন যেভাবে বিকাশ ও পূর্ণতা আসার কথা, তা বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যের সঙ্গে ভাববিনিময়ে সমস্যায় পড়ে। অনেকেরই অন্যের চিন্তা ও আবেগ বুঝতে অসুবিধা হয়। এই শিশুদের সংবেদনশীলতাও বিশেষ ধরনের। তারা কিছু বিশেষ সংবেদনের প্রতি আগ্রহী থাকে।

বাংলাদেশে প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে দুইজনের অটিজম দেখা যায়। বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস পালনের উদ্দেশ্যে মানুষ যাতে অটিজম আছে এমন মানুষদের স্বীকার করে নেয়। তাদেরও সমান গুরুত্ব দেয়। যাতে এই মানুষগুলোও বাড়িতে, সমাজে, কর্মস্থলে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। প্রতিটি শিশুকে শর্তহীন ভালোবাসা দিতে হবে। ধৈর্য না হারিয়ে অটিজম আক্রান্ত শিশুর যত্নের মাধ্যমে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা