× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

ডিজিটাল অপরাধ বন্ধে উদ্যোগ নিন

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪ ১২:৪৮ পিএম

ডিজিটাল অপরাধ বন্ধে উদ্যোগ নিন

ক্রমশ বাড়ছে সাইবার অপরাধের সংখ্যা। ডিজিটাল নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ এবং অনলাইন পরিষেবার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সাইবার অপরাধের মাত্রা। যার শিকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বড় বড় প্রতিষ্ঠানও। ২৯ মার্চ প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এখন অপরাধের বড় হাতিয়ার’ প্রতিবেদন সেদিকটিই আরও স্পষ্ট করেছে। প্রতিবেদনে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘সারা দেশে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় শতাধিক চক্র রয়েছে। পুলিশের তালিকার বাইরেও নতুন নতুন সাইবার অপরাধী চক্র সারা দেশে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এসব চক্রের সদস্যদের অপরাধের বড় হাতিয়ার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম।’ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অপরাধের ঘটনায় বর্তমানে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে ১৬৮টি মামলা তদন্তাধীন। এসব মামলার মধ্যে সাত বছর আগে হওয়া মামলাও রয়েছে। শুধু তদন্তাধীন মামলার সংখ্যা দিয়েই নয়, ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার ইউনিটের পরিসংখ্যানও বলছে, ২০২০ সালে ফেসবুক এবং অন্যান্য ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা ছিল মোট সাইবার অপরাধের ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা ২০২১ সালে বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশে। অন্যদিকে পর্নোগ্রাফি ধারণ ও অনলাইনে যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধ ২০২০ সালে ১৯ দশমিক ০৪ শতাংশ হলেও ২০২৩ সালে বেড়ে তা ২৪ দশমিক ৭০ শতাংশে পৌঁছে। চলতি বছরের গত দুই মাসে এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সাইবার পরিসরে মানুষ যে কতটা নিরাপত্তাহীন, পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট। স্বাভাবিকভাবেই সাইবার অপরাধ বাড়ার এই চিত্র উদ্বেগের।

মানুষ যত প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে, প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়ছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ-সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যাও। যদিও দেশে ইন্টারনেট সুবিধা এখনও সমাজের মুষ্টিমেয় মানুষের হাতেই। তবু দিন যত গড়াবে সাইবার পরিসরে সাধারণের অংশগ্রহণ এবং নির্ভরতাও বাড়বে। তাই সাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র, প্রশাসনের উচিত সাইবার-পরিবেশকে সুস্থ রাখা। ডিজিটাল প্রতারণা বা সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী সবাই যে অভিযোগ করেন, তা-ও বলা যায় না। কারণ এখনও সাধারণ মানুষের বড় অংশই জানে না, সাইবার অপরাধের শিকার হলে কীভাবে তার প্রতিকার মিলবে? বা অপরাধের অভিযোগ জানাতে কোথায় যাবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধের শিকার হিসেবে নারীরা যেমন রয়েছেন, তেমনি কিশোর-তরুণদেরও ফেলা হচ্ছে নানা ফাঁদে। তুলনামূলকভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারে অনভ্যস্ত ব্যক্তিদের নানাভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সাইবার পরিসরে ব্যবহারকারীদের বড় বিপদ তাদের তথ্যের সুরক্ষা। প্রতিবছরই বাড়ছে তথ্য চুরির ঘটনা। সাইবার পরিসরে মানুষ যত বেশি সময় কাটাচ্ছে, অপরাধীরাও তাদের নিশানা ঠিক করছে। দিন গড়াচ্ছে সাইবার অপরাধীদের অপরাধের ধরন এবং কৌশল পাল্টাচ্ছে। ব্যাংক জালিয়াতির মতো চেনা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যৌন কেলেঙ্কারি, পর্নোগ্রাফি, সম্পর্কের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগও। আর এসব অপরাধের বড় অংশই সংঘটিত হচ্ছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সাধারণ মানুষ ডিজিটাল মাধ্যমের আইনগুলো সম্পর্কেও পুরোপুরি অবগত নয়। অনেকেই হয়রানির বিষয়গুলো কারও কাছে বলতে চায় না। ফলে বেশিরভাগ ঘটনাই অজানা থাকে বা বিচারের আওতায় আসে না। এ অবস্থায় অপরাধীরা বারবার অপরাধ করার সুযোগ পায় এবং ভুক্তভোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

সাইবার অপরাধের সংখ্যা বাড়ার যে চিত্র তা থামতে মানুষকে সচেতন করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কী ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়, কীভাবে তা প্রতিরোধ করা যেতে পারে, কেউ প্রতারণা অথবা অপরাধের শিকার হলে কোথায় অভিযোগ জানাবে, কীভাবে প্রতিকার পেতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা দিয়ে প্রচারণার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ধরনের প্রচেষ্টা বাড়লে মানুষের মধ্যে সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও দক্ষ জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সাইবার পুলিশ নামে পুলিশের স্বতন্ত্র ইউনিটের যে পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে, তার গুরুত্ব বিবেচনা করে সাইবার পুলিশ ইউনিট গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দিই। সেই সঙ্গে সাইবার অপরাধে নিবন্ধনহীন মোবাইল ফোনসেটের ব্যবহার বন্ধেও উদ্যোগ নিতে হবে। সাইবার পুলিশিং ব্যবস্থা জোরদারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধের সংখ্যা কমাতে হবে। সেইসঙ্গে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা একইসঙ্গে ভুক্তভোগীকেও সোচ্চার হয়ে দ্রুত অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেই। সচেতনতা এবং সকলের সম্মিলিত প্রয়াসেই সম্ভব সাইবার অপরাধ কমিয়ে আনা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা