× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ক্রিকেট

দৃষ্টি এখন টি-টুয়েন্টি সিরিজে

ইকরামউজ্জমান

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৯ পিএম

ইকরামউজ্জমান

ইকরামউজ্জমান

নারী ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার আধিপত্য ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে কারও অজানা নয়। আরেকটি বিষয় হলো, ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া তাদের পুরুষ ক্রিকেটারদের যে বেতনভাতা এবং বিভিন্ন ধরনের সুযোগসুবিধা দিয়ে থাকে, তার সবকিছুই পেয়ে থাকেন নারী ক্রিকেটাররা। এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়া সমতায় বিশ্বাসী। বৈষম্য শব্দের স্থান নেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ায়। পুরুষ ক্রিকেটারদের মতো নারী ক্রিকেটাররাও শতভাগ পেশাদারি মানসিকতায় গড়া। যতক্ষণ মাঠে ততক্ষণ লড়াই। আর এ লড়াইয়ের দর্শন হলো খেলা জেতা। এক্ষেত্রে কোনো আবেগের স্থান নেই।


বাংলাদেশে এবারই প্রথম অস্ট্রেলিয়া নারী দল বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে এসেছে। এ সফরে তারা ইতোমধ্যে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তিনটি ওয়ানডে ম্যাচের সিরিজে প্রাধান্য বিস্তার করে ৩-০-তে সিরিজ জিতেছে। বাংলাদেশ নারী দলের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া নারী দলের সিরিজ বিজয়টা খুব স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত। যারা চিন্তা করেছেন একটি ম্যাচেও যদি নিজস্ব কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে নারী দল জিততে পারে এটি হবে বিরাট অর্জন। পাশাপাশি যেতেতু ওয়ানডে সিরিজটার সঙ্গে ওয়ার্ল্ড ‘ওয়েমেনস বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’-এর সম্পৃক্ততা আছে আর তাই এ খেলা থেকে পয়েন্ট অর্জন করতে পারলে বাংলাদেশ নারী দল উপকৃত হবে। র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ আছে সাতে। যদি ছয়ে আসতে পারে তাহলে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশ নারী দল ২০২২ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে একবার অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়ে ৫ উইকেটে হেরেছে।

বাংলাদেশ নারী দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার নারী দলের দলগত শক্তিতে কোনো তুলনাই চলে না। অস্ট্রেলিয়া নারী দল সাতবার ওয়ানডে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর ছয় টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ নারী দল একবার অংশ নিয়েছে। অনেক সময় টেকনিক্যাল পারসনরাও পরিস্থিতি সামলে দেওয়ার জন্য এমন সব কথাবার্তা আগাম বলে থাকেন, যা তাদের পরে বিব্রত করে। অবধারিত পরাজয়বরণ যেখানে নিশ্চিত সেখানে অনর্থক আশার কথা শোনানো। তবে এটি অবশ্যই বাংলাদেশ নারী দলের জন্য বড় অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ। সুযোগ সংশোধিত হওয়ার। একটি শতরানের ঘর (৯৫, ৯৭ ও ৮৯) অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি ৫০ ওভারের ম্যাচে। টপ অর্ডারের ধারাবাহিকভাবে ব্যাটিং বিপর্যয় এবং শক্তিশালী দলের বিপক্ষে দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে সামর্থ্য প্রতিফলনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতা দেশের মাটিতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি নারী বিশ্বকাপের আগে উদ্বেগের বিষয়।

সব দেশই হোম অ্যাডভানটেজের সুযোগ নেয়, এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশও মিরপুরের উইকেট তৈরি করেছিল শতভাগ স্পিনবান্ধব। এ উইকেট ভালোভাবে বুঝেই সফরকারী নারী দল সহজেই সিরিজ জিতেছে। তারা প্রদর্শন করেছে তাদের স্কিল ও টেকনিকের পারদর্শিতা। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, দ্রুত তারা কন্ডিশনের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পেরেছে। তাদের আসল টার্গেট এখন তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, যা শুরু হতে যাচ্ছে ৩১ মার্চ। এর আগে অস্ট্রেলিয়া নারী দল ২০১৪ সালে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশে এসেছিল। যেহেতু চলতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে বাংলাদেশে, তাই আগাম প্রস্তুতির জন্যই বাংলাদেশে আসা। বিশেষ করে কন্ডিশনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যেহেতু আইসিসির টুর্নামেন্ট, তাই উইকেট হবে সবার জন্য সমান। ব্যাটার ও বোলার উভয়ে উপকৃত হবে। একটি সহজ প্রশ্নের উত্তর নেই। সেটি হলো, আমাদের নারী ক্রিকেটাররা কেন একদম বুঝতে পারলেন না পরিচিত মিরপুর উইকেট।

এদিকে অস্ট্রেলিয়া দলের সফরের পর ভারতের নারী দল পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার জন্য বাংলাদেশে আসবে। এটি ভারতের নারী দলের বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ। খেলা হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ভারতের নারী দলের বিপক্ষে এ সিরিজ আইসিসির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সূচির বাইরে। তবে ভারতের বিপক্ষে খেলে বাংলাদেশও উপকৃত হবে। বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হবে সিলেট স্টেডিয়ামে। গত বছর জুলাইয়ে মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারলেও ওয়ানডে সিরিজ ড্র করেছিল স্বাগতিকরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ নারী দলের এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অ্যাচিভমেন্ট এশিয়া কাপে শিরোপা লাভ যা পুরুষ দল এখনও পারেনি। এ ছাড়া এশিয়ান গেমস ক্রিকেটেও বাংলাদেশ নারী দল রৌপ্যপদক জিতেছে। কয়েক মাস আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে জয়ের মুখ দেখেছে।

সম্প্রতি জানা গেছে আইসিসির আম্পায়ার প্যানেলে এবারই প্রথম যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের পাঁচজন নারী। তারা হলেন সুপ্রিয়া রানী ম্যাচ রেফারি, সাথিরা জাকির আম্পায়ার, রোকেয়া সুলতানা আম্পায়ার, ডলি রানী আম্পায়ার ও চম্বা চাকমা আম্পায়ার। এটি বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের জন্য গর্ব এবং অনেক বড় অর্জন। অ্যানিসা হিলির নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া নারী দলটি পূর্ণাঙ্গ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আর এ দলের খেলোয়াড়দের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। অধিনায়ক অ্যানিসা হিলি এখন পর্যন্ত ১১০টি ম্যাচ খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়া নারী দল এ পর্যন্ত ৩৭০ ওয়ানডে খেলেছে। সেখানে তাদের জয় ২৯৪টি। অন্যদিকে বাংলাদেশ দল খেলেছে ৬৬টি ম্যাচ। জিতেছে ১৭টি। প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়া দল ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে। সেখান থেকে ধাক্কা সামলে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন সাদার ল্যান্ড ৫৮ রান করে। অস্ট্রেলিয়া করে ৭ উইকেটে ২১৩ রান। আর তাতেই ১১৮ রানে জয়ী। বাংলাদেশের ব্যাটাররা ৯৫ রানে সবাই আউট হয়েছেন। খেলার তখনও ১৪ ওভার বাকি। দলের হয়ে নিগার সর্বোচ্চ ২৭ রান করেছেন। বোলিংয়ে নাহিদা আক্তার ও সুলতানা ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। নাহিদা এখন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক।

ভুল সংশোধনের জন্য সময় লাগবে। প্রয়োজন ইতিবাচক মানসিকতাও। দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশের ব্যাটাররা পারেননি নিজেদের পরিচিত উইকেটে ৫০ ওভার খেলতে। পারেননি রানের সংগ্রহ বড় করতে। বাংলাদেশের সংগ্রহ মাত্র ৯৭ রান; যা মাত্র ২৩.৫ ওভার অতিক্রম করে ৬ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। আগেই বলেছি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তুলনা হয় না। তবু প্রত্যাশা ছিল পরিচিত উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা হবে কিন্তু তা হয়নি ওয়ানডে সিরিজে। শেষ ম্যাচে নেমে ২৬.২ ওভারে মাত্র ৮৯ রান করে সবাই সাজঘরে ফিরে গেছেন। অস্ট্রেলিয়া নারী দল ১৮.৩ ওভারে ৯৩ রান করে বুঝিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার নাগালের অনেক দূরে বাংলাদেশ নারী দল।

  • ক্রীড়া বিশ্লেষক ও সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, এআইপিএস এশিয়া
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা