সীমানা ছাড়িয়ে
মাহমুদ হোসেন
প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:১৪ এএম
প্রায় তিন দশক
আগে শুরু হয় নিউইয়র্ক বইমেলা। এই দীর্ঘ সময়ে মেলাটি আন্তর্জাতিক বইমেলা হিসেবে ব্যাপক
পরিচিতি লাভ করেছে। গত বছর মেলার নামও পাল্টাতে হয় পাঠকের অনুরোধে। বইমেলার নতুন নাম
করা হয়েছে নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বইমেলা। বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী মেলাটির
৩৩তম আয়োজন হবে আগামী মে মাসে। ৩৩তম এই আসরে বিশ্বের ৩০টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নেবে।
এর মধ্যে বইমেলায় বাংলাদেশ থেকে ২৫টির মতো প্রকাশনা সংস্থা, কলকাতা থেকে ৫টি এবং নিউইয়র্কসহ
আমেরিকা, কানাডার ১০টিসহ মোট ৪০টি প্রকাশনা অংশগ্রহণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির অধিক
রাজ্য থেকে এবং কানাডা, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, জাপান থেকে শতাধিক
লেখক ও সাহিত্যিক এই মেলায় অংশগ্রহণ করবেন এমনই আশাবাদ আয়োজকদের। জ্যামাইকা পারফর্মিং
আর্ট সেন্টারে বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে এই মেলা। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান মুক্তধারা ফাউন্ডেশন
জানিয়েছে, মেলায় দুই হাজারেরও বেশি নতুন বই থাকবে। শুধু তাই নয়, মেলায় অন্তত ১০টি দেশ
থেকে লেখক, পাঠক ও প্রকাশক অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক
বইমেলা শুধু নতুন বইয়ের প্রদর্শনীর মেলাই নয়, আন্তর্জাতিক এই মেলা পাঠক, লেখক ও প্রকাশনীর
মিলনস্থল। কিংবা মিলন মেলাও। প্রতিবছর মেলায় সেমিনার, কবিতা পাঠ, বই পরিচিতি, সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান ও মোড়ক উন্মোচনের মতো আয়োজন দ্বারা বৈচিত্র্য আনা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম
হচ্ছে না। বরং প্রত্যাশা বেড়েছে। ৩৩তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার আহ্বায়ক
হাসান ফেরদৌস জানান, ‘এবার মেলায় নতুন যুক্ত হবে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে গানের আসর, প্রদর্শিত
হবে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, তারুণ্যের উৎসব নামে নতুন প্রজন্মের জন্য থাকবে পুরো
একটি দিন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য মেলার পক্ষ থেকে দেওয়া হবে জিএফবি-মুক্তধারা
সাহিত্য পুরস্কার। এ ছাড়া প্রবাসী লেখকদের জন্য দেওয়া হবে শহীদ কাদরী স্মৃতি পুরস্কার।
পাশাপাশি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। উত্তর আমেরিকার
১৫টির অধিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন কার্যকরী সহযোগী হিসেবে মেলায় যুক্ত হয়েছে।’
নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক
বাংলা বইমেলার সিগনেচার অনুষ্ঠান লেখক পাঠক মুখোমুখিও থাকবেন। মেলার চার দিন আমেরিকায়
বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হবে। পাঠক, লেখকের সংযোগের
ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার রয়েছে আলাদা গুরুত্ব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইতিবাচক ও
নেতিবাচকতা নিয়েও থাকবে আলাদা আলোচনাপর্ব। নিঃসন্দেহে এটি আমাদের গৌরব ও গর্বের বিষয়।
মেলার মূল আকর্ষণ
হিসেবে অভিবাসীদের জীবনালোচনাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে প্রতীয়মান। অভিবাসীদের
জীবনচরিত নিয়ে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং অর্ধশতাধিক লেখকের নতুন
বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বই পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠান এই আয়োজনকে করবে আরও সমৃদ্ধ। উত্তরোত্তর
এই মেলার ঔজ্জ্বল্যই আমাদের কাম্য।