× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চিকিৎসাসেবা

অদক্ষতা-দায়িত্বহীনতায় আর কত প্রাণহানি

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ

প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৫৫ এএম

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ

প্রায় দুই দশক আগেও দেশে চিকিৎসাসেবার প্রসার এতটা ঘটেনি। তখন সনাতন পদ্ধতিতে ছোটখাটো কিছু শল্যচিকিৎসা করা হতো যার মধ্যে একটি সুন্নতে খতনা। কোনো ধরনের অ্যানেসথেশিয়া ছাড়াই সুন্নতে খতনার অস্ত্রোপচার করিয়ে আসছেন হাজামরা (সুন্নতে খতনায় যারা বিশেষজ্ঞ)। সনাতন পদ্ধতিতে সুন্নতে খতনা করানোর ফলে শিশুকে নানা ভোগান্তি সহ্য করতে হতো। কিন্তু এ পদ্ধতিতেও কোনো শিশু মারা গেছে এমন নজির নেই। গত দেড় দশকে দেশে চিকিৎসাসেবার আধুনিকায়ন হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, খতনার জন্য সনাতন পদ্ধতির বদলে আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখার বিকল্প নেই। অথচ আধুনিক পদ্ধতিতে সুন্নতে খতনা ঘিরে অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি কাছাকাছি সময়ে রাজধানীর দুটি বেসরকারি হাসপাতাল ও মফস্বলের একটি হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর প্রাণহানি ঘটেছে এবং একজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। একটি ঘটনায় জানা গেছে, যিনি অ্যানেসথেশিয়া করেছেন তার কোনো সনদই নেই! আরেকটি ক্ষেত্রে সুন্নতে খতনা যিনি করিয়েছেন সেই চিকিৎসকের শল্যচিকিৎসায় কোনো অভিজ্ঞতা নেই! সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, যে হাসপাতালগুলোয় ওই শিশুদের খতনা করানো হয় এর মধ্যে রাজধানীর দুটি বেসরকারি হাসপাতালের কোনো নিবন্ধনই ছিল না। অবৈধ ও অনিবন্ধিত হাসপাতালের নামে এমন বাণিজ্যালয় দেশের আনাচকানাচে অনেক রয়েছে। এর দায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদপ্তর এড়াতে পারে না।


উন্নত বিশ্বে সচরাচর সরকারি হাসপাতালেই স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার জন্য মানুষ যায়। সেসব দেশে বেসরকারি খাতে রমরমা চিকিৎসা বাণিজ্যের সুযোগ নেই। চিকিৎসক রোগীকে পর্যবেক্ষণের পর ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। আর রোগী চিকিৎসকের ওপর আস্থা রাখেন বিধায় ওই ওষুধ খান। সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় ওষুধ শনাক্ত করতে পারে না। পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, প্রেসক্রিপশনে রোগীকে যতগুলো ওষুধ দেওয়া হয় এর অধিকাংশই প্রয়োজনীয় নয়। এর ফলে একদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে যাচ্ছে, অন্যদিকে ওষুধের অপব্যবহার হচ্ছে। অথচ অতিরিক্ত ওষুধ প্রেসক্রাইব করা এখন যেন অনেক চিকিৎসকের কাছে স্বাভাবিক বিষয়। এর পেছনের কারণ কী, তা নিকট অতীতে প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল । কোনো চিকিৎসক নির্দিষ্ট অঞ্চলে কিছুটা নাম কুড়ালেই ওষুধ কোম্পানিগুলো তার সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় করার চেষ্টা চালায়। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত চিকিৎসাকেন্দ্রের অধিকাংশই যেন জীবন জিম্মি করে টাকা লোটার কেন্দ্র।  এ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি এক দিনে নয় এবং এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।  এজন্য তাদের নিজস্ব কিছু কর্মী সব সময় নিয়োজিত থাকেন। নানা পন্থায় ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের বিক্রি বাড়াচ্ছে এবং নীতিবহির্ভূতভাবে লাভের অঙ্ক ক্রমেই স্ফীত করছে। যদি লাভের একাংশ চিকিৎসকদের দিয়ে ভবিষ্যতে আরও বেশি মুনাফা অর্জন করা যায়, তাহলে তা অপবাণিজ্যের সাফল্য তো বটেই। জীবন নিয়ে এই যে মুনাফার উৎকট পাঁয়তারা, তা কোনো সভ্য কিংবা মানবিক সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।

চিকিৎসা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়। মানুষের স্বাস্থ্যের রক্ষক বলা চলে চিকিৎসকদের। চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সতর্ক থাকতে হয় বেশি। এ খাতে সেবাদানের প্রক্রিয়া স্পর্শকাতর। অথচ আমরা লক্ষ করছি, দেশের স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির পাশাপাশি ভুল চিকিৎসা, অপচিকিৎসা কিংবা অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসাবিদ্যায় ন্যূনতম কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তারাও চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে অর্থ লুটছেন। চিকিৎসকের একটি অংশের নৈতিক অধঃপতন ঘটছে। চিকিৎসার আধুনিকায়ন যেখানে রোগীকে আশ্বস্ত করবে সেখানে উল্টো সেবা প্রত্যাশীদের মনে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। বিশেষত ছোট অস্ত্রোপচারেও মৃত্যু ঘটছে যা অভাবনীয়। সচরাচর ছোট অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে জেনারেল অ্যানেসথেশিয়া করা হয় না। তবে এ বিষয়ে লিখিত কোনো গাইডলাইন নেই। কিন্তু একটি বিষয় স্পষ্ট, অ্যানেসথেশিওলজিস্টকে ডোজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হয়। একজন শল্যবিদের কাজের তুলনায় অ্যানেসথেশিওলজিস্টের কাজ কোনো অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং একজন অ্যানেসথেশিওলজিস্টের ভূমিকা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যানেসথেশিওলজিস্ট এবং শল্যচিকিৎসকের সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমেই একটি অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্ভব হয়। এ ক্ষেত্রে অ্যানেসথেশিওলজিস্টকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক ভূমিকা পালন করতে হয়। যদি অ্যানেসথেশিয়ার ডোজ কম হয় তাহলে অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর চেতনা ফিরে আসতে পারে। বেশি হলে রোগীর চেতনা না-ও ফিরতে পারে। অর্থাৎ অ্যানেসথেশিওলজিস্টকে প্রথমে ডোজ নির্ধারণ করতে হবে এবং শল্যচিকিৎসাবিদকে জানাতে হবে। এভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি সফল অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। দেশে অভিজ্ঞ অ্যানেসথেশিওলজিস্টের অভাব রয়েছে, এ অভিযোগ নতুন নয়। কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই এ ভূমিকায় অনেকে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব অনেকাংশে দায়ী। সম্প্রতি রাজধানীসহ মফস্বলে ছোট অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে যে মর্মস্পর্শী ঘটনাগুলো ঘটেছে তার দায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এড়াতে পারে না। এর আগেও এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে। অভিযোগ আছে, ছোট অস্ত্রোপচারে শল্যচিকিৎসকরা অবহেলা করেন। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে নেই অভিজ্ঞ অ্যানেসথেশিওলজিস্ট। দেশে চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশীরা কেন আস্থা হারাচ্ছেন এর কারণগুলো অস্পষ্ট নয়। কিন্তু দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার সাধ্যি তো সিংহভাগ মানুষের নেই।

তাছাড়া দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যাওয়ায় রোগীর তো বটেই দেশেরও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। যাদের গাফিলতি কিংবা অবহেলায় সম্প্রতি দুটি নিষ্পাপ প্রাণ ঝরে গেল তাদের সরাসরি হত্যা মামলার অধীনে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা দরকার। চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে হাসপাতাল বন্ধ বা সিলগালা করলেই শুধু হবে না। বরং প্রতিবিধান নিশ্চিত করতে হলে দৃষ্টান্তযোগ্য শাস্তি দিতে হবে। বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনায় নতুন করে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সব চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদ, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। হাসপাতাল, ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অপারেশন বা প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে। কোনো অবস্থায়ই লাইসেন্সপ্রাপ্ত বা নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেশিয়া প্রদান করা যাবে না। বিএমডিসি-স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ ছাড়া যেকোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি/ইন্টারভেনশনাল প্রসিডিউরও করা যাবে না। সব বেসরকারি নিবন্ধিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল-ক্লিনিকে লেবার রুম প্রটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধে ইতোপূর্বে বহুবার ঘোষণা দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মাঠে নেমেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, অভিযানে অবৈধ কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কার্যত দেখা গেল, ওই অভিযানগুলো ছিল যেন সিন্ধুর মাঝে বিন্দুর মতো তাদের কার্যক্রম যেন গুরুতর ব্যাধির ক্ষেত্রে টোটকা দাওয়াই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধে আবারও মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে। তবে কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার পর অভিযানে নামলে স্বাস্থ্য খাতের ভঙ্গুর পরিস্থিতির নিরসন ঘটবে না। ইতোমধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক-সেন্টারে শৃঙ্খলা ফেরাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১০ নির্দেশনা জারি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্সের কপি হাসপাতালের সামনে দৃশ্যমান রাখতে হবে। এক বছর পর নিবন্ধন নবায়নের জন্য একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্ধারিত রাখতে হবে সম্পূর্ণ পরিচয়সহ। ডায়াগনস্টিক সেন্টার-প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষানিরীক্ষার ক্ষেত্রে যে ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন দেওয়া হবে শুধু এ ক্যাটাগরিতেই পরীক্ষা করা যাবে। এ রকম আরও কিছু নির্দেশনা রয়েছে। দুর্মুখেরা বলছেন, এমন টোটকা দাওয়াইয়ে গুরুতর ব্যাধির নিরসন তো করা যাবেই না; স্বাস্থ্যসেবার নামে যারা গলাকাটা বাণিজ্যে নেমেছেন তাদেরও দমন করা যাবে না। স্বাস্থ্যখাতের গুরুতর ব্যাধি সারাতে জরুরি  পুরো খাতটিকে ঢেলে সাজানো।

আমরা দেখেছি, বিগত করোনা ও ডেঙ্গুদুর্যোগে সংকট পুঁজি করে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক তো বটেই, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালেও অসাধুরা ব্যাপকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। এরও দৃষ্টান্তযোগ্য প্রতিবিধান নিশ্চিত করা হয়নি এ অভিযোগ আছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সৎ-দক্ষ-নিষ্ঠাবান চিকিৎসক হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। তিনি সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের ক্ষত উপশমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দায়িত্বে অবহেলা বা গাফিলতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’ কিন্তু স্বাস্থ্য খাত বর্তমানে ভঙ্গুর অবস্থানে রয়েছে এবং এ থেকে খাতটিকে টেনে তোলা সহজ নয়। স্বাস্থ্যখাতের নৈরাজ্য বন্ধে ও নীতিনৈতিকতাহীন চিকিৎসকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জীবন নিয়ে ‍যারা জুয়া খেলায় উন্মত্ত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের দায়িত্বশীলদের অনড় থেকে যূথবদ্ধভাবে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে। যারা কদাচারে-দূরাচারে লিপ্ত তারা দেশ-জাতির মিত্র হতে পারেন না।

  • জনস্বাস্থ্য ও ওষুধ বিশেষজ্ঞ। সাবেক অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল ফার্মাসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা