× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

মাঠ উদ্ধার করে খেলাধুলার সুযোগ অবারিত করুন

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৪১ এএম

মাঠ উদ্ধার করে খেলাধুলার সুযোগ অবারিত করুন

সুস্থ-সুন্দর-আনন্দঘন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য যে কয়টি জরুরি অনুষঙ্গ রয়েছে, তার মধ্যে খেলাধুলা অন্যতম। কিন্তু নানা কারণে তা ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে এবং এর ফলে প্রজন্মের প্রতিনিধিদের বৃহদাংশের ওপর বিরূপ অভিঘাত লাগছে। খেলাধুলা জীবনের জন্য এমনই একটি ফলনযোগ্য জমি, যেখানে মানুষের সুকুমার বৃত্তিগুলো বিকাশ কিংবা প্রকাশের ক্ষেত্রও প্রসারিত হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রমেই তাতে ভাটার টান পড়েছে। এরই প্রতিফলন দেখা গেছে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে। ৬ ফেব্রুয়ারি ইনস্টিটিউট ফর প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) ও ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উঠে এসেছে ঢাকার ৮৪ ভাগ মানুষ খেলাধুলার সুযোগ পায় না! এই তথ্য নিশ্চয় সুখকর নয়।

‘দেশের নগর এলাকা খেলার মাঠের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক ওই মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহম্মদ খান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ডের নিরিখে একজন ব্যক্তির জন্য যেটুকু খোলা জায়গা (খেলার মাঠ, পার্ক ইত্যাদি) থাকা উচিত এর ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে বলে তার গবেষণায় উঠে এসেছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে মাঠের স্বল্পতা রয়েছে এবং তা ক্রমাগত বাড়ছে, গবেষণায় এও উঠে এসেছে। এর ফলে কিশোর গ্যাং ও মাদকের প্রকোপ বাড়ছে। ওই মতবিনিময় সভার আয়োজক দুটি সংগঠন এবং প্রবন্ধ উপস্থাপনকারীকে আমরা সাধুবাদ জানাই জনস্বার্থ, জনস্বাস্থ্য ও মনোবিকাশের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য একটি বিষয়ে আলোকপাত করায়।

একদিকে অপরিকল্পিত নগারায়ণ, অন্যদিকে নগর কিংবা শহরেই শুধু নয়, এমনকি উপজেলা পর্যায়েও সরকারি জায়গা জমি কিংবা খেলার মাঠ অর্থাৎ জনসম্পত্তি ভূমিখেকো-দখলদারদের থাবায় ক্রমাগত নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে ঘনবসতিপূর্ণ এদেশে একজন ব্যক্তির জন্য উপযুক্ত মানদণ্ড অনুযায়ী যেটুকু খোলা জায়গা প্রয়োজন তার ঘাটতি থাকবেÑ এটাই তো স্বাভাবিক। এর বহুমুখী বিরূপ প্রভাব জনজীবন-জনস্বাস্থ্যে যে অভিঘাত আরও প্রকট করে তুলছে এর উপশম সহজ হবে না।

খেলার মাঠ কিংবা মানুষের প্রয়োজনের নিরিখে খোলা জায়গা রক্ষা করার পাশাপাশি দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করে খেলাধুলার চর্চার ক্ষেত্র প্রসারিত ও অবারিত করতে হবে বৃহৎ স্বার্থে। খুব দূর অতীতের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ না করেও আমরা যদি আজ থেকে চার কিংবা সাড়ে চার দশক আগের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করি তাহলেও স্পষ্টতই দেখি, খেলাধুলাচর্চার পাশাপাশি মাঠ কিংবা খোলা জায়গার পরিসর যতটা বিস্তৃত ছিল আজ তা সংকুচিত হতে হতে দরজা যেন রুদ্ধ হওয়ার পথে। সুস্থ দেহ ও সতেজ মন ধরে রাখতে খেলাধুলা ও শারীরিক অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ করে ইতঃপূর্বে বলেছেন, ‘আমরা খেলাধুলাকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এ কারণে যে, তরুণ প্রজন্ম যত বেশি এতে অংশ নেবে ততটাই তাদের মনমানসিকতা আরও ভালো হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ হবে এবং নিজেদের আরও বেশি করে তৈরি করতে পারবে।’ আমরা তার এই বক্তব্যের গুরুত্ব অনুধাবন করে বলতে চাই, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সব পক্ষ এ ব্যাপারে তৎপর হলে আজকের তরুণ প্রজন্ম যারা ভবিষ্যৎ সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্ণধার তাদের পক্ষে হিতকর ভূমিকা পালন করার পথ সুগম হবে।

আমরা দেখছি, মূল্যবোধের অবক্ষয় সমাজকে গ্রাস করে ফেলছে। খেলার মাঠ কিংবা উপযুক্ত খোলা জায়গার অভাবে প্রজন্মের একটি বড় অংশ ডিভাইসনির্ভর হয়ে পড়ার পাশাপাশি মাদকাসক্তিতে ডুবে যাচ্ছে। হতাশা, মানসিক উৎকর্ষের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটই যে এর অন্যতম মূল কারণ তাতে দ্বিমত প্রকাশ করার অবকাশ ক্ষীণ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের জীবনধারায় মানের উন্নয়ন ঘটেছে তা সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়। তবে এই পরিবর্তিত জীবনধারা সমাজের একটা অংশকে ক্রমশ যান্ত্রিক ও সৃজনবিমুখ করে ফেলছে এবং এর ফলে শারীরিক ও মানসিক বহুবিধ প্রতিবন্ধকতারও সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা মনে করি, খেলাধুলাসহ সৃজনশীল ও মননশীল বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সাংস্কৃতিকচর্চার দিকে প্রজন্মের প্রতিনিধিদের যত ধাবিত করা যাবে সমাজ ততই এর সুফল ভোগ করবে। সরকারি পর্যায়ে তো বটেই, এর পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক একই সঙ্গে সামাজিকভাবে সেরকম পরিবেশ নিশ্চিতকরণে যূথবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। মানুষের, বিশেষ করে প্রজন্মের খেলাধুলার মাঠ ও প্রয়োজনের নিরিখে খোলা জায়গা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যূথবদ্ধ প্রচেষ্টায়। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা