× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি : জননিরাপত্তায় জোর দিন

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:২৪ এএম

অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি : জননিরাপত্তায় জোর দিন

দেশ উন্নয়ন-অগ্রগতির সড়কে ধাবমান। ডিজিটাল বাংলাদেশের অধ্যায় পেরিয়ে আমাদের যাত্রা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে। অনস্বীকার্য, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিগত ধারাবাহিক তিন মেয়াদের শাসনামলে সুষম উন্নয়নের ব্যাপারে মনোযোগ নানাভাবেই দৃশ্যমান হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর টানা চতুর্থবার ও পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে নবপ্রত্যয়ে যে যাত্রা শুরু করেছেন এর অগ্রভাগে রয়েছে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করাসহ সামাজিক নানামাত্রিক বিকাশের আলো আরও ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার। রাষ্ট্র কিংবা সমাজের টেকসই উন্নয়নের অন্যতম শর্ত অপরাধমুক্ত পরিবেশ, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, একই সঙ্গে মানুষের অধিকারের মসৃণ পথ। কিন্তু আকস্মিক সমাজে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির কারণে আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারি না। ৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ কয়েকটি প্রতিবেদনে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে জননিরাপত্তায় অপছায়ার চিত্র উঠে এসেছে। ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীর দুই হাতের কবজি কেটে নেয় দুর্বৃত্তরা। নীলফামারীতে এক ব্যবসায়ীর ঘর থেকে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয় একই দিন সকালে। আর ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান বাবু মোল্লাকে ঘটনাস্থলের অদূরেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে কক্সবাজারে এক কিশোর চা বিক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে ওইদিনই। সংঘবদ্ধ বখাটেদের হিংস্রতায় নিহত চা বিক্রেতা আলাউদ্দিনের দাদিসহ আরও দুজন গুরুতর আহত হন। বিগত এক সপ্তাহে প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ এরকম আরও কয়েকটি মর্মস্পর্শী ঘটনার চিত্র উঠে এসেছে।

আমরা দেখছি, সমাজে-পরিবারে নানা ধরনের সহিংসতায় জননিরাপত্তার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপিত হচ্ছে। অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ থাকে। এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাজনিত পরিস্থিতি অন্যতম বৈরী ভূমিকা পালন করে। একই সঙ্গে সামাজিক বৈষম্য, অভাব-অনটনজনিত কারণসহ আরও বিভিন্ন কারণে জননিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। পাশাপাশি মাদকের আগ্রাসনও জীবনবৈরী পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তবে যে কারণেই এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হোক না কেন, এর উৎসে নজর দেওয়া সর্বাগ্রে জরুরি। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও প্রকট হয় যখন কোনো মা-বাবা সন্তানের হন্তারক হয়ে ওঠেন। এমন ঘটনাও সম্প্রতি ঘটেছে। দ্রুত ও সঙ্গত বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সুস্থতা ও সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায় সরকারের, একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর। অপরাধের রহস্য যদি অনুদঘাটিত থেকে যায় এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হয় তাহলে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই ইতঃপূর্বে আমরা বলেছি, শান্তি-শৃঙ্খলা কিংবা জননিরাপত্তা ভঙ্গকারী ব্যক্তি বা মহল যত শক্তিশালীই হোক তাদের কোনো অনুকম্পা দেখানো যাবে না। অপরাধ কেন হয়, অপরাধের মাত্রা কেন বাড়ে, অপরাধী কেন বেপরোয়া হয়Ñ এ কারণগুলো সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের তরফে যথাযথভাবে খতিয়ে দেখে েই নিরিখে প্রতিবিধান নিশ্চিত করার আন্তরিকতা-দায়বদ্ধতার প্রতিপালন কতটা হয়, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত কয়দিনে জননিরাপত্তাহানিজনিত যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এর অধিকাংশই লোমহর্ষক। অপরাধপ্রবণতা যদি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং সমাজবিরোধীদের যদি অপ্রতিরোধ্যভাবে দুষ্কর্মে লিপ্ত হওয়ার অবকাশ থেকে যায়, তাহলে মোটাদাগে ধরে নিতে হয় প্রতিকার কিংবা প্রতিবিধানের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। আইনের রক্ষকরা সমাজেরই অংশ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কখনও কখনও পরিলক্ষিত হয়েছে, তাদের কেউ কেউ দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠ তো ননই, এমনকি তাদের অনৈতিকতা তাদেরও অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়ায় সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা নিরাপত্তা বিনষ্টের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা মনে করি, অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি, জননিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে। জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দেশে আইনের অভাব নেই। কিন্তু আইন যদি যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হয় তাহলে এর সুফল কোনোভাবেই আশা করা যায় না।

৩ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় শহর সিলেটে আশঙ্কাজনক হারে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ী মহলের ক্ষুব্ধতার বার্তাও প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর ভিন্ন একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সিলেটের ব্যবসায়ী মহল চাঁদাবাজি এবং ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছেন। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোর পাশাপাশি সামাজিকভাবেও জোরদার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। শুধু সমাজবিরোধীদের গ্রেপ্তারই নয়, তাদের যারা নানাভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন তাদেরও আইনের আওতায় আনা জরুরি বলে আমরা মনে করি। জনবহুল এ দেশে কে কোথায় কীভাবে কখন অপরাধ সংঘটিত করবে তা আগাম যথাযথভাবে আন্দাজ করা অনেক সময় কঠিন হতেই পারে। তবে পরিস্থিতি যখন উদ্বেগের দাগ ক্রমাগত মোটা করে তখন গোয়েন্দা অনুসন্ধান তীক্ষ্ন করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাহিনীগুলোর নতুন কর্মকৌশল নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নের পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। তাদের সক্ষমতা বাড়ানোও সমভাবেই গুরুত্বপূর্ণ।

খুন, ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টার মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্র বিস্তৃত হওয়ার পেছনে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতিও দায়ীÑ এ নতুন অভিযোগও নয়। অপরাধপ্রবণতা রোধে আইনের শাসনের পথ সুগম করার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে রাজনীতিকদের দায়বদ্ধতার বিষয়টিও সমান্তরালেই সামনে আসে। সমাজ যাতে অপরাধীদের অভয়ারণ্য না হয়ে ওঠে, এর দায় কমবেশি সব পক্ষেরই রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, যদি দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায় এবং সমাজবিরোধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হয়, তাহলে তাদের কাছে যে সতর্কবার্তা পৌঁছুবে তাতে স্বস্তির আবহ তৈরির পথও তৈরি হবে। আমরা সর্বাগ্রে চাই জননিরাপত্তা। আইনশৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করায় ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা