× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

শুধু কথা নয়, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চাই কার্যকর ব্যবস্থা

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৫১ এএম

শুধু কথা নয়, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চাই কার্যকর ব্যবস্থা

আক্ষরিক অর্থেই যাদের নুন আনতে পানতা ফুরায় তাদের তো বটেই, নিম্ন এবং মধ্যবিত্তেরও সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। এই কঠিন হয়ে পড়ার পেছনে রয়েছে নিত্যপণ্যের দাম। সীমানা ছাড়াতে ছাড়াতে তা ঠিক কোথায় গিয়ে থামবে, সেও এক বিস্ময়। উৎপাদন খরচ বাড়লে পণ্যের দাম বাড়বে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই স্বাভাবিকতার ওপর যখন অস্বাভাবিকতা ভর করে, তখন মানুষের নাভিশ্বাস ওঠে। আর এই অস্বাভাবিক কাজটিই আমাদের বাজারে প্রতিনিয়ত ঘটছে। বলা হচ্ছে সিন্ডিকেটের কারসাজিতেই পণ্যের দাম বাড়ছে লাগামছাড়া গতিতে। কথাটির সত্যতাও মিলেছে ৩০ জানুয়ারি প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে। ‘চালের বাজার কুরে খায় করপোরেট পোকা’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় কারসাজি ও সিন্ডিকেটের কথা। সেই কারসাজি কেমন বা চালের বাজারে এই অস্থিরতার কারণ কী? সুদৃশ্য প্যাকেটে বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানির চাল বিক্রি হচ্ছে বাজারে প্রচলিত চালের দামের চেয়ে কেজিতে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত বেশিতে। পোলাওর চালের ক্ষেত্রে এ ব্যবধান কেজিতে ৩০ টাকারও বেশি। শুধু চালের বাজারই নয়, আবারও কোনো কারণ ছাড়াই সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে পেঁয়াজের দাম। রাজধানীতে গত তিন দিন ধরে স্থান-মানভেদে ২০ টাকা বেড়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। তবে কেন দাম বাড়ছে, এ নিয়ে কিছু বলছেন না ব্যবসায়ীরা। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহও পর্যাপ্ত। গুদামগুলোও পেঁয়াজের বস্তায় ঠাসা। সরকারও বলছে, পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। তাই সরবরাহ বা ঘাটতি নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। তারপরও কেন দাম বাড়ছে? প্রতিবেদনটি বলছে, চলতি মাসের শুরুতেই বস্তাপ্রতি চালভেদে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। অথচ চালের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণই নেই। চালের দাম বাড়ানোর পেছনে অভিযোগের তীর বড় মিল মালিক ও করপোরেট কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিবেদকের কাছে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ‘চালের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে হলে আগে করপোরেট কোম্পানিগুলোর লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। কেননা তারা বেশি দামে ধান কেনে এবং প্যাকেটজাত করে চাল বিক্রি করে। এসব চাল প্রতি কেজি ১৫ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করা হয়। অথচ প্যাকেটের জন্য খরচ হয় মাত্র দুই থেকে আড়াই টাকা। চালের মান কিন্তু একই।’ একই ধরনের কথা বলেছেন রাজধানীর ঠাটারীবাজারের একজন চাল ব্যবসায়ীও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি চালের বাজার অস্থির করার পেছনের কারিগর হিসেবে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নাম বলেছেন। আমরা তাদের এই কথাগুলো আমলে রাখার জন্য বলি। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যের কথা আমাদের কারোই অজানা নয়। এখন এদের সঙ্গে যোগ হয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বাজার হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক চরিত্র। রাতারাতি অসাধু প্রক্রিয়ায় বাজার থেকে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল অর্থ। অন্যদিকে জেরবার হচ্ছে ভোক্তার।

আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তবে সেই আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সবক্ষেত্রেই বেড়েছে ব্যয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে মানুষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর মাঝে যখন হুটহাট কোনো কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, তখন মানুষ হয়ে পড়ছে রীতিমতো অসহায়। মানুষ স্বস্তি চায়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। মানুষকে সেই স্বস্তি ফিরিয়ে দিতে বর্তমান সরকারের দায়িত্ব অনেক।

গত ২২ জানুয়ারি ৬টি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজারে প্রতিযোগিতা করে ধান কেনা থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন। পাশাপাশি তিনি অবৈধভাবে বেশি কিনে মজুদ করলে ছাড় না দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আমরা চাই না, অসারের তর্জন গর্জন সারÑ প্রবাদটি সত্য হোক। আমরা সান্ত্বনাবাক্যের মধ্যেও সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। আমরা চাই বাজার নিয়ন্ত্রণে যারা কারসাজি করছে, যারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিক। অপরাধীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিক। বাজারকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনুক। মধ্যস্বত্বভোগী বড় কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে দেশের বাজারব্যবস্থা কোনোভাবেই জিম্মি হতে পারে না। যেকোনো মূল্যে এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। অসাধু চক্রের সকল কারসাজি ভেঙে একটি স্বাভাবিক বাজারব্যবস্থা গড়ে ওঠার পথ প্রশস্ত করতে হবে। এ উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। আর যতক্ষণ পর্যন্ত না সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে না।

 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা