× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাষ্ট্র পরিচালনা

নতুন সরকারের সামনে সারিবদ্ধ চ্যালেঞ্জ

ড. মোহীত উল আলম

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:১৮ পিএম

আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:২৮ পিএম

ড. মোহীত উল আলম

ড. মোহীত উল আলম

৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্নের পর ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন সরকারের যাত্রা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা টানা চারবার এবং মোট পাঁচবার প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণের পর জাতির আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী সহকারে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করে শপথগ্রহণের পর তার নেতৃত্বের প্রতি জনমানুষের আস্থার সঙ্গে মিশ্রিত হয়েছে প্রত্যাশা। ব্যাপারটা হচ্ছে, কিছু না পেলে মানুষের প্রত্যাশা থাকে না, কিন্তু কিছু পেলে প্রত্যাশা বাড়তে থাকে। জাতি পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু সুড়ঙ্গপথ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক চুল্লি এবং স্যাটেলাইট রকেট ইত্যাদি অনেক মেগাপ্রকল্প যেমন পেয়েছে তেমন পেয়েছে আশ্রয়ণ, বৃদ্ধভাতা, জাতীয় পেনশন স্কিম, আমার বাড়ি আমার খামারসহ অনেক বৃহৎ ও ক্ষুদ্র কর্মের সম্পাদন।


এবার জাতির প্রত্যাশা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদায় নিয়ে যাওয়ার পথে বিদ্যমান সংকট প্রধানমন্ত্রী উতরাতে পারবেন এবং এর প্রত্যয় নতুন মন্ত্রিসভার গঠনগত চরিত্র দেখলে বুঝতে পারা যায়। বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণ সংসদ সদস্যের অন্তর্ভুক্তির ফলে প্রবীণ-নবীনের চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও কর্মপদ্ধতির মেলবন্ধনের বিরাট সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তরুণ মন্ত্রীর অনেকের বয়স চল্লিশের এ প্রান্তে-ও প্রান্তে। তারা হবেন উদ্যমী ও প্রাণশক্তিসম্পন্ন আর প্রবীণরা তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দিয়ে নবীনদের পথ দেখাবেন।

বিদ্যমান সংকটের মধ্যে প্রথম হলো অর্থনীতি নিয়ে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ে তোলা, যার আক্ষরিক অর্থ দারিদ্র্য নিরসনমূলক জোরদার অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি। এবারের সংসদে বেশ বড় একটি অংশ এসেছেন ব্যবসায়ী শ্রেণি থেকে। দলীয় রাজনীতির মূল লক্ষ্য থাকে আদর্শ প্রতিষ্ঠা। যেমন সরকারি দলের আদর্শ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। এর মূলভিত্তি আত্মস্বার্থ পরিত্যাগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে আজকের শেখ হাসিনাÑ প্রত্যেকে জীবন কাটিয়েছেন সম্পূর্ণতই বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। কিন্তু ব্যবসার চেহারা খানিকটা আলাদা। ব্যবসায় দেশসেবা, জনসেবা থাকে, মূল লক্ষ্য মুনাফা। সহজভাবে বোঝা যায়, যারা সংসদীয় রাজনীতিতে বিজয়ী হন, তাদের সম্পদ দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণতর হয়। তাদের কাছে রাজনীতি একটা ব্যবসা। ওপরে ওপরে আদর্শের কথা বলেন তারা, কিন্তু তলায় চোখ থাকে জমি, বাড়ি, জাহাজ, গুদাম, ডলার ইত্যাদি বৃদ্ধিকরণে।

দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নেই। অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জনগণকে ঠকিয়ে বা ধোঁকা দিয়ে নিজেরা পুরো পেঁয়াজ, ডাল, আটা বা মরিচের মতো নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করেন, সংবাদমাধ্যমে এ খবর বহুবার উঠে এসেছে। যথেষ্ট সরবরাহ থাকলেও দাম বাড়তে থাকে। অর্থাৎ অর্থনীতির মূলসূত্র চাহিদা-সরবরাহের ক্লাসিক্যাল নিয়ম এখানে অসাধু ব্যবসায়ীদের কালো হাতের জন্য কাজ করছে না। অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন ঠেকাতে না পারলে জনগণের প্রাত্যহিক জীবনে, বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণির জন্য কী যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তা ভুক্তভোগীমাত্রই জানেন। প্রধানমন্ত্রী এবং তার মন্ত্রিপরিষদের কাছে জাতি প্রত্যাশা করে, মানুষের দৈনন্দিন খাওয়া-পরা ও বসবাসের জায়গায় যেন বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়। অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নই মূল চ্যালেঞ্জ। নুতন সরকার চ্যালেঞ্জ জয়ের লক্ষ্যে যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছে এর সফলতার জন্য জরুরি দায়িত্বপ্রাপ্ত সবার যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন। আশা করি এ সক্ষমতা নতুন মন্ত্রিসভার দায়িত্বপ্রাপ্তদের আছে। অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে কোনো ছাড় নয়, বরং এ ক্ষেত্রে কঠোর ও নির্মোহ থাকতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত হলে জনপ্রত্যাশা পূরণের পথ সুগম হবে। সুশাসন নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ।

আরেকটি প্রত্যাশা হলো শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক উন্নতি ঘটানো। আমাদের বাংলা ভাষায় সাধারণের পাশাপাশি মাদ্রাসা ও ইংরেজি শিক্ষা চালু আছে। এ তিন ধারার মধ্যে বিষয়জ্ঞান, খরচপাতি ও ব্যবহারিক দিক থেকে বিস্তর পার্থক্য থাকলেও লক্ষ্য একই। তা হলো জানা, এই জানাকে সমাজ উন্নয়নে কাজে লাগানো। ১৮ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীমহল নিজেই বিরাট একটি জনগোষ্ঠী। তাদের জ্ঞান দেওয়ার জন্য, দেশ গঠনে উপযুক্ত নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য নিয়োজিত থাকে বিরাট এক শিক্ষকগোষ্ঠী। এ শিক্ষকগোষ্ঠীকে উপযুক্ত মানমর্যাদায় সম্পৃক্ত না রাখলে শিক্ষা প্রদানে শিক্ষকদের সর্বোচ্চ দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাদের জন্য যেমন ভালো শিক্ষক হিসেবে গড়ে উঠতে প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও গবেষণার দুয়ার উদার করে দিতে হবে, তেমন বইপুস্তক সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রযুক্তিগত সাহায্যও বাড়াতে হবে। সরকারের কাছে এদিক থেকেও প্রত্যাশা থাকবে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর শিক্ষকদের সঙ্গে একটি তুলনামূলক কাঠামোয় যেন বাংলাদেশের শিক্ষকরা পর্যায়োন্নয়ন, বেতনাদি ও সম্মানের দিক থেকে অধিষ্ঠিত থাকেন।

শিক্ষা বলতে এখন ডিজিটাল শিক্ষাকেও বোঝায়। করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যখন বন্ধ ছিল এবং অনলাইন শিক্ষা প্রদান চালু হয়, তখন লক্ষ করা গিয়েছিল শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে শিক্ষা প্রদান একই স্তরের হতে পারেনি। এখন করোনা নেই, কিন্তু প্রযুক্তিগত সুবিধা যেন প্রান্তবর্তী গ্রামগুলোয়ও চালু থাকতে পারে সেজন্য বৈদ্যুতিক সরবরাহসহ সব সুবিধা কিংবা বিকল্প পন্থাগুলো সক্রিয় করার সর্বোচ্চ সুযোগ সরকার নিতে পারে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড এ কথা এমনি এমনি চালু হয়নি। এটা তো আমরা চাক্ষুষ দেখছি, যে দেশ যত শিক্ষিত, সে দেশ তত উন্নত। শিক্ষার অর্থ এখানে শুধু প্রয়োগকৃত জ্ঞান নয়, চিন্তাগত শিক্ষাও। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি প্রযুক্তিগত আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা দেওয়ার উপযুক্ত আবাসন হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, দেশের মানুষের চিন্তাশক্তিও বাড়বে, কর্মপদ্ধতির কৌশলগত দক্ষতাও বাড়বে। শিক্ষা আদতেই একটি বহুমাত্রিক প্রকরণ। নতুন শিক্ষানীতি নামে শিক্ষার্থীর বহুমাত্রিক সৃজনশীলতার সহায়ক এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমানে চালু করার আয়োজন চলছে। এর প্রায়োগিক ফল সামনে বোঝা যাবে।

আরেকটি প্রত্যাশার কথা বলছি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে লক্ষ করা গিয়েছিল বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। এমনটি অভিপ্রেত ছিল না। কারণ বঙ্গবন্ধুর উচ্চারিত বৈদেশিক নীতিমালাই ছিল ‘কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে মিত্রতা’। তাই এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক এমন কোনো পরিস্থিতির যাতে সৃষ্টি না হয় পররাষ্ট্রনীতি সেভাবেই পরিচালিত হওয়া উচিত। ব্যাপারটা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বিশ্ব ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে খুবই ছোট হয়ে এসেছে তথ্য আদানপ্রদানের দিক থেকে। ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ কথাটা এখন যথার্থ অর্থেই প্রযোজ্য। করোনার সময় বাংলাদেশ যে অল্পতেই পার পেয়েছিল সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করতেই হয়। কারণ তিনি সৌজন্যমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে করোনার টিকা এনে দেশের জনগণকে বিনা খরচে দিতে পেরেছেন, মোট চার দফা। এটি সম্ভব হতো না যদি আমাদের দেশের সঙ্গে ওইসব দেশের সদ্ভাব না থাকত। ইতিহাস অস্বীকার করা যায় না। ঐতিহাসিকভাবে আমরা ইংরেজি ভাষাসংলগ্ন দেশগুলোর সঙ্গে শিক্ষা, চাকরি, বাণিজ্য ও সামাজিকতায় বহু যুগ ধরে সম্পৃক্ত। এ সম্পৃক্ততা আরও বাড়াতে হবে।

চতুর্থ প্রত্যাশা, উপযুক্ত প্রতিপক্ষ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সমাজ বিকশিত হতে পারে না। ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায়, যেদিন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, টেলিভিশনের খবরে দেখলাম নয়াপল্টনে ৭৫ দিন পর বিএনপির অফিসের তালা ভেঙে নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলন করছেন। এ ঘটনার পিঠাপিঠি দেখছি দ্বাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ আসন পেয়েছে ২২৫টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, স্বতন্ত্র ৬২টি এবং অন্যান্য দল ৩টি। জাতীয় পার্টির প্রতিপক্ষতা হলো নির্বিষ, বাকি তিনটিরও তাই। কিন্তু ৬২ বিজয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগেরই পদবিধারী। তারা বিরোধী দল হিসেবে মোর্চা বাঁধলেও প্রকৃত বিরোধী দল বলা যাবে না। এরা হলেন নৌকার বাইরে নৌকা। তাতে কোনো অসুবিধা ছিল না। কিন্তু বিরোধী দল না থাকলে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বন্দ্ব, বিভেদ মাঠ পর্যায়ে মারামারিতে রূপান্তরিত হতে দেরি হবে না। ১৯৭৪ সালে মুহসীন হলে সাত ছাত্রনেতাকে ব্রাশফায়ারে হত্যার উৎস ছিল বিবদমান ছাত্রলীগের দুই ফ্যাকশনের মধ্যে দ্বন্দ্ব। তার কারণ হচ্ছে, নিজ দলের মধ্যে প্রতিপক্ষতা তো আর আদর্শ নিয়ে হবে না, হবে কাল্ট-কালচার নিয়ে, বিষয়াশয় নিয়ে, জমিটা নিয়ে, স্কুলটা নিয়ে, ক্লাবটা নিয়ে, ব্যবসাটা নিয়ে, বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে অসদুপায়ে অর্জিত টাকার বখরা নিয়ে। কর্মীদের মধ্যে অমুক অমুক নেতার লোক, তমুক তমুক নেতার লোক, এ সাংঘর্ষিক ঝগড়াগুলো মাইক্রো লেভেলে ক্রমে বিকশিত হবে। তাই আদর্শগত একটি বিরোধী দল বা জোট থাকা আওয়ামী লীগের জন্যই প্রয়োজন। এমনটি রাজনৈতিক রিটারিকের জন্যও প্রয়োজন, কেননা সে রকম একটি বিরোধী দল না থাকলে আপনি কথার ফুলঝুরি ফোটাবেন কার বিরুদ্ধে?

পঞ্চমত, জনস্বাস্থ্যর সুরক্ষায় স্বাস্থ্যসেবার পথ সুগম রাখা সরকারের জন্য সব সময় বিরাট চ্যালেঞ্জ। সরকারি হাসপাতালে এত রোগীর সমাগম হয় যে, স্বাস্থ্যরক্ষার সব প্রক্রিয়ায় জনসংখ্যার চাপে ব্যাহত হয়। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বড় রকমের বৈপ্লবিক পরিবর্তন না আনলে, সাধারণ মানুষ সরকারি ব্যবস্থায় চিকিৎসার সুফল পাবে না। ‘অন্ধজনে দেহ আলো’- এ প্রবচনটি শিক্ষার ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য, তেমন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও।

নতুন সরকারকে অভিবাদন।

  • শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও বিশ্লেষক
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা