× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এলো ভোটপর্ব, প্রত্যাশা রেখেই শুরু করছি

মুনিরা খান

প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:১০ এএম

আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৫৭ এএম

মুনিরা খান

মুনিরা খান

বাংলাদেশে শুধু নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই নতুন বছরকে বরণ করার প্রস্তুতি থাকে। বিশেষ করে যেসব দেশে ইংরেজি বর্ষপঞ্জির অনুসরণ করা হয়, তাদের কাছে তো দিনটি উৎসব হিসেবে পরিগণিত হয়। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ফিলিস্তিনের গাজায় ক্রমাগত ইসরায়েলি হামলায় বিপর্যস্ত মানবতা, অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবে বৈশ্বিক সংকট প্রকট। এর বাইরে নই আমরাও। এমতাবস্থায় নতুন বছর বরণে সেই আনন্দ অনেকাংশে ম্লান।

তবে আমাদের জন্য এ বছরটি গুরুত্বপূর্ণ একাধিক কারণে। তার মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন ঘিরে চলমান রাজনৈতিক সংকট আমাদের স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। বিদায়ি বছরের সিংহভাগ সময়ই কেটেছে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে- যার ছায়া এখনও বিস্তৃত। তারপরও নির্বাচনের আমেজ রয়েছে।  কিন্তু সংঘাত-সহিংসতার মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে এবং  তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বৈ কিছু নয়। যদিও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের প্রত্যাশা শুভবোধসম্পন্ন সবার কিন্তু ভোটকেন্দ্রে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন কি নাÑ এ নিয়ে ইতোমধ্যে অনেকের মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে ইতোমধ্যে হতাহতের মর্মস্পর্শীতা প্রশ্নের পর প্রশ্নও উত্থাপন করছে। ফলে ভোটারদের নিরুদ্বেগে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়টি প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে। 

রাজনীতির সংজ্ঞা অনেকভাবেই এসেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা প্রতিনিয়ত বদলায়। তবে যেসব স্বাভাবিক নিয়মে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কাঠামোয় নির্বাচন পরিচালিত হওয়ার কথা, আমাদের দেশে ইতঃপূর্বে এর ব্যত্যয় ঘটেছে অনেক ক্ষেত্রে। এসবই এখন অতীত। তবে ভবিষ্যতে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছেÑ এ নিয়ে যেমন প্রত্যাশা আছে অনেক, তেমনি প্রশ্ন-শঙ্কা-সন্দেহও কম নেই। অনেক প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধির ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং এ নিয়েও নানা মহলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ক্ষমতার প্রয়োগ কতটা করতে পারবেÑ এ বিষয়টিই এখনও প্রশ্ন হয়ে আছে। নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশন, তাদের সহযোগী শক্তি সরকার এবং অংশীজনদের ইতিবাচক ভূমিকা কতটা প্রভাব রাখবেÑ তাও জিজ্ঞাসার বাইরে নয়। তবে এত কিছুর পরও আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করিÑ যা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অন্তর্ভুক্ত। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নির্বাচনপর্বে অংশগ্রহণমূলক শব্দটি ব্যাপকভাবে উচ্চারিত হয়ে থাকে। 

নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগমূলক কার্যক্রমে প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে থাকেন। এজন্য অনুমোদিত স্থানে ক্যাম্প স্থাপন করা হয় এবং নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন লাগানো হয়। অথচ অনেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র পোস্টার লাগানো হচ্ছে। একাধিক জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী ক্যাম্প। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, নির্বাচনী প্রচারণার নামে ভোটারদের ভয়ভীতিও প্রদর্শন করছেন অনেকে। তাছাড়া অনেক প্রার্থীই যেভাবে নির্বাচনী প্রচারে অর্থ ব্যয় করছেন তাও নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট ব্যত্যয়। এমনটি প্রশ্নমুক্ত কিংবা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে যে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সংবিধান প্রদত্ত এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাত্রা ছোট হোক কি বড় হোক, তা অমান্য করলে অমান্যকারীদের আইনের আওতায় আনতেই হবে এবং তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উত্থাপিত হলে তা খতিয়ে দেখার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু নির্বাচনী আচরণবিধিই নয়, একজন প্রার্থীর হলফনামায় উল্লিখিত তথ্যের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও নির্বাচন কমিশনের সতর্ক অবস্থান জরুরি। নানারকম জটিলতা-অনিশ্চয়তার মধ্যেও আমরা স্বাভাবিক নিয়মেই নতুন বছরে পদার্পণ করছি অনেক প্রত্যাশা নিয়েই। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলে অন্য সবকিছুও জনকল্যাণমুখী হতে বাধ্য।

দেশের রাজনীতির ইতিহাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। ফেমার প্রতিনিধি হিসেবে দেশে-বিদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্বপালন করেছি। প্রাক-নির্বাচনী সময়েও পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করেছি অনেক দেশে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে তুমুল প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা হতে দেখেছি। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবার নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাদের সহযাত্রী আছে আরও কয়েকটি দল। অন্যদিকে আওয়ামী লীগসহ ২৯টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আওয়ামী লীগের মনোয়নবঞ্চিতদের অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ফলে একই দলের হলেও নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে স্বার্থের একধরনের সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতায় থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়াÑ এই স্বার্থসংঘাতজনিত কারণে তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতা বেড়ে চলেছে। এও অনস্বীকার্য, অনেকের জন্য নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া অনেকটা আত্মসম্মানের বিষয়ও বটে। রাজনৈতিক দলের নীতিনির্ধারকরা পরস্পরের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়বেনÑ এমনটি কাম্য নয়। আমরা দেখছি, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনার কেন্দ্রে থাকলেও যারা রাজনৈতিক দলের অধীনে না থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাদের প্রচারণার তেমন কোনো খবর সংবাদমাধ্যমে খুব একটা থাকছে না। অর্থাৎ অধিকারের সমতল মাঠের যে প্রসঙ্গ বারবার উঠে আসছে, সেই অধিকার অনেক ক্ষেত্রেই হোঁচট খাচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের হাতে যে ক্ষমতা রয়েছে তার পূর্ণ ব্যবহার করতে হবে। অধিকারের মাঠ সমতল করার দায় সর্বাগ্রে তাদের। প্রার্থীরা যেন আচরণবিধি অনুসরণ করেন, তা নিশ্চিত করা এবং ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতেই হবে। এক্ষেত্রে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে সাহায্য করবেÑ এটি সাংবিধানিক ব্যবস্থা।

প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের কিছু নির্দিষ্ট এজেন্ডা থাকে। নির্বাচনকে ঘিরে তাদের কিছু পূর্বপরিকল্পনাও থাকে। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিকল্পনায় আবার রদবদলও হয়। পরিকল্পনা সঠিক না ভুল তা রাজনৈতিক দলগুলোর নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অধিকার কোনো রাজনৈতিক দলেরই নেই। ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগ তা তাদের মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত বিষয়। এই অধিকার প্রয়োগে কেউ বাধা প্রয়োগ করতে পারেন না। এমনকি ভোটারের ভোট দেওয়ার ভাবনা জোর করে প্রভাবিত করার অধিকারও কারও নেই। ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, প্রলোভন দেখানোÑ এসবই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থি। গণতান্ত্রিক অধিকার বলে ভোটপর্ব বর্জনের অধিকার রাজনৈতিক দল রাখে এবং এজন্য তারা কর্মসূচিও পালন করতে পারে। তবে তা হতে হবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সংবিধান প্রদত্ত অধিকারের সীমারেখার মধ্যে। কিন্তু বৃহৎ পরিসরে নির্বাচনকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া অসাংবিধানিক ও গণতন্ত্রের শিক্ষার পরিপন্থি। আমাদের রাজনৈতিক অর্জন কম নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই অর্জন কোনো কোনো ক্ষেত্রে কালিমালিপ্ত হয়েছে। আবার অনেক কিছু এখনও অনার্জিত রয়ে গেছে। স্বাধীনতা অর্জনের বায়ান্ন বছর অতিক্রান্তে নিশ্চয়ই প্রশ্ন দাঁড়াতে পারেÑ মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনার আলোকে আমরা রাজনীতিকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলাম না কেন। অথচ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে রাজনীতির ভূমিকাই তো মুখ্য। এমন প্রেক্ষাপটে সংগত কারণেই নতুন বছরে আশা করতে চাই, অতীতের কোনো কদর্যতারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। অর্থাৎ সর্বাংশেই নতুন কিছুর প্রত্যাশাÑ যা ইতিবাচক ও জনকল্যাণমূলক। 

অতীতে দেশে এগারোটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এই এগারোটি নির্বাচনের মধ্যে দুয়েকটি বাদে কোনো নির্বাচন প্রক্রিয়াই বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলতে পারিনি কিংবা সেই প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা, অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি দৃশ্যমান হচ্ছে বারবার। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার কাজে ব্যর্থ হয়েছেÑ এ অভিযোগও নতুন নয়। একসময় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবে এবং তাদের প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু হয়। কিন্তু কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যে পড়ে না। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় যারা দায়িত্বপালন করেন, তারা জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নন। জনগণের রায় না নিয়ে তারা দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন কদিনের জন্য, যা জনগণ-সমর্থিত ব্যবস্থা নয়। জনগণ যেহেতু তাদের নির্বাচিত করেনি, সেহেতু তাদের ব্যর্থতার জন্য তারা জবাবদিহি করবে কার কাছেÑ এমন প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বদলে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনকালে পূর্ণ ক্ষমতা প্রয়োগের কার্যকর ব্যবস্থা প্রকৃতার্থেই কার্যকর হলে দলীয় সরকারের অধীনেও নির্বাচন নিয়ে দেশে প্রশ্ন উঠবে না। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক দেশেও তো তা-ই হচ্ছে। শুধু নির্বাচনেই নয়, রাষ্ট্র পরিচালনার সবক্ষেত্রে শতভাগ দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা জরুরি। গণতন্ত্রের মর্যাদা ও দেশের মানুষের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতেই হবে। ইতোমধ্যে অনেক সময় বয়ে গেছে, এখনও যদি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আমাদের রাজনীতিকরা যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে না পারেন, তাহলে জনদুর্ভোগ কাটানো দুরূহ। দেশের সতেরো কোটি মানুষকে জিম্মি করে দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির পথ গণতন্ত্রের জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। এর মাধ্যমে কোনো দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক অর্জনও সম্ভব নয়। 

নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে একেকটি দেশ একেক ধরনের পথ অনুসরণ করে। নির্বাচন কমিশনের গঠনপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে এবং দেশ-জাতির স্বার্থ নিয়ে যারা চিন্তা করেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করে এই গঠনপ্রক্রিয়া পরিচালিত হলে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হতে বাধ্য। জনমতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনকে গড়ে তোলা হলে নির্বাচনে তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চয়ই নিশ্চিত হবে। দেশের মানুষের শ্রমে-ঘামে অর্জিত অর্থ দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। তাই নাগরিকের ভোটাধিকার যাতে কোনোভাবেই খর্ব না হয় সেদিকে সরকার, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনসহ দায়িত্বশীল প্রত্যেককে সজাগ দৃষ্টি রাখতেই হবে। 

তবে গুরুত্বের সঙ্গে একটি কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শক্তিশালী বিরোধীদল অবশ্যই প্রয়োজন। চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স কিংবা ভারসাম্য রক্ষার জরুরি প্রয়োজনে এর কোনো বিকল্প নেই। শক্তিশালী বিরোধী দল গড়ে ওঠার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অর্থাৎ অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে, প্রয়োজনে সরকারের সহযোগিতায় হলেও এরকম বিরোধীদলের সাংগঠনিক কাঠামো গড়া বাঞ্ছনীয়। বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক দেশে এরকম নজির আছে। আমাদের দেশের রাজনীতিতে সব সময়ই লক্ষ্য করা গেছে, রাজনৈতিক সরকারগুলো তাদের ক্ষমতার জোরে দেশ পরিচালনা করেছে, বিরোধীপক্ষের মতামতকে বহুলাংশে উপেক্ষা করে। অর্থাৎ রাজনৈতিক সরকারের শাসনামলে যথাযথভাবে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল এবং আছে। আমরা যদি বিকশিত রাজনৈতিক পরিবেশ এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই তাহলে ওই চেতনার আলোকে অধিকারের সব ক্ষেত্র থেকে বৈষম্যের ছায়া সরাতে হবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনও নিশ্চয়ই এর বাইরে নয়। 

অনেক প্রত্যাশা রেখেই নতুন বছর আমরা বরণ করছি। তবে অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে রাখতে হবে। অতীতের গ্লানি মুছে যাক আগামীর সবক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের মধ্য দিয়ে। কল্যাণের ছায়া বিস্তৃত হোক। 

লেখক : গবেষক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষক। প্রেসিডেন্ট, ফেমা

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা