× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রেক্ষাপট

তাপমাত্রার ঊর্ধ্বমুখী পারদ

মাহিউল কাদির

প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:২৪ এএম

তাপমাত্রার ঊর্ধ্বমুখী পারদ

জলবায়ু সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কপ-২৮ সম্মেলন দুবাইয়ে চলছে। সম্মেলনে উচ্চকণ্ঠ স্বল্পোন্নত ৩৯টি ছোট দ্বীপরাষ্ট্র এবং ১৮টি সংস্থা। এই রাষ্ট্রগুলোর মোট জনসংখ্যা, আয়তন এবং জিডিপি পৃথিবীর মোট পরিমাণের ১ শতাংশ। এরা পৃথিবীতে ০.২ শতাংশ কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ছোট দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক দাতা দেশগুলোর ওপর নির্ভর করতে হয়। করোনা মহামারি এবং জলবায়ু সৃষ্ট সমস্যায় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর আর্থিক অবস্থা বিপর্যয়ের মুখে। সংকট কাটাতে তারা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করছে। আর এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তাদের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর আর্থিক সহায়তা। তবে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর মেরুকরণ এক্ষেত্রে আরেকটি সমস্যা। কারণ বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে অনেক দাতা সংস্থা পাশে থাকতে চায়, কিন্তু তার পুরোটাই তাদের স্বার্থ বিবেচনায়। আমেরিকা বা চীন যেই হোক তাদের লক্ষ্য দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর জলসীমা, প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ। ফলে দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর স্থল ভাগ ছোট হলেও তাদের বৃহৎ জলসীমার মধ্যে বন্ধুরাষ্ট্রগুলো নিজেদের অর্থনৈতিক করিডোর স্থাপনের মাধ্যমে কর্তৃত্ব বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।

নিজেদের মধ্যে শান্তি, মুক্ত বাজার অর্থনীতি, অস্ত্রের প্রদর্শনী বন্ধ এবং অবৈধ মৎস্য আহরণ রোধে আন্তর্জাতিক আইনের বাস্তবায়ন চায় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ এবং নিউজিল্যান্ড বড় দাতা সংস্থা। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে অস্ট্রেলিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাৎসরিক ৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার আর্থিক অনুদান প্রদান করে, যা দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মোট অনুদানের ৪০ শতাংশের সমপরিমাণ। অনেক সময় আমেরিকা এবং তার মিত্ররা উন্নয়নশীল প্রকল্পের মাধ্যমে দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর নেতৃত্বকে চীনের প্রস্তাব গ্রহণে বাধ্য করে। চীনের আর্থিক সহায়তা বিশেষ করে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে তাদের বিনিয়োগ প্রয়োজন। গত বছর চীন ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি যৌথ উন্নয়ন পরিকল্পনা গৃহীত হয়। পরে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জোট তা প্রত্যাখ্যান করে। ক্ষোভ প্রকাশ করে কুক দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে জলবায়ু সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা’র সক্ষমতা তৈরি, আর্থিক উন্নয়ন এবং আমাদের জনগণের সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া।’

জলবায়ুর প্রভাবে আজ তার অনেক বিপদাপন্ন। সাইক্লোন পাম ২০১৫ সালের এক রাতে প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরাংশে তাণ্ডব চালিয়েছিল। ক্ষতির পরিমাণ ছিল ভানুয়াতু রাষ্ট্রের মোট জিডিপির ৬০ শতাংশের মতো। এক বছর পরে ২০১৭ সালে ক্যারিবিয়ান দ্বীপে হারিকেন সিজারের আঘাতে সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল ৯৩ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সম্পদ। মালদ্বীপের বিদায়ি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহিদ বলেন, ‘দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর কার্বন নির্গমন হার অতি সামান্য। কিন্তু দুর্যোগে আক্রান্তের হার অনেক বেশি এবং ধ্বংসাত্মক।’

জলবায়ুর আঘাতে সৃষ্ট দুর্যোগে নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত দেশগুলো যেমন কিরিবাতি, মালদ্বীপ এবং টুভ্যালু বর্তমান শতাব্দীর শেষে সাগরের তলদেশে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ুর পরিবর্তন শুধু উন্নয়নের জন্য হুমকি নয়, সার্বভৌমত্বের জন্যও বটে। কপ-২৭-এ বিষয়টি গৃহীত হলেও এটি কীভাবে কার্বন নির্গমনকারী ধনী দেশগুলো অর্থ প্রদান করবে এবং কোন মাধ্যমে এই অর্থ আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে বণ্টন করা হবে, তার কোনো মাপকাঠি এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়নি। তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর সংগঠিত ক্লাব নৈতিকভাবে একতাবদ্ধ হয়েছে। তারা জলবায়ু সৃষ্ট সমস্যার ক্ষতিপূরণের জন্য আর্থিক প্রণোদনা চাচ্ছে। আওয়াজ উঠছে, পৃথিবী বাঁচাও।

  • একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা