× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফিলিস্তিন সঙ্কট

বাইডেনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন

দাউদ কুত্তাব

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৩২ পিএম

দাউদ কুত্তাব

দাউদ কুত্তাব

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি ‘পুনর্জাগরিত’ ফিলিস্তিনি সরকারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। এমন এক ফিলিস্তিনি সরকারের প্রত্যাশা তিনি করেছেন যারা গাজা ও পশ্চিম উপত্যকাকে একক সরকারাধীন কাঠামোর অধীনে নিয়ে আসতে পারবে। এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রত্যাশা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। ফিলিস্তিনিদের অবশ্য জল্পনাকল্পনা থাকতেই পারে। বাইডেন কি আসলেই এমন কিছু প্রত্যাশা করেন? যদি করে থাকেন তাহলে তার পক্ষে একটি কাজই করার রয়েছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। বাইডেনের সদিচ্ছা কতটা আন্তরিক এ নিয়ে প্রশ্ন আছে বিস্তর। যদি তার আন্তরিকতার প্রমাণ দিতে হয় তাহলে তাকে অনেক কিছু করে দেখাতে হবে। ২০১২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ফিলিস্তিনকে সদস্যপদ না দিলেও দেশটির ওপর পর্যবেক্ষণ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৬৭ সালের ৪ জুন সীমান্ত নির্ধারিত ফিলিস্তিনকে এখন পর্যন্ত ১৩৯টি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্র বরাবরই ‘দুই রাষ্ট্র’ সমাধানের দিকে এগোনোর কথা বললেও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়। বাইডেন প্রশাসন তো ফিলিস্তিনকে দখলে থাকা রাষ্ট্র বলে মানতেও নারাজ। কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন থেকে নানা ইঙ্গিত পেয়েছেন। ফলে তারা ফিলিস্তিনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হননি।

ওয়াশিংটন বরাবরই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে দোনোমোনা করেছে। এমনকি তাদের এ মনোভাবের কারণে ইসরায়েলও ফিলিস্তিনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না। রাজনৈতিক কল্পনার অভাব যুক্তরাষ্ট্রের তরফে না থাকায় এ অঞ্চলে যে ভয়াবহ মর্মন্তুদতার সৃষ্টি হচ্ছে যা মেনে নেওয়ার নয়। ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হিসেবে মেনে নেওয়ার একাধিক সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, এর মাধ্যমে বোঝা যাবে বাইডেন দুই রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। যারা ফিলিস্তিনকে স্বীকার করে না এবং যারা ইসরায়েলের অস্তিত্ব স্বীকার করে না, এ দুই পক্ষই অন্তত এক সমতল মাঠে এসে পৌঁছাবে। বাইডেন একটি কথা ঠিক বলেছেন। ফিলিস্তিনিদের একটি পুনর্জাগরিত রাজনৈতিক কাঠামো প্রয়োজন। ফিলিস্তিনিদের মুক্তভাবে ও স্বাধীনভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের সুবিধা করে দিতে হবে। তবে এমন নির্বাচন আয়োজন আদৌ সহজ নয়। ফিলিস্তিনিরা যতক্ষণ নিশ্চিত না হবে এমন নির্বাচন তাদের স্বাধীনতা ও সীমাহীন অত্যাচার থেকে মুক্তি দেবে ততক্ষণ ভোট কোনো সমাধান এনে দেবে না। স্বীকৃতি এবং নতুন নির্বাচন দুটিই গুরুত্বপূর্ণ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয় তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পর্যবেক্ষণে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। নতুন ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের যোগ্যতা যাচাইয়ের এ নির্বাচনে সমস্যা অনেকটাই এড়িয়ে যাওয়া যাবে। নতুন এ নেতৃত্ব ইসরায়েলের সঙ্গে অনেক বিষয়ে সমঝোতা করার সুযোগ পাবে। ২০২১ সালে ফিলিস্তিনের প্রশাসন তাদের সংসদ ও রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের সময় ঘোষণা করে। ভোটের ধারণা পশ্চিম উপত্যকা ও গাজায় এক ধরনের উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়। তা ছাড়া ১৫ বছরের বেশি সময় তারা ভোটাধিকার পায়নি। ফিলিস্তিন প্রশাসনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস অবশ্য তরুণ প্রজন্মের অনেককে ভয়ে আর ঈর্ষায় সামনে এগিয়ে আসতে দেননি। বিশেষত কারাগারে থাকা মারওয়ান বারঘোতির কথা এখানে উল্লেখযোগ্য। আব্বাস নির্বাচন বাতিল করেন। বাইডেন তাতে অভিযোগ জানাননি। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ব্যাংকের বেথলেহেমে সফরকালে বাইডেন আব্বাসকে জানিয়েছিলেন, শান্তির কথা বলার উপযুক্ত সময় এখনও আসেনি।

শান্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপনে আব্বাস ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ইসরায়েল ক্রমেই ফিলিস্তিনের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করে। হামাসের সামরিক অংশ জানায়, ইসরায়েল আর গোটা বিশ্ব বোঝে শক্তির চাপ। অবস্থা এমন যে অনেক ফিলিস্তিনিও তর্ক করতে চায়নি। তবে আমরা আন্দাজ করতে পারি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গি দমনের বড় সুযোগ হারিয়েছে। ওয়াশিংটনকে তাই এখনই নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে তৎপর হতে হবে। ৭ অক্টোবর হামাস আচমকা ইসরায়েলের ওপর হামলা করে। তারপর গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ অভিযান শুরু হয়। দুই দেশই বন্দি বা জিম্মি রেখেছে অনেককে। বন্দিদের ক্ষেত্রে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার ব্যবহারের সাফল্য দেখা গেছে ব্যাপক। এ সাফল্যের কথা বিবেচনা করে বাইডেন যদি নিরাপত্তা পরিষদের সমাধানে ভেটো না দেন তা হলেই বড়সড় পরিবর্তন দেখা যাবে। গত সপ্তাহে স্পেন জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন না দিলেও স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। যেকোনো একক রাষ্ট্রের এমন অবস্থান প্রশংসা পেতেই পারে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইনের সম্পর্ক রয়েছে। এমন আয়োজন বিশ্ব সম্প্রদায়কেও স্পষ্ট বার্তা দেবে।

এ সহিংসতার ছায়া সরুক। তরুণ মার্কিনিদের সামনে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে হলে ফিলিস্তিন সংকট বিষয়ে বাইডেনকে কাজ করতে হবে। সংকট সমাধানে আন্তরিক হওয়া জরুরি। গাজায় যেভাবে মানবতা পর্যদস্তু তা মেনে নেওয়া যায় না। এখন পর্যন্ত সংকট সমাধানে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে কৌশলগতভাবে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়ে তোলার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল একে অন্যের অনেক সমস্যারই সমাধান একত্রভাবে করতে সক্ষম হবে। সীমানা নিয়ে সংকট, জেরুজালেম, উদ্বাস্তু, সেটলার, নিরাপত্তা এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সম্পর্ক নিয়েও অনেক আলোচনা হবে। বর্তমান সংকট নিরসনে এর চেয়ে ভালো পথ আর নেই। এ সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না।

  • মার্কিন সাংবাদিক

ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ : আমিরুল আবেদিন

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা